ভারতের ক্রেডিট রেটিং আপগ্রেড: R&I দ্বারা BBB+ এ উন্নীত, ২০২৫ সালের তৃতীয় উন্নতি

ভারতের ক্রেডিট রেটিং আপগ্রেড: R&I দ্বারা BBB+ এ উন্নীত, ২০২৫ সালের তৃতীয় উন্নতি

জাপানি রেটিং এজেন্সি R&I ভারতের দীর্ঘমেয়াদী ক্রেডিট রেটিংকে BBB+ (ট্রিপল বি প্লাস) এ উন্নীত করেছে। ২০২৫ সালে এটি ভারতে পাওয়া তৃতীয় আপগ্রেড। এজেন্সি জানিয়েছে যে, অভ্যন্তরীণ চাহিদার উপর নির্ভরশীল অর্থনীতি আমেরিকার উচ্চ শুল্ক নীতি দ্বারা প্রভাবিত হবে না। রেটিং উন্নত হওয়ায় বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

ক্রেডিট রেটিং: জাপানি রেটিং এজেন্সি R&I শুক্রবার ভারতের দীর্ঘমেয়াদী সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিংকে BBB+ এ উন্নীত করেছে এবং এর দৃষ্টিভঙ্গি স্থিতিশীল রেখেছে। ২০২৫ সালে এটি ভারতে পাওয়া তৃতীয় রেটিং আপগ্রেড, যেখানে এর আগে S&P এবং মর্নিংস্টার DBRS-ও ভারতের রেটিং উন্নত করেছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি অভ্যন্তরীণ চাহিদার উপর নির্ভরশীল, তাই আমেরিকার শুল্ক নীতি এবং বৈশ্বিক ঝুঁকির বড় প্রভাব পড়বে না। সরকার এটিকে একটি স্বাগতযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং বলেছে যে রেটিংয়ের এই উন্নতি বিনিয়োগ আকর্ষণ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

রেটিং আপগ্রেডের অর্থ

ক্রেডিট রেটিং নির্দেশ করে যে একটি দেশ তার আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণে কতটা সক্ষম। উচ্চ রেটিং মানে হল দেশটি কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত। ট্রিপল বি রেটিং সাধারণত বিনিয়োগযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। রেটিং বাড়ার ফলে ঋণ নেওয়ার হার কমে এবং বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ে। এর ফলস্বরূপ, দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হয় এবং উন্নয়নের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।

রিপোর্টে কী বলা হয়েছে

R&I এর রিপোর্টে ভারতের অর্থনৈতিক মজবুতিকে অভ্যন্তরীণ চাহিদার উপর নির্ভরশীল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এজেন্সি জানিয়েছে যে, আমেরিকার মতো দেশগুলির উচ্চ শুল্ক নীতি এবং বৈশ্বিক ঝুঁকি ভারতের উপর বড় প্রভাব ফেলবে না। R&I সরকারের নীতিগুলিরও প্রশংসা করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সরকার বৃদ্ধির প্রচারের পাশাপাশি আর্থিক শৃঙ্খলার দিকেও মনোযোগ দিয়েছে।

R&I এর রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ভারতের অর্থনীতি আগামী দিনেও শক্তিশালী থাকবে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা, বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা এবং আর্থিক শৃঙ্খলার কারণে ভারতীয় অর্থনীতি স্থিতিশীল এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় রয়েছে।

পূর্ববর্তী রেটিং আপগ্রেড

এর আগে ২০২৫ সালে আরও দুটি এজেন্সি ভারতকে রেটিং আপগ্রেড দিয়েছিল। মে ২০২৫ সালে মর্নিংস্টার DBRS ভারতের ক্রেডিট রেটিংকে ট্রিপল বি লো থেকে ট্রিপল বি-তে উন্নীত করেছিল। অন্যদিকে, আগস্ট ২০২৫ সালে S&P এটিকে ট্রিপল বি মাইনাস থেকে ট্রিপল বি-তে আপগ্রেড করে। এই কারণে, R&I-এর এই সিদ্ধান্ত ভারতের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বৃদ্ধির তৃতীয় বড় ইঙ্গিত।

ভারত সরকারের স্বাগত

ভারত সরকার এই আপগ্রেডকে স্বাগত জানিয়েছে। অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে যে, এই অর্থবর্ষে এটি তৃতীয় বড় এজেন্সি যারা ভারতের রেটিং উন্নতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রক আরও জানিয়েছে যে, সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উচ্চ মানের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর পাশাপাশি, আর্থিক বিচক্ষণতা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার উপরও জোর দেওয়া হয়েছে।

সরকার আরও বলেছে যে, রেটিং আপগ্রেড বিদেশী বিনিয়োগকারী এবং বৈশ্বিক বাজারে ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা মজবুত হয় এবং নতুন পুঁজি আসার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

অর্থনীতির জন্য আপগ্রেডের অর্থ কী

ক্রেডিট রেটিংয়ে উন্নতির অর্থ হল দেশটি বিদেশী বিনিয়োগকারী এবং ঋণদাতা সংস্থাগুলির জন্য আরও নির্ভরযোগ্য হয়ে ওঠে। এটি বিনিয়োগের ব্যয় হ্রাস করে এবং বিদেশী বিনিয়োগকে আকর্ষণ করে। উচ্চ রেটিং সম্পন্ন দেশগুলি তাদের উন্নয়ন এবং অবকাঠামোতে দ্রুত বিনিয়োগ করতে পারে।

ভারতের বৃদ্ধির কাঠামো অভ্যন্তরীণ চাহিদার উপর নির্ভরশীল হওয়ায় বৈশ্বিক ঝুঁকি এবং বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব কম হবে। এর ফলে ভারত অর্থনৈতিক মন্দা বা বৈশ্বিক সংকট থেকে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ থাকবে। বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘ সময়ের জন্য ভারতে বিনিয়োগ করাকে নিরাপদ মনে করবে।

Leave a comment