আষাঢ় মাসের শেষ দিনে পড়ে গুরু পূর্ণিমা—যা একাধারে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গুরুর আশীর্বাদ জীবনের অন্ধকার দূর করে পথ দেখায়—এই বিশ্বাসেই যুগের পর যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে এই দিনটি। ২০২৫ সালে ১০ জুলাই পড়ছে এই তিথি, যেদিন গুরুদেবকে পুষ্পাঞ্জলি, প্রণাম, এবং মানসিকভাবে কৃতজ্ঞতা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এই দিনে ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁদের আচার্য, শিক্ষক ও জীবনের সত্যিকারের পথপ্রদর্শকদের স্মরণ করেন পূর্ণ ভক্তিভাবে।
এ বারের পূর্ণিমা পড়েছে বৃহস্পতিবার—লক্ষ্মীবারে গুরু তিথির মহাত্ম্য দ্বিগুণ
গুরু পূর্ণিমা এমনিতেই গুরুত্বপূর্ণ, তার উপর এবছর এটি পড়েছে বৃহস্পতিবারে—যা লক্ষ্মীবার হিসেবে পরিচিত। তাই এই বিশেষ মিলনে ধর্ম ও ধন, জ্ঞান ও গৃহলক্ষ্মীর আশীর্বাদ একত্রে লাভের বিরল সুযোগ তৈরি হয়েছে। জ্যোতিষ মতে, বৃহস্পতিবার দেবগুরু বৃহস্পতির প্রিয় দিন, যাঁকে জ্ঞানের দেবতা বলা হয়। আর লক্ষ্মী বার মানে অর্থ ও সৌভাগ্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবীর কৃপা লাভের দিন। ফলে এবারের গুরু পূর্ণিমা শুধু গুরু নয়, গৃহস্থ জীবনের জন্যও এক অত্যন্ত শুভতিথি।
হলুদ ফুল ও পদ্মফুল নিবেদন—নারায়ণ ও লক্ষ্মীর পূজায় আনে অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা
এই পুণ্যতিথিতে ঘরদোর পরিষ্কার করে ঠাকুরঘরে সাজিয়ে তুলুন হলুদ ফুল, গাঁদাফুল ও পদ্মফুল দিয়ে। শাস্ত্রমতে, হলুদ রং বুদ্ধি ও সমৃদ্ধির প্রতীক, যা নারায়ণ ও লক্ষ্মীর অত্যন্ত প্রিয়। পুজোর আগে শুদ্ধ বসনে আলপনা এঁকে, শুদ্ধ ঘরে ভগবানকে আহ্বান করুন। এই দিনে মা লক্ষ্মী ও নারায়ণের যুগ্ম আরাধনায় সংসারে পজিটিভ শক্তি ও আর্থিক স্থায়িত্বের উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি হয় বলে বিশ্বাস।
একটি টাকার কয়েনেই ভাগ্যবদল! জানুন এই গোপন টোটকা
গুরু পূর্ণিমার দিন মা লক্ষ্মীর পুজোয় একটি মাত্র ১ টাকার মুদ্রা, আতপ চাল, পান ও সুপুরি নিবেদন করলে তৈরি হয় এক শক্তিশালী টোটকা। সন্ধ্যাবেলা পুজোর শেষে এই সামগ্রী হলুদ কাপড়ে মুড়ে রাখতে হবে সযত্নে। জ্যোতিষ মতে, এই সামান্য উপাচারেই গৃহস্থের ভাগ্যচক্র ঘুরতে পারে। সঠিকভাবে পালন করলে তা জীবনে টানাটানি দূর করে আনে ধন ও সাফল্য।
চোখে না পড়ে, নিঃশব্দে রাখুন চালের পাত্রে—অভাব থাকবে না একবছর
মন্ত্রোচ্চারণের পর হলুদ শালুতে মোড়া টোটকাটি রেখে দিন আপনার বাড়ির চাল রাখার হাঁড়িতে। তবে শর্ত একটাই—এই কাজ করতে গিয়ে যেন আপনাকে কেউ না দেখে। কারণ, বিশ্বাস করা হয়, এই টোটকা যত নিঃশব্দে পালন করা হবে, তত বেশি ফলদায়ক হবে। এই রীতি মূলত গোপন সম্পদ সংরক্ষণের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত, যা পরিবারে নিরবচ্ছিন্ন চাল, চিঁড়ে, ধানের প্রবাহ রাখে।
জীবনে আর ফিরবে না অভাব—টোটকায় মেলে লক্ষ্মীর আশীর্বাদ
এই সহজ অথচ গভীর বিশ্বাসে গাঁথা টোটকাটি যদি নিষ্ঠাভরে পালন করা যায়, তবে জীবনে আর্থিক অনটন চিরতরে বিদায় নেবে। ঘরে আসবে প্রশান্তি, অর্থভাগ্য ও সুখের জোয়ার। লক্ষ্মী দেবীর আশীর্বাদে সারা বছর জুড়ে মিলবে প্রয়োজনীয় রসদ, আর কখনওই ফিরে তাকাতে হবে না অভাবের দিকে। তবে মনে রাখবেন, প্রতিটি ধর্মীয় আচরণের মতো এখানেও মনোযোগ, শুদ্ধতা ও শ্রদ্ধা অপরিহার্য।