ভারত আগস্ট মাসে রাশিয়ার তেল আমদানি বাড়িয়ে আমেরিকাকে কড়া জবাব দিয়েছে। ভারতের আমদানি ছিল ২.৯ বিলিয়ন ইউরো, যা চীনের ৩.১ বিলিয়ন ইউরোর কাছাকাছি। মার্কিন চাপ এবং অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক সত্ত্বেও ভারত রাশিয়া থেকে কেনা অব্যাহত রেখেছে এবং স্পষ্ট করেছে যে কেবল ভারতকে লক্ষ্যবস্তু করা অন্যায়।
Crude oil import: মার্কিন চাপ এবং অতিরিক্ত শুল্ক সত্ত্বেও ভারত আগস্ট মাসে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়িয়ে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। ফিনল্যান্ড-ভিত্তিক সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত রাশিয়া থেকে ২.৯ বিলিয়ন ইউরোর অপরিশোধিত তেল কিনেছে, যা চীনের ৩.১ বিলিয়ন ইউরোর আমদানির প্রায় সমান। যদিও জুলাই মাসে ভারতের আমদানি ছিল ২.৭ বিলিয়ন ইউরো, চীনের আমদানি কমেছে। ভারত বলেছে যে কেবল তাকে লক্ষ্যবস্তু করা ভুল, যখন চীন, ইউরোপ এবং অন্যান্য দেশও রাশিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে শক্তি কিনছে।
আগস্ট মাসে ভারতের তেল আমদানি বৃদ্ধি
ফিনল্যান্ডের সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত আগস্ট মাসে রাশিয়া থেকে ২.৯ বিলিয়ন ইউরোর অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। এই অঙ্ক চীনের ৩.১ বিলিয়ন ইউরো আমদানির প্রায় সমান। অর্থাৎ, রাশিয়া থেকে তেল কেনার ক্ষেত্রে ভারত এখন চীনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। জুলাই মাসে ভারতের তেল আমদানি ছিল ২.৭ বিলিয়ন ইউরো, যেখানে চীনের আমদানি ছিল ৪.১ বিলিয়ন ইউরো। আগস্ট মাসে চীনের আমদানি কমে যাওয়ায় ভারত ও চীনের মধ্যে ব্যবধান আরও কমে গেছে।
আমেরিকার চাপ এবং ভারতের অবস্থান
আমেরিকা ক্রমাগত বলছে যে ভারতের রাশিয়ার তেল আমদানি রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা দিচ্ছে। এই যুক্তির ভিত্তিতে আমেরিকা ২৭ আগস্ট থেকে ভারতীয় রপ্তানির উপর ২৫% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে। আশ্চর্যের বিষয় হল, চীন বা রাশিয়ার তেল ক্রেতাদের উপর এমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ভারত এই বৈষম্যকে অন্যায় বলে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভারত বলছে যে রাশিয়া থেকে তেল কেনা যদি সমস্যা হয়, তবে কেবল ভারতকেই কেন লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।
আমেরিকা ইউরোপকেও চাপ দিচ্ছে
মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চীন ও ভারতের পণ্যের উপর ১০০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে, এমন পদক্ষেপ নিয়ে এই দুই দেশকে রাশিয়া থেকে শক্তি আমদানি কমাতে বাধ্য করা যেতে পারে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেও রাশিয়া থেকে শক্তি আমদানি করছে, যার ফলে আমেরিকার যুক্তিগুলি প্রায়শই প্রশ্নের মুখে পড়ে।
চীন এখনও সর্ববৃহৎ ক্রেতা
আগস্ট মাসে রাশিয়া থেকে শক্তি কেনার ক্ষেত্রে চীন শীর্ষে ছিল। চীন মোট ৫.৭ বিলিয়ন ইউরোর জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি করেছে। এর মধ্যে ছিল ৫৫৩ মিলিয়ন ইউরোর তেল পণ্য, ৫৫ মিলিয়ন ইউরোর কয়লা এবং ৬৭৬ মিলিয়ন ইউরোর পাইপলাইন গ্যাস। ভারত এই ক্ষেত্রে ৩.৬ বিলিয়ন ইউরো আমদানির সাথে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এর মধ্যে ৫১০ মিলিয়ন ইউরোর কয়লা এবং ২৮২ মিলিয়ন ইউরোর পরিশোধিত পণ্যও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
তুরস্ক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান
তুরস্ক রাশিয়া থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি করা তৃতীয় বৃহত্তম ক্রেতা ছিল। আগস্ট মাসে তারা ৩ বিলিয়ন ইউরোর আমদানি করেছে, যার মধ্যে ১.২ বিলিয়ন ইউরোর পাইপলাইন গ্যাস এবং প্রায় ৫৯৬ মিলিয়ন ইউরোর অপরিশোধিত তেল অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়ন চতুর্থ স্থানে ছিল। তারা ১.২ বিলিয়ন ইউরোর আমদানি করেছে, যার মধ্যে ৭৭৩ মিলিয়ন ইউরোর এলএনজি ও পাইপলাইন গ্যাস এবং ৩৭৯ মিলিয়ন ইউরোর অপরিশোধিত তেল অন্তর্ভুক্ত ছিল।