ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নিমিষা প্রিয়ার রায়ের উপর স্থগিতাদেশ, সর্বাত্মক চেষ্টার আশ্বাস সরকারের

ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নিমিষা প্রিয়ার রায়ের উপর স্থগিতাদেশ, সর্বাত্মক চেষ্টার আশ্বাস সরকারের

ইয়েমেনে ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট আপাতত সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে, তাঁকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।

Nimisha Priya: ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়াকে ২০১৭ সালে ইয়েমেনে তার ব্যবসায়িক অংশীদারকে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তবে কেন্দ্র সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে যে, তার মৃত্যুদণ্ড আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টও সরকারের এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ ১৪ই আগস্ট ধার্য করেছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, নিমিষাকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা প্রয়োজনীয় সমস্ত কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে।

পুরো ঘটনাটি কী

৩৮ বছর বয়সী নিমিষা প্রিয়া কেরালার একজন নার্স, যিনি কাজের সূত্রে ইয়েমেন গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি একজন ইয়েমেনি নাগরিকের সাথে ব্যবসা শুরু করেন। ২০১৭ সালে এই ব্যবসায়িক অংশীদার খুন হন এবং নিমিষার উপর অভিযোগ ওঠে। ইয়েমেনের আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০২৩ সালে তার শেষ আপিলও খারিজ হয়ে যায়, যার ফলে তার সাজার বাস্তবায়ন নিশ্চিত হয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র সরকারের পেশ করা রিপোর্ট

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চের সামনে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল আর. ভেঙ্কটরামানি জানান যে, মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে। তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, নিমিষাকে ফিরিয়ে আনতে এবং তার জীবন বাঁচাতে সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করছে।

ব্লাড মানি এবং ক্ষমার বিকল্পের উপর জোর

অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে জানান, ইয়েমেনের আইন অনুযায়ী, যদি মৃতের পরিবার ক্ষমা করে দেয় এবং ব্লাড মানি (রক্তের মূল্য) গ্রহণ করে, তাহলে সাজা কমানো বা বাতিল করা যেতে পারে। সেই কারণেই সরকার এই বিষয়ে কূটনৈতিক স্তরে চেষ্টা চালাচ্ছে। আপাতত নিমিষাকে ক্ষমা পাওয়ানোই প্রধান লক্ষ্য, যাতে ব্লাড মানির বিকল্পটি বিবেচনা করা যায়।

কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা

সরকার আদালতকে আরও জানিয়েছে যে, ইয়েমেনের পরিস্থিতি এবং সেখানকার আইন অনুযায়ী এটি একটি সংবেদনশীল বিষয়। ব্লাড মানির প্রক্রিয়া সহজ নয়, কারণ এতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সম্মতি প্রয়োজন। এর জন্য ভারত সরকার लगातार ইয়েমেনে ভারতীয় মিশন এবং স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছে।

শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ

সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনা করে পরবর্তী শুনানির জন্য ১৪ই আগস্ট তারিখ নির্ধারণ করেছে। আদালত কেন্দ্র সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে যে, সম্ভাব্য সকল উপায় ব্যবহার করে নিমিষার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

আবেদনকারীর বক্তব্য

আদালতে আবেদনকারী জানান, আপাতত নিমিষার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন যে, ভারত সরকারের এই বিষয়ে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত, যাতে একজন ভারতীয় নাগরিকের জীবন বাঁচানো যায়।

এর আগে নিমিষার মা ও পরিবারের পক্ষ থেকে বহুবার ভারত সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তারা দাবি জানিয়েছিলেন যে, তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার যেন কূটনৈতিক স্তরে হস্তক্ষেপ করে।

Leave a comment