সারাজ বিপর্যয়ের ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দিতে মুখ্যমন্ত্রী সুকখু এবং বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর একসঙ্গে দিল্লি যাবেন। কেন্দ্রের কাছে বিশেষ ত্রাণ প্যাকেজের দাবি জানাবেন।
হিমাচল প্রদেশ: হিমাচল প্রদেশের সারাজ বিধানসভা এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর হয়ে উঠেছে। এই সংকটকালে মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু এবং বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর একজোট হয়ে ত্রাণকার্যকে গতি দিতে এবং কেন্দ্র সরকারের কাছে বিশেষ ত্রাণ প্যাকেজের দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উভয় নেতাই শীঘ্রই একসঙ্গে দিল্লি গিয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাবেন।
থুনাগে ঐকমত্য
এই ঐকমত্য বুধবার সন্ধ্যায় থুনাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের সময় তৈরি হয়। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলিতভাবে দুর্যোগ ত্রাণ কাজের পর্যালোচনা করেন। এই বৈঠকে লোক নির্মাণ, জলশক্তি, বিদ্যুৎ এবং রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সমস্ত বিভাগকে নিজ নিজ স্তরে দ্রুত কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যৌথ সফর এবং ত্রাণ পর্যালোচনা
বৈঠকের আগে মুখ্যমন্ত্রী সুখু, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডা এবং বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর দিনভর দুর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্যা শোনেন এবং ত্রাণ শিবিরগুলির ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেন। রাস্তা, বিদ্যুৎ এবং জলের মতো মৌলিক সুবিধাগুলি দ্রুত পুনরুদ্ধার করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করার উপর বিশেষ গুরুত্ব
লোক নির্মাণ বিভাগকে এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত হিসাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জলশক্তি বিভাগকে পানীয় জল প্রকল্পের উপর অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে। জাঞ্জেলি এবং পাণ্ডবশিলার মতো এলাকা এখনও অন্ধকারে রয়েছে, যেখানে দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা হবে।
বৃহৎ প্রকল্পে রাস্তার অন্তর্ভুক্তিকরণ
চেইলচক-জাঞ্জেলি রাস্তাটিকে একটি প্রধান প্রকল্পের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল রাস্তার উন্নতিসাধন এবং সম্প্রসারণ করে জনসাধারণের জন্য সহজ পরিবহন সুবিধা উপলব্ধ করা।
মুখ্যমন্ত্রী সুখু বলেন, সারাজ অঞ্চলে লাগাতার বৃষ্টি একটি উদ্বেগের বিষয়। এই ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় একটি বৈজ্ঞানিক এবং দীর্ঘমেয়াদী কৌশল তৈরি করা উচিত। এটি কেবল তাৎক্ষণিক ত্রাণ নয়, ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ারও সময়।
প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশ
মুখ্যমন্ত্রী, মৃত বুধি রামের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রশাসনকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেন। তিনি গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করে রিপোর্ট দিতে বলেন। অন্যদিকে, জয়রাম ঠাকুরও বীমার অর্থ দ্রুত প্রদানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কর্মীদের প্রশংসা
মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণকার্যে নিযুক্ত লোক নির্মাণ বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কঠিন পরিস্থিতিতেও দলটি নিষ্ঠা ও অঙ্গীকারের সঙ্গে কাজ করছে।
কাদায় হেঁটে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে
থুনাগে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং দুই থেকে চার ফুট গভীর কাদার মধ্যে হেঁটে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করতে যান। তিনি দোকানদার এবং সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাঁদের সমস্যাগুলি শোনেন এবং সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুরও এই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন এবং তিনিও এলাকার মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।