ভারতে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে জিএসটি সংস্কার কার্যকর হবে, যার ফলে করের হার চার থেকে কমিয়ে তিন করা হবে। এটি মধ্যবিত্ত এবং শিল্পগুলির জন্য কেনাকাটা বাড়াতে সাহায্য করবে। তবে, মুডিজ সতর্ক করেছে যে এটি সরকারের কর রাজস্ব হ্রাস এবং আর্থিক চাপ বাড়াতে পারে।
জিএসটি ২.০: ভারত সরকার ২২ সেপ্টেম্বর থেকে জিএসটি হারে সংস্কার কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে। নতুন কাঠামোয় করের হার হবে ৫%, ১৮% এবং বিলাসবহুল পণ্যের জন্য ৪০%। গ্লোবাল রেটিং এজেন্সি মুডিজের মতে, এই সংস্কার ভোক্তাদের এবং শিল্পগুলির জন্য ইতিবাচক হবে, তবে এর ফলে সরকারের কর রাজস্ব হ্রাস এবং আর্থিক ঘাটতি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মুডিজ আরও উল্লেখ করেছে যে উচ্চ ঋণের স্তর এবং সুদ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার কারণে আর্থিক ভারসাম্য বজায় রাখা চ্যালেঞ্জিং হবে।
জিএসটি-তে পরিবর্তন
সরকার জিএসটির হার আগের চারটি স্তর থেকে কমিয়ে এখন তিনটি প্রধান স্তরে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন কাঠামো অনুযায়ী, সাধারণ পণ্য ও পরিষেবার উপর ৫% এবং ১৮% হার প্রযোজ্য হবে। এছাড়া, কিছু বিশেষ এবং বিলাসবহুল পণ্যের উপর ৪০% হার প্রযোজ্য হবে। এই পরিবর্তনের লক্ষ্য হল কর ব্যবস্থাকে সরল করা এবং ভোক্তা ও ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের জন্য সুবিধা তৈরি করা।
মুডিজের মতে, এই সংস্কার বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি আকারের ভোক্তাদের জন্য উপকারী হবে। এতে তাদের কেনাকাটা বাড়বে এবং অনেক শিল্পের বিক্রিও গতি পাবে।
উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত হবে
জিএসটি সংস্কারের ফলে ভোক্তাদের পকেটের উপর চাপ কমবে এবং বাজারে কেনাকাটা বাড়বে। মুডিজ বলেছে যে ভোক্তা ব্যয়ের বৃদ্ধির ফলে অর্থনীতিতে চাহিদা শক্তিশালী হবে এবং দেশের উন্নয়ন গতি পাবে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত এবং ছোট ব্যবসার জন্য এই পরিবর্তন উপকারী প্রমাণিত হবে।
নতুন হার কার্যকর হওয়ার ফলে ব্যবসাগুলি কর সম্মতি (tax compliance) সহজ হবে এবং তারা তাদের কার্যক্রমে মনোযোগ দিতে পারবে। এর ফলে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়তে পারে।
রাজস্বের উপর ঝুঁকি
তবে, এই সংস্কারের একটি বড় নেতিবাচক প্রভাব সরকারের রাজস্বের উপর পড়তে পারে। মুডিজ সতর্ক করেছে যে সরকারকে কর সংগ্রহে হ্রাসের মুখোমুখি হতে হতে পারে। সরকারের অনুমান অনুযায়ী, এই বছর জিএসটি সংস্কারের কারণে প্রায় ৪৮,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব কম হতে পারে। কিন্তু মুডিজের মতে, এই অঙ্ক আরও বেশি হতে পারে, কারণ নতুন জিএসটি কাঠামো আগামী অর্থবছরের পুরো বছর কার্যকর থাকবে।
সরকারের আর্থিক চাপ বাড়তে পারে এবং ঋণ কমানো কঠিন হতে পারে। এছাড়াও, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বাজেটে আয়কর ছাড় বাড়ানোর মতো সংস্কারও সরকারের রাজস্বে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
আর্থিক ভারসাম্যের চ্যালেঞ্জ
ভারতের বর্তমান ঋণের স্তর বেশ উচ্চ। ২০২৪-২৫ সালে সরকারের মোট রাজস্বের প্রায় ২৩% শুধুমাত্র সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে। এর মানে হল, সরকারের কাছে উন্নয়ন এবং সামাজিক প্রকল্পগুলির জন্য সীমিত সম্পদ থাকবে। মুডিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে সরকারকে উন্নয়ন এবং আর্থিক ভারসাম্যের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।