রাজা রঘুবংশীর হত্যাকাণ্ড এবং তাঁর স্ত্রী সোনম রঘুবংশীর কথিত বিশ্বাসঘাতকতা সম্পর্কিত এই চাঞ্চল্যকর এবং হাই-প্রোফাইল সত্য ঘটনাটি এবার বড় পর্দায় দর্শকরা দেখতে পাবেন। এই ঘটনা অবলম্বনে তৈরি চলচ্চিত্র 'হনিমুন ইন শিলং'-এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে।
বিনোদন: দেশের বহুল আলোচিত রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ড নিয়ে এবার চলচ্চিত্র নির্মিত হতে চলেছে। এই মামলাটি সারা দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল এবং এখন এর পেছনের সত্য ঘটনা বড় পর্দায় দেখানো হবে। চলচ্চিত্রটির নাম রাখা হয়েছে ‘হনিমুন ইন শিলং’, যার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা রাজা রঘুবংশীর পরিবার এবং পরিচালক এস.পি. নিম্বাওয়াট একটি প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে করেছেন।
এই চলচ্চিত্রটি একটি হাই-ভোল্টেজ মার্ডার মিস্ট্রি হবে, যা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, বিশ্বাসঘাতকতা এবং হত্যার পেছনের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করবে। চলচ্চিত্রটির প্রথম পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে এবং এর শুটিং শীঘ্রই ইন্দোর এবং শিলং-এ শুরু হবে।
পরিচালক এস.পি. নিম্বাওয়াট কী বলেছেন?
চলচ্চিত্রের পরিচালক এস.পি. নিম্বাওয়াট বলেছেন, এটি শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, বরং একটি সংবেদনশীল সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি কাহিনী। আমরা এটিকে অত্যন্ত দায়িত্ব ও সততার সঙ্গে উপস্থাপন করব, যাতে ন্যায়বিচার এবং সত্য দুটোই প্রকাশ পায়। তিনি আরও জানান, চলচ্চিত্রটিতে অভিজ্ঞ ও প্রতিভাবান শিল্পীদের নেওয়া হবে এবং এতে রাজা রঘুবংশীর ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে তাঁর রহস্যজনক মৃত্যু পর্যন্ত সবকিছু ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হবে।
‘হনিমুন ইন শিলং’-এর প্রথম পোস্টার সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া এবং প্রেস কনফারেন্সের সময় প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে চলচ্চিত্রটির পরিচালক, প্রযোজক ও কাস্টিং ডিরেক্টরের নামও রয়েছে। এই অনুষ্ঠানে রাজা রঘুবংশীর ভাইয়েরা মিডিয়াকে জানান, তাঁরা চান সত্য দেশবাসীর সামনে আসুক এবং চলচ্চিত্রটি এর জন্য একটি প্রভাবশালী মাধ্যম হতে পারে।
পরিবারের সদস্যদের বিশ্বাস, এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ঘটনার গভীরতা সম্পর্কে জানতে পারবে এবং এটি বিচারিক প্রক্রিয়াকেও ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ড: এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে
রাজা রঘুবংশী তাঁর স্ত্রী সোনম রঘুবংশীর সঙ্গে বিয়ের পর হনিমুনের জন্য শিলং গিয়েছিলেন। সেখান থেকে হঠাৎ করেই তাঁরা দু'জন নিখোঁজ হয়ে যান। কিছুদিন পর রাজার মৃতদেহ একটি গভীর খাদ থেকে উদ্ধার করা হয়, যেখানে সোনমকে উত্তর প্রদেশের গাজিপুর থেকে আটক করা হয়েছিল। শিলং পুলিশ এখন পর্যন্ত এই মামলায় ৮ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে, যাদের মধ্যে তিন জন জামিন পেয়েছেন।
সোনম রঘুবংশীর বিরুদ্ধে স্বামীর হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহ করা হচ্ছে, তবে এখনও পর্যন্ত হত্যার পেছনের আসল কারণ স্পষ্ট নয়। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন এবং এর শুনানি চলছে।
চলচ্চিত্রের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই একটি নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। যখন মামলাটি এখনও আদালতে বিচারাধীন, তখন এর উপর চলচ্চিত্র নির্মাণ কি ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে? অনেকের ধারণা এটি সত্য দেখানোর একটি প্রচেষ্টা, আবার কেউ কেউ এটিকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ হিসেবেও দেখছেন। যদিও পরিচালক এবং পরিবারের সদস্যরা উভয়েই স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে চলচ্চিত্রটি কোনো ধরনের কল্পনাবিলাস বা পক্ষপাতিত্ব থেকে দূরে থাকবে এবং পুরো গল্পটি পুলিশের নথি ও পারিবারিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি হবে।