অবৈধ ধর্মান্তরকরণ চক্রের মূল পান্ডা জালালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবার বিরুদ্ধে সরকারের কড়া পদক্ষেপ

অবৈধ ধর্মান্তরকরণ চক্রের মূল পান্ডা জালালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবার বিরুদ্ধে সরকারের কড়া পদক্ষেপ

অবৈধ ধর্মান্তরকরণের ব্যবসা চালানো জালালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবার বিরুদ্ধে যোগী সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। ছাঙ্গুর বাবার এই কালো কারবার শুধুমাত্র উত্তর প্রদেশেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরাখণ্ডেও তার নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল।

বলরামপুর: উত্তর প্রদেশে অবৈধ ধর্মান্তরকরণ চক্র চালানো জালালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবার নেটওয়ার্কের উপর সরকারের নজরদারি ক্রমশ বাড়ছে। ছাঙ্গুর বাবার নেটওয়ার্ক শুধু উত্তর প্রদেশেই নয়, বরং প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরাখণ্ডেও বিস্তৃত ছিল। এই সূত্রে, ইউপি এটিএস উত্তরাখণ্ড থেকে দুই গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহভাজন আব্দুল রহমান এবং মরিয়মকে हिरासत নিয়েছে। দুজনের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে তারা ছাঙ্গুর গ্যাংয়ের জন্য উত্তরাখণ্ডে ধর্মান্তরকরণের নেটওয়ার্ক চালাচ্ছিল।

উত্তরাখণ্ডে এটিএস-এর বড় পদক্ষেপ

ইউপি এটিএস উত্তরাখণ্ডের শঙ্করপুর থেকে আব্দুল রহমান এবং দোইওয়ালা থেকে মরিয়মকে हिरासत নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। দুজনেই দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহজনক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল, যার উপর এটিএস-এর নজর ছিল। সূত্র মারফত জানা গেছে, আব্দুল রহমান ছাঙ্গুর বাবার নেটওয়ার্কের স্থানীয় স্তরের সক্রিয় সদস্য ছিল এবং ধর্মান্তরকরণের এই চক্রের পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল।

এটিএস রহমানের বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথি এবং ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছে, যেগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে। আব্দুল রহমানকে উত্তর প্রদেশে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, যাতে দেরাদুনে এই নেটওয়ার্কের শিকড় কতটা গভীর এবং এর সংযোগ আর কোথায় কোথায় আছে, তা জানা যায়।

মরিয়মের ভূমিকাও সন্দেহজনক

প্রাথমিক তদন্তে মরিয়মের এই চক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকার সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশ এখন মরিয়মের স্থানীয় যোগাযোগ, কাজকর্ম এবং আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখছে। দেরাদুন এবং আশেপাশের এলাকায় এই নেটওয়ার্কের বিস্তারও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, মরিয়ম ছাঙ্গুর বাবার চক্রের জন্য নতুন লোক নিয়োগ এবং ধর্মান্তরকরণের প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছিল। পুলিশ স্থানীয় লোক এবং অন্যান্য সূত্র থেকে মরিয়মের কাজকর্মের তথ্য সংগ্রহ করছে।

এর আগে, ইউপি এটিএস এবং ইডি ছাঙ্গুর বাবার দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ১৪টি ঠিকানায় তল্লাশি চালায়। মুম্বাইয়ের বান্দ্রা এবং মাহিমের দুটি ঠিকানায়ও রেড করা হয়, যেখানে ছাঙ্গুর গ্যাংয়ের সদস্য শাহজাদাকে কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইডি-র তদন্তে জানা গেছে যে শাহজাদার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় দুই কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে, যা ধর্মান্তরকরণ এবং অবৈধ তহবিল সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। এছাড়াও, ছাঙ্গুরের ভাইপো সোহরাবকেও ইউপি এটিএস আগেই গ্রেফতার করেছে।

বিদেশেও ছড়িয়ে ছাঙ্গুর বাবার নেটওয়ার্ক

তদন্তকারী সংস্থাগুলোর মতে, ছাঙ্গুর বাবা ধর্মান্তরকরণের এই কালো ব্যবসার জন্য যে তহবিল সংগ্রহ করেছিল, তা মুম্বাই থেকে শুরু করে উত্তর প্রদেশের বলরামপুর পর্যন্ত বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তদন্তে ১৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে, যেগুলোর মাধ্যমে তহবিল স্থানান্তর করা হয়েছে। বলা হচ্ছে যে এই অ্যাকাউন্টগুলোতে যে টাকা এসেছে, তা অবৈধ ধর্মান্তরকরণ, মাদ্রাসা পরিচালনা এবং নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।

সংস্থাগুলোর মতে, ছাঙ্গুর বাবার নেটওয়ার্ক শুধু ভারতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ইউএই, সৌদি আরব এবং তুরস্কের মতো ইসলামিক দেশগুলোতেও ছড়িয়ে রয়েছে। এই দেশগুলোর পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিদেশ থেকে তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে, যেগুলোর তদন্ত এখন ইডি এবং এটিএস করছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই চক্রের সদস্যরা ৪০ থেকে ৫০টি ইসলামিক দেশও ভ্রমণ করেছে। এই ভ্রমণের উদ্দেশ্য ছিল বিদেশ থেকে তহবিল সংগ্রহ করা এবং ভারতে ধর্মান্তরকরণের নেটওয়ার্ককে বিস্তার করা।

লাল ডায়েরিতে বড়ো পর্দাফাঁস

যখন ইউপি এটিএস বলরামপুরে ছাঙ্গুর বাবার ঠিকানায় তল্লাশি চালায়, তখন সেখান থেকে নিতু ওরফে নাসরিন নামের এক মহিলার কাছ থেকে একটি 'লাল ডায়েরি' উদ্ধার করা হয়। এই ডায়েরিতে অনেক নেতা এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের নাম পাওয়া গেছে। সূত্র মারফত জানা গেছে, এই ডায়েরিতে ধর্মান্তরকরণের জন্য কীভাবে এবং কাদের তহবিল দেওয়া হয়েছে, নেতা ও অফিসারদের কত টাকা দেওয়া হয়েছে, তার পুরো হিসেব লেখা ছিল।

আরও জানা গেছে যে ছাঙ্গুর বাবা আসন্ন উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে একজন প্রাক্তন আইপিএস অফিসারকে তার প্রার্থী করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গত নির্বাচনে সে এক নেতাকে ৯০ লক্ষ টাকা নির্বাচনের জন্য দিয়েছিল, যদিও সেই নেতা নির্বাচনে হেরে গিয়েছিল।

Leave a comment