হিমাচল প্রদেশে মেঘ ভাঙন: মান্ডিতে নিহত ৩, নিখোঁজ ৩০ জনের বেশি

হিমাচল প্রদেশে মেঘ ভাঙন: মান্ডিতে নিহত ৩, নিখোঁজ ৩০ জনের বেশি

হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলায় মেঘ ভাঙনের ফলে তিনজন মারা গিয়েছেন এবং ৩০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে এবং বাঁধের গেট খুলতে হয়েছে। প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

মান্ডিতে মেঘ ভাঙন: হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলায় সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার সকালে মেঘ ভাঙনের ঘটনা ভয়াবহ ধ্বংসলীলা ঘটিয়েছে। কারসোগ, সরাজ এবং ধর্মপুর উপ-বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। কারসোগ অঞ্চলে তিনজন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে, যেখানে এখনও ৩০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। বহু ঘর, গোশালা এবং যানবাহন ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

রাস্তা বন্ধ, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত

ভারী বৃষ্টিপাত এবং ধ্বংসাবশেষের কারণে কীর্তিপুর-মানালি ফোরলেন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে, যার ফলে কয়েকশো মানুষ রাস্তায় আটকে পড়েছেন। সুরঙ্গ এবং অন্যান্য পথে আটকে পড়া যাত্রীদের প্রশাসন জল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সাহায্য সরবরাহ করছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মান্ডি জেলার সমস্ত স্কুল-কলেজ একদিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা

আবহাওয়া দপ্তর আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে। প্রশাসনকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে এবং ক্রমাগত নজরদারি চালানো হচ্ছে। পদ্ধর অঞ্চলে অবস্থিত কুষ্ঠ রোগীদের আশ্রমে মাঝরাতে জল ঢুকে গিয়েছিল, পুলিশ ও এসডিআরএফ দল তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে ১২ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায়।

ব্যাস নদীর জলস্তর বৃদ্ধি, বাঁধের গেট খোলা হয়েছে

লাগাতার বৃষ্টিপাতের কারণে বিয়াস নদীর জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলস্তর ১.৬৮ লক্ষ কিউসেক পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ায় বিপদজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। লারজি এবং পান্ডোহ বাঁধের গেট খুলতে হয়েছে। এছাড়াও, লারজি এবং ডাহার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিদ্যুৎ উৎপাদনও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোল ড্যাম থেকে ৮০০ মেগাওয়াটের টার্বাইন থেকে অতিরিক্ত জল छोड़ा হয়েছে, যাতে বাঁধের ভারসাম্য বজায় থাকে।

ধর্মপুর এবং আশেপাশের এলাকাগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি

ধর্মপুরের লংনি গ্রামে মেঘ ভাঙনের ফলে ১০টির বেশি ঘর এবং একটি গোশালা ভেসে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপে পাঁচটি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। ক্ষেতে থাকা শস্যও সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও, এলাকার বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ পরিষেবাও বিপর্যস্ত হয়েছে। গ্রামবাসীদের নিরাপদ স্থানে এবং ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে।

মান্ডি শহরে খারাপ পরিস্থিতি

মান্ডি শহরেও পরিস্থিতি গুরুতর। থানেহার কাছে একটি নালা अवरुद्ध (অবরুদ্ধ) হওয়ায় জল আবাসিক এলাকাগুলিতে প্রবেশ করে, যার ফলে বহু বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন ও পৌর কর্পোরেশনের দল মাঝরাতে বাড়ি থেকে জল সরানোর কাজ শুরু করেছে। প্রশাসন জনগণকে নিচু এলাকা খালি করে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছে।

প্রশাসনের উদ্ধার অভিযান চলছে

মান্ডি জেলার ডেপুটি কমিশনার অপূর্ব দেবগন জানিয়েছেন, ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের জন্য এসডিআরএফ, পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের বিশেষ দল মোতায়েন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সব এলাকায় দ্রুত ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে নিরাপদ স্থানে পাঠানো হচ্ছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

Leave a comment