ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহত্তর বাংলাদেশের মানচিত্র: ভারতের উদ্বেগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহত্তর বাংলাদেশের মানচিত্র: ভারতের উদ্বেগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহত্তর বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শন, যেখানে ভারতের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন- জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় আমরা সম্পূর্ণরূপে प्रतिबद्ध।

Greater Bangladsh Map: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্প্রতি একটি নতুন কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত একটি ঐতিহাসিক প্রদর্শনীতে "সালতানাত-এ-বাংলা" নামক সংগঠন কর্তৃক বৃহত্তর বাংলাদেশের একটি মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে, যেখানে ভারতের কিছু অংশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর ভারতীয় সংসদে বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এই বিষয়ে স্পষ্ট এবং কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, ভারত সরকার এমন যেকোনো প্রচেষ্টাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয় যা দেশের অখণ্ডতা ও সুরক্ষার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

কী এই সালতানাত-এ-বাংলা এবং বৃহত্তর বাংলাদেশের বিষয়?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ এপ্রিল ২০২৫ সালে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানে একটি ঐতিহাসিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। এই প্রদর্শনীতেই একটি মানচিত্র লাগানো হয়েছিল, যা সম্ভবত "সালতানাত-এ-বাংলা" নামক সংগঠন তৈরি করেছে। এই মানচিত্রে ভারতের অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং কিছু অন্যান্য উত্তর-পূর্বের অংশকে তথাকথিত 'বৃহত্তর বাংলাদেশ' হিসেবে দেখানো হয়েছে।

যদিও, বাংলাদেশ সরকার এই পুরো ঘটনা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে এবং বলেছে যে "সালতানাত-এ-বাংলা" নামক কোনো সংগঠনের অস্তিত্বের প্রমাণ নেই এবং এই মানচিত্রটি কেবল ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ বোঝানোর উদ্দেশ্যে লাগানো হয়েছিল।

সংসদে বিদেশমন্ত্রীর জবাব

বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর সংসদে এই তথ্য দিয়েছেন যে ভারত সরকার এই পুরো বিষয়ের উপর নজর রাখছে এবং প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক ও সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে ভারত তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এমন কোনো কার্যকলাপ সহ্য করা হবে না যা ভারতের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানায়।

জয়শঙ্কর আরও জানিয়েছেন যে এই তথাকথিত সংগঠনটি তুরস্কের একটি বেসরকারি সংগঠন 'Turkish Youth Federation' এর সমর্থন পেয়েছে। এই তথ্য ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা শেয়ার করা রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের সাফাই

বাংলাদেশ সরকার এই বিতর্কের দ্রুত প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেছে যে এই মানচিত্রটি একটি একাডেমিক এবং ঐতিহাসিক প্রদর্শনীর অংশ ছিল, যার উদ্দেশ্য প্রাচীন বাংলা সালতানাতের সীমানা দেখানো। সরকারের ফ্যাক্ট-চেক প্ল্যাটফর্ম 'BanglaFact' -ও এই কথা নিশ্চিত করেছে যে "সালতানাত-এ-বাংলা" নামক সংগঠনের অস্তিত্বের কোনো প্রমাণ নেই এবং এই মানচিত্র কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রদর্শিত করা হয়নি।

এই ঘটনা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে আবারও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। গত এক বছর ধরে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে একাধিক বিষয় নিয়ে তিক্ততা রয়েছে, এবং এমন পরিস্থিতিতে এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাসকে আরও দুর্বল করতে পারে।

Leave a comment