দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত: দিল্লি, হিমাচল, উত্তরাখণ্ডে চরম ভোগান্তি

দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত: দিল্লি, হিমাচল, উত্তরাখণ্ডে চরম ভোগান্তি

দিল্লি এবং দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। জল জমে রাস্তা ও কলোনিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং স্বাস্থ্য সংকটও দেখা দিয়েছে।

Weather Update: রাজধানী দিল্লি সহ দেশের নানা প্রান্তে ভারী বৃষ্টির পর জল জমে আমজনতার সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রাস্তা, গলি ও কলোনিতে জমে থাকা জল কেবল যান চলাচল ও দৈনন্দিন জীবনকেই প্রভাবিত করছে না, এর ফলে স্বাস্থ্য সংকটও তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং মহারাষ্ট্রে প্রবল বৃষ্টি ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালিয়েছে, এবং হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডে এই সময়ে তিনজনের মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে।

ভারত আবহাওয়া বিভাগ (IMD) সতর্ক করেছে যে উত্তরাখণ্ড, পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, উপ-হিমালয়ী পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে আগামী দুই দিন ধরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। IMD-এর মতে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু এখন রাজস্থানের কিছু অংশ, গুজরাট, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার কিছু অংশ থেকে ফিরে গেছে।

হিমাচল, উত্তরাখণ্ড এবং মহারাষ্ট্রে ধ্বংসলীলা

হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলায় সোমবার রাতে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে ধর্মপুর বাজার এবং আশেপাশের অঞ্চলে জল থই থই করছিল। সোন খাড়-এ দাঁড়িয়ে থাকা HRTC এবং অন্যান্য যানবাহন জলে ডুবে যায়, কিছু বাস ভেসে যায়। ভূমিধসের কারণে একটি পরিবারের তিনজন সদস্য প্রাণ হারান। উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তা, বাড়িঘর এবং দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে একটি সেতু ভেসে যায় এবং অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। দেরাদুনের সহস্রধারা অঞ্চলে রাতভর মেঘ ফাটার ফলে কারলিগাড় নদীতে বন্যা দেখা দেয়, যা আশেপাশের অঞ্চলগুলিতে ক্ষতি করেছে।

মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘন্টায় ভারী বৃষ্টির কারণে তিনজন মারা গেছেন এবং ১২০ জনেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাজ্যে নদীগুলি ফুলেফেঁপে উঠেছে এবং বন্যার কারণে বীড এবং আহিল্যানগর-এর মতো অঞ্চলগুলিতে জনজীবন সম্পূর্ণরূপে প্রভাবিত হয়েছে।

উত্তর প্রদেশ এবং বিহারে আবহাওয়ার পূর্বাভাস

সোমবার ও মঙ্গলবার রাজ্যের অনেক অংশে বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া দফতর অনুসারে, আগামী দুই দিন পূর্ব উত্তর প্রদেশে প্রচণ্ড বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে এবং আর্দ্রতা থেকে স্বস্তি মিলেছে। বিহার রাজ্যের অনেক জেলায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দফতর আগামী দুই দিন ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে। এর ফলে নদীগুলি ফুলেফেঁপে উঠতে পারে এবং জল জমে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

দিল্লি, হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডের জন্য সতর্কতা

মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দিল্লিতে বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। জল জমে যাওয়ার কারণে রাস্তাঘাট এবং কলোনিতে মানুষজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। আবহাওয়া দফতর অনুসারে, ১৭ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতে আংশিক মেঘলা আকাশ থাকবে। এই সময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকার অনুমান করা হচ্ছে।

IMD উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, উপ-হিমালয়ী পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে আগামী দুই দিন ধরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে। ভূমিধস, বন্যা এবং জল জমে যাওয়া থেকে বাঁচতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জনসাধারণকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রে বীড এবং আহিল্যানগর জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় তিনজন মারা গেছেন এবং অনেক সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। 

Leave a comment