ভারতের মাজাগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড শ্রীলঙ্কার প্রধান কোম্পানি CDPLC-তে ৫৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চলেছে। এই চুক্তি কৌশলগত দিক থেকে চীনের ভারত মহাসাগরীয় কৌশলের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
MDL এবং CDPLC চুক্তি: ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হতে চলেছে, যা কেবল অর্থনৈতিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, কৌশলগতভাবেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের সরকারি প্রতিরক্ষা শিপবিল্ডিং কোম্পানি মাজাগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (MDL) শ্রীলঙ্কার কলম্বো ডকইয়ার্ড পিএলসি (CDPLC)-তে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্ব কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই চুক্তিটি প্রায় ৫৩ মিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৪৩৯ কোটি টাকার।
MDL দুটি পর্যায়ে CDPLC-র শেয়ার কিনবে
এই চুক্তির অধীনে, MDL দুটি অংশে CDPLC-র শেয়ার কিনবে। প্রথম প্রক্রিয়ার অধীনে, MDL জাপানের ওনোমিচি ডকইয়ার্ড কোম্পানি লিমিটেড থেকে শেয়ার কিনবে, যা বর্তমানে CDPLC-র বৃহত্তম অংশীদার। এছাড়াও, CDPLC কিছু নতুন শেয়ার ইস্যু করবে যা MDL কিনবে। এইভাবে, ভারতের এই কোম্পানিটি শ্রীলঙ্কার বৃহত্তম শিপবিল্ডিং কোম্পানিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্ব অর্জন করবে।
চুক্তির বৈশিষ্ট্য এবং কৌশলগত গুরুত্ব
কলম্বো ডকইয়ার্ড পিএলসি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য শিপবিল্ডিং কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। এই কোম্পানিটি জাপান, নরওয়ে, ফ্রান্স, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের জন্য টহল জাহাজ, ট্যাঙ্কার এবং কেবল স্থাপনকারী বিশেষ জাহাজ তৈরি করেছে।
অন্যদিকে, মাজাগাঁও ডক ভারতে স্করপিয়ন বা কালভারি শ্রেণির সাবমেরিন তৈরি করেছে এবং বর্তমানেও এটি বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা প্রকল্পে কাজ করছে। তাদের ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য পরবর্তী প্রজন্মের স্টেলথ ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিন নির্মাণের প্রকল্প পাওয়ারও সুযোগ রয়েছে, যার আনুমানিক ব্যয় ৭০,০০০ কোটি টাকা।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ক্রমবর্ধমান শিপবিল্ডিং শক্তি
MDL-এর পরিচালক ক্যাপ্টেন জগানমোহনের মতে, এই চুক্তিটি দক্ষিণ এশিয়ার শিপবিল্ডিং শিল্পের জন্য একটি গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে। এটি কেবল MDL-এর বিশ্বব্যাপী উপস্থিতিই শক্তিশালী করবে না, বরং ভারতকে একটি বিশ্বব্যাপী শিপবিল্ডিং শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ দেবে।
চীনের কেন ধাক্কা লাগবে
এই চুক্তিটি চীনের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। চীন ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কায় কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। তারা হাম্বানটোটা বন্দর লিজ নিয়ে ভারত মহাসাগরে তাদের অবস্থান সুসংহত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এখন ভারতের একটি প্রধান প্রতিরক্ষা কোম্পানির শ্রীলঙ্কায় গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ এই ভারসাম্য পরিবর্তন করতে পারে।
