ভারত ও কাতারের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) অক্টোবর মাসের শুরুতে চূড়ান্ত হতে পারে। এই চুক্তিটি আগামী পাঁচ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২৮ বিলিয়ন ডলারে দ্বিগুণ করার পরিকল্পনার অংশ। ৬ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের কাতার সফর এই দিকে একটি নির্ধারক পদক্ষেপ হতে পারে।
Trade deal: ভারত ও কাতারের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) অক্টোবর ২০২৫-এর প্রথম সপ্তাহে চূড়ান্ত হতে পারে। এটি ফেব্রুয়ারী মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির উপস্থিতিতে নির্ধারিত অর্থনৈতিক লক্ষ্যের একটি অংশ, যার মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করার লক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ৬ অক্টোবর কাতার সফর করবেন, এবং একই সময়ে ভারত-ইইউ বাণিজ্য আলোচনাও ১২ সেপ্টেম্বর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের সাথে এগিয়ে চলেছে। এই চুক্তির ফলে ভারতের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ বাড়তে পারে।
ভারত-কাতার FTA-এর সূচনা
এই চুক্তির সূচনা হয়েছিল ফেব্রুয়ারী ২০২৫-এ, যখন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি ভারত এসেছিলেন। নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে উভয় দেশ দুটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। প্রথম চুক্তিটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার উপর ভিত্তি করে ছিল এবং দ্বিতীয়টি সংশোধিত দ্বৈত কর এড়ানোর উপর ভিত্তি করে ছিল। এই সময়েই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা তৈরি হতে শুরু করে।
অক্টোবরে চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা
সরকারি সূত্র অনুসারে, ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে কাতার সফর করতে পারেন। এই সফরের সময় FTA আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত করা যেতে পারে। এটি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যকলাপে গতি আনবে এবং বিনিয়োগকারীদেরও একটি স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেবে।
বাণিজ্য দ্বিগুণ করার লক্ষ্য
ফেব্রুয়ারী ২০২৫-এর আলোচনায় ভারত ও কাতার আগামী পাঁচ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে এই বাণিজ্য প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এটি ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য উভয় দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে।
FTA কার্যকর হওয়ার পর উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক বাধা কমবে। ভারতের পণ্য কাতারে আরও সহজলভ্য হবে এবং কাতারের পণ্য ভারতে সহজে প্রবেশ করতে পারবে। এর ফলস্বরূপ আমদানি-রপ্তানি উভয়ই বাড়তে পারে। এর থেকে ভারতীয় রপ্তানিকারক, বিনিয়োগকারী এবং শিল্প জগৎ সরাসরি উপকৃত হবে।
ভারত-ইইউ আলোচনাও চলছে
এই সময়ে ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনাও চলছে। বর্তমানে ১৩তম পর্বের বৈঠক চলছে। ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফকোভিচের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। এই বৈঠক উভয় পক্ষের মধ্যে সহযোগিতা এবং বোঝাপড়া আরও জোরদার করবে।
ভারতের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দৃষ্টিভঙ্গি এখন আরও বিস্তৃত হয়েছে। কাতারের সাথে FTA এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে আলোচনার ফলে বিশ্ব বাজারে ভারতের পৌঁছ আরও শক্তিশালী হবে। এই কৌশল কেবল বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে না, বরং বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার নতুন সুযোগও তৈরি করবে।
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ
FTA কার্যকর হলে ভারতে বিনিয়োগ বাড়বে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে। কাতার থেকে শক্তি, LNG এবং প্রযুক্তি পণ্যের বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া ভারতে উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রে বিনিয়োগকে উৎসাহ দেওয়া হবে। এইভাবে FTA-এর প্রভাব সাধারণ মানুষের উপরও পড়বে।