IIM কলকাতা কাণ্ডে মোড় ঘোরাচ্ছে? ‘নির্যাতিতা’র অভিযোগ প্রত্যাহারের ইঙ্গিত, তদন্তে নতুন প্রশ্ন

IIM কলকাতা কাণ্ডে মোড় ঘোরাচ্ছে? ‘নির্যাতিতা’র অভিযোগ প্রত্যাহারের ইঙ্গিত, তদন্তে নতুন প্রশ্ন

জামিন পেলেন অভিযুক্ত ছাত্র, মামলার ভিত্তিতে ‘দুর্বলতা’র কথা আদালতের

শনিবারই ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া আইআইএম কলকাতার ছাত্র শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন। আলিপুরের এসিজেএম আদালত মামলার গভীরে না গিয়েও বলে দিয়েছে, কেসটি প্রাথমিকভাবে ‘দুর্বল’ মনে হয়েছে। ফলে আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখানেই থেমে নেই বিতর্ক। মামলার মোড় ক্রমশ ঘুরছে এমন দিকে, যা তদন্তের ভার আরও জটিল করে তুলছে।আদালতের পর্যবেক্ষণ: অভিযোগের স্বরূপ দুর্বল, তাই অভিযুক্তকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া গেলেও তদন্ত চলবে।

অভিযোগ তুলে নেওয়ার পথে ‘নির্যাতিতা’? উঠছে বড় প্রশ্ন

এক বিশ্বস্ত সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, যাঁকে ‘নির্যাতিতা’ বলা হচ্ছে, তিনি ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাইছেন। তিনি ইতিমধ্যেই কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে এই বিষয়ে জানিয়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। খুব শীঘ্রই তাঁর পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন জমা পড়তে পারে। আইনি জট: FIR খারিজের ক্ষমতা শুধুমাত্র হাইকোর্টেরই। তাই একচেটিয়াভাবে তদন্ত থামানো বা অভিযোগ প্রত্যাহার সম্ভব নয়।

হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছে ‘কাল্পনিক অভিযোগ’-এর স্বীকারোক্তি?

সেই রাতে তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল একটি সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য। সেখানেই তিনি নাকি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে বলেন, “আমি কাল্পনিকভাবে অভিযোগ করেছি, হয়তো কিছুই হয়নি!” চিকিৎসক তাঁর মেডিক্যাল নোটে এই বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন এবং সেটি জামিনের আদেশেও উল্লেখ আছে।মেডিকো-লিগ্যাল টেস্টে তরুণী রাজি হননি, এখনও তা হয়নি। আইন অনুযায়ী, ভিক্টিমের সম্মতি ছাড়া এই টেস্ট করা যায় না।

১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি এখনও হয়নি, প্রশ্ন উঠছে তদন্ত নিয়ে

আইন অনুযায়ী, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের মামলায় ‘নির্যাতিতা’র গোপন জবানবন্দি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নথিভুক্ত করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখনো তরুণী সেই জবানবন্দি দেননি। কবে দেবেন, আদৌ দেবেন কি না—তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই কারণে পুলিশের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।আইন কী বলে? BNSS ১৮৩ অনুযায়ী, ভিক্টিম বা সাক্ষী স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে চাইলে তবেই তা রেকর্ড হবে। জোর করে করানো আইনবিরুদ্ধ।

তরুণী ও তাঁর পরিবার ‘অজ্ঞাতবাসে’? চাপের আশঙ্কায় আত্মগোপন?

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তরুণী ও তাঁর পরিবার বর্তমানে তাঁদের বাড়িতে নেই। অভিযোগ রয়েছে, কেস চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের উপর চাপ তৈরি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় তাঁরা গোপন স্থানে চলে গিয়েছেন। ফলে তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরাও।মানসিক পরিস্থিতি: ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তরুণী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এখন বুঝতে পারছেন, অভিযোগ করা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না।

ব্যক্তিগত যন্ত্রণা না আইনি দায়? তরুণীর মানসিক অবস্থাই কি দায়ী এই মোড়ের জন্য?

ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণী চরম মানসিক চাপে রয়েছেন। যিনি তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, তিনি জানান, তরুণী নিজেই স্বীকার করছেন, হয়তো ওইভাবে অভিযোগ করা উচিত হয়নি। কিন্তু এটাই কি সত্য? নাকি কাউকে বাঁচাতে বা নিজের পরিবারকে রক্ষা করতে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তিনি?বিষয়টি এখনো বহু স্তরে ঘনীভূত। তদন্ত, জবানবন্দি ও মেডিকো-লিগ্যাল রিপোর্ট ছাড়া সত্য উদঘাটন সম্ভব নয়।

Leave a comment