আইআইএম কলকাতার তরুণীর অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়ালেও, এখনও পর্যন্ত হয়নি কোনও মেডিক্যাল পরীক্ষা। পুলিশের বক্তব্য, তরুণী এবং তাঁর পরিবার একাধিকবার অনুরোধ সত্ত্বেও পরীক্ষায় সম্মত হননি। ফলে তদন্তের গতি থমকে যাচ্ছে, চিন্তায় প্রশাসন।
অভিযোগ আছে, প্রমাণ নেই? বিপাকে তদন্ত
কেসের গুরুত্ব অপরিসীম হলেও, মেডিক্যাল রিপোর্ট ছাড়া আইনি পথে অপরাধ প্রমাণ করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। আইনজীবীদের মতে, ধর্ষণ মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মেডিক্যাল পরীক্ষাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরেনসিক প্রমাণ। সেটি অনুপস্থিত থাকলে আদালতে দাঁড় করানো কঠিন হয়ে যায় অভিযোগের খুঁটি।
আঘাত শুধু শারীরিক নয়’—চুপচাপ নির্যাতিতা, বোঝা যাচ্ছে মানসিক দ্বন্দ্ব
ঘটনার পরে নির্যাতিতা তরুণী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বলেই জানিয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। পুলিশ ও মনোবিদরা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করলেও, তিনি পরীক্ষায় সম্মত হননি। চিকিৎসকদের মতে, এমন ট্রমার পরে অনেক সময় ভুক্তভোগীরা ভিতরে ভিতরে নিজেকে দোষী ভাবতে শুরু করেন—এটাই PTSD বা পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারের অংশ।
সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, ফরেনসিক প্রমাণও হারাচ্ছে কার্যকারিতা
ধর্ষণের মামলায় প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। দেরিতে মেডিক্যাল হলে শরীরে থাকা সম্ভাব্য প্রমাণ ধ্বংস হয়ে যায়। তাই এখন পুলিশ ও আইনজীবীরা চেষ্টা করছেন অন্য পথ ধরে তথ্য সংগ্রহ করতে—CCTV ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান, এবং ডিজিটাল তথ্যাদি।
প্রশ্ন উঠছে আইনব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়েও
বিশেষজ্ঞদের মতে, একদিকে আইনের চোখে ‘না মানেই না’—ভুক্তভোগীর সম্মতি ব্যতিরেকে কিছু করা যায় না। অন্যদিকে, তদন্তকারীদের হাতে হাত বাঁধা থাকছে প্রয়োজনীয় প্রমাণ না থাকায়। এই দ্বন্দ্ব আইন এবং মানবাধিকার, উভয়ের মাঝে এক জটিল সীমারেখা টেনে দেয়।
প্রশাসনিক স্তরে উদ্যোগ চলছে, পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা
তরুণী ও তাঁর পরিবার যাতে অন্তত নার্সিং পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে যান, তার জন্য বিশেষ টিম গঠন করেছে পুলিশ। কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। লক্ষ্য, তরুণীর আস্থা ফেরানো—জোর নয়, সহানুভূতি দিয়েই।
সমাজ কি প্রস্তুত? মুখ বন্ধ করলে ন্যায় পাবে কে?
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বড় প্রশ্ন উঠে আসছে—ভুক্তভোগীর প্রতি সহানুভূতির পাশাপাশি, তদন্তের স্বার্থেও কি আরও সচেতন হওয়া জরুরি নয়? সমাজ যদি বারবার তাকে আঙুল তোলে, সে নিজের জন্যই ন্যায় চাওয়ার সাহস হারায় না তো?