H-1B ভিসা ফি বৃদ্ধিতে ভারতীয় শেয়ারবাজারে ধস: ₹১.৫৬ লাখ কোটি হারালেন বিনিয়োগকারীরা

H-1B ভিসা ফি বৃদ্ধিতে ভারতীয় শেয়ারবাজারে ধস: ₹১.৫৬ লাখ কোটি হারালেন বিনিয়োগকারীরা

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের H-1B ভিসা ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কারণে ভারতীয় শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। সেনসেক্স দুই মিনিটে ৪৭৫ পয়েন্ট কমেছে এবং নিফটি ১১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত নেমে গেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের ₹১.৫৬ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে আইটি সংস্থাগুলির শেয়ারে সবচেয়ে বেশি পতন দেখা গেছে।

আজকের শেয়ারবাজার: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে শেয়ারবাজার নেতিবাচক প্রবণতা দেখিয়েছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প H-1B ভিসার ওপর ফি বাড়ানোর ঘোষণা করেন। এর পরপরই সেনসেক্স দুই মিনিটে ৪৭৫ পয়েন্ট কমে ৮২,১৫১-তে এবং নিফটি ১১৫ পয়েন্ট কমে ২৫,২11-তে নেমে আসে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ₹১.৫৬ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে টিসিএস, ইনফোসিস, টেক মহিন্দ্রা এবং এইচসিএল টেকের মতো আইটি সংস্থাগুলির ওপর, যেখানে রিলায়েন্স স্থিতিশীল ছিল। বাজার ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার করছে, তবে প্রাথমিক ধাক্কা ছিল গুরুতর।

শেয়ারবাজারে প্রাথমিক পতন

সোমবার সকাল ৯টা ১৭ মিনিটে সেনসেক্স ৪৭৫ পয়েন্ট কমে ৮২,১৫১.০৭ পয়েন্টে নেমে আসে। এরপর কিছুটা পুনরুদ্ধার দেখা যায় এবং ৯টা ৩২ মিনিটে সেনসেক্স ১৭৫.৭১ পয়েন্ট কমে ৮২,৪৫০.৫২ পয়েন্টে লেনদেন হচ্ছিল। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক নিফটিও পতনের চিহ্ন নিয়ে লেনদেন করতে দেখা যায়। দুই মিনিটে নিফটি ১১৫.৪৫ পয়েন্ট কমে ২৫,২11.৬০ পয়েন্টে আসে, কিন্তু ৯টা ৩৫ মিনিটে এতে কিছুটা পুনরুদ্ধার হয় এবং এটি ২৫,৩০১.৮৫ পয়েন্টে লেনদেন হচ্ছিল।

H-1B ভিসা ফি বৃদ্ধির প্রভাব

মার্কিন সরকার H-1B ভিসার ওপর ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আওতায় দেশের আইটি সংস্থাগুলিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মীদের জন্য বেশি অর্থ দিতে হবে। এর ফলে সংস্থাগুলির খরচ বাড়বে এবং তাদের মুনাফায় প্রভাব পড়বে। এই কারণেই দেশের প্রধান আইটি সংস্থাগুলির শেয়ার পতনের চিহ্ন নিয়ে লেনদেন করতে দেখা গেছে।

টিসিএসের শেয়ার ২.২৩ শতাংশ কমে লেনদেন হচ্ছিল। ইনফোসিসের শেয়ারে ২.০৭ শতাংশ পতন দেখা গেছে। টেক মহিন্দ্রার শেয়ারে ৪ শতাংশের বেশি পতন নথিভুক্ত হয়েছে। এইচসিএল টেকের শেয়ারও ২ শতাংশ কমে লেনদেন করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার স্থিতিশীল ছিল।

বিনিয়োগকারীদের বড় ক্ষতি

শেয়ারবাজারে প্রাথমিক দুই মিনিটে আসা নিম্ন স্তরের কারণে বিনিয়োগকারীদের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। বিএসইর বাজার মূলধন ৪,৬৬,৩২,৭২৩.৩৭ কোটি টাকা থেকে কমে ৪,৬৪,৭৬,৬০৮.৪৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর অর্থ হল, মাত্র দুই মিনিটেই বিনিয়োগকারীদের ১,৫৬,১১৪.৯১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

অন্যান্য ক্ষেত্র এবং সংস্থাগুলির ওপর প্রভাব

আইটি ক্ষেত্র ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রেও সামান্য চাপ দেখা গেছে। প্রাথমিক সেশনে বাজার লাল চিহ্ন নিয়ে লেনদেন অব্যাহত রাখে। তবে, ধীরে ধীরে সেনসেক্স এবং নিফটি কিছুটা পুনরুদ্ধার শুরু করে। বিনিয়োগকারীদের নজর এখন আসন্ন ব্যবসায়িক সেশনগুলিতে বাজারের স্থিতিশীলতার ওপর।

জিএসটি ২.০ এর প্রভাবের আশা এবং বৈপরীত্য

২২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে জিএসটি ২.০ কার্যকর হয়েছে। এই নতুন কর কাঠামোর অধীনে অনেক গার্হস্থ্য পণ্য, গাড়ি এবং বীমা পলিসির দাম কমে গেছে। বাজারে আশা করা হয়েছিল যে জিএসটি ২.০ এর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে। কিন্তু ট্রাম্পের H-1B ভিসা সিদ্ধান্তের কারণে নবরাত্রির প্রথম দিনেই বাজারের মেজাজ সম্পূর্ণ বদলে যায়।

প্রাথমিক ক্ষতি এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

শেয়ারবাজারের এই প্রাথমিক ধাক্কা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বড় বার্তা নিয়ে এসেছে। যদিও দিনের বাকি সেশনে কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে, তবে প্রাথমিক ক্ষতি বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। আইটি সংস্থাগুলিতে বিদেশী খরচ বাড়ার কারণে দামের ওপর চাপ বজায় থাকতে পারে।

Leave a comment