আমেরিকার শুল্ক থেকে এমএসএমই-কে বাঁচাতে ভারত সরকারের বিশেষ ত্রাণ প্যাকেজ

আমেরিকার শুল্ক থেকে এমএসএমই-কে বাঁচাতে ভারত সরকারের বিশেষ ত্রাণ প্যাকেজ

আমেরিকা কর্তৃক আরোপিত ৫০% শুল্ক থেকে এমএসএমই (MSME) সেক্টরকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ভারত সরকার একটি বিশেষ ত্রাণ প্যাকেজ প্রস্তুত করেছে। এতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের সুবিধা, ঋণের সীমা বৃদ্ধি, সুদের উপর ভর্তুকি এবং ইকুইটি ফাইন্যান্সিং-এর নতুন পথের সংযোজন রয়েছে। এই পদক্ষেপটি কর্মসংস্থান সুরক্ষা এবং রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। 

ট্রাম্পের শুল্ক: ভারত সরকার মার্কিন শুল্কের কারণে এমএসএমই সেক্টরের সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য একটি বিশেষ ত্রাণ যোজনা তৈরি করেছে। এই প্যাকেজে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালে সহজ প্রবেশাধিকার, ঋণের সীমা ₹১০ লক্ষ থেকে ₹২০ লক্ষ পর্যন্ত বৃদ্ধি, সুদের উপর ভর্তুকি এবং ইকুইটি ফাইন্যান্সিং-এর বিকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। টেক্সটাইল, গার্মেন্টস, জেমস-এন্ড-জুয়েলারি, লেদার, ইঞ্জিনিয়ারিং গুডস এবং এগ্রো-মেরিন এক্সপোর্ট সেক্টর বিশেষ সহায়তা পাবে। এর উদ্দেশ্য হল কর্মসংস্থান বাঁচানো এবং রপ্তানিকারকদের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ থেকে রক্ষা করা।

মার্কিন শুল্ক এবং এমএসএমই-এর উপর প্রভাব

আমেরিকার পক্ষ থেকে ৫০% শুল্ক আরোপের পর ভারতীয় রপ্তানিতে ব্যাপক পতনের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এই পরিবর্তনের ফলে এমএসএমই সেক্টরের প্রায় ৪৫ থেকে ৮০ বিলিয়ন ডলারের আনুমানিক ক্ষতি হতে পারত। সরকার এই সংকট বিবেচনা করে ত্রাণ যোজনা তৈরি করেছে। এই যোজনার উদ্দেশ্য হল ছোট ও মাঝারি ব্যবসাগুলিকে রপ্তানিতে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা এবং তাদের ব্যবসায়িক কার্যকলাপে যেন কোনো বাধা না আসে।

ত্রাণ যোজনার মূল বিষয়গুলি

সরকারের এই যোজনায় পাঁচটি নতুন উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই যোজনাগুলি কোভিড-যুগের ক্রেডিট গ্যারান্টির উপর ভিত্তি করে তৈরি, কিন্তু বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগুলি প্রস্তুত করা হয়েছে। এই উদ্যোগগুলির প্রধান উদ্দেশ্য হল এমএসএমই-দের ওয়ার্কিং ক্যাপিটালে সহজে প্রবেশাধিকার প্রদান করা।

সরকার ঋণের সীমা ₹১০ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ₹২০ লক্ষ করেছে। এছাড়াও, সুদের উপর ভর্তুকি দিয়ে ঋণ সস্তা করা হবে। এর ফলে সংস্থাগুলি অতিরিক্ত বোঝা ছাড়াই তাদের ব্যবসার জন্য তহবিল পাবে। যোজনার অধীনে ইকুইটি ফাইন্যান্সিং-এর নতুন পথও খুলে দেওয়া হবে, যার ফলে সংস্থাগুলি ঋণ না বাড়িয়েই তাদের ব্যবসার জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে।

সেক্টর-ভিত্তিক বিশেষ সহায়তা

এই ত্রাণ যোজনায় টেক্সটাইল, গার্মেন্টস, জেমস-এন্ড-জুয়েলারি, লেদার, ইঞ্জিনিয়ারিং গুডস এবং এগ্রো-মেরিন এক্সপোর্ট-এর মতো প্রধান সেক্টরগুলিকে বিশেষ সমর্থন দেওয়া হবে। এর উদ্দেশ্য হল ভারতের প্রধান রপ্তানি শিল্পগুলি মার্কিন শুল্ক এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলা করতে পারে।

সরকারের এই উদ্যোগটি এমএসএমই সেক্টরকে বৈশ্বিক ধাক্কা থেকে রক্ষা করারও ইঙ্গিত দেয়। সংস্থাগুলি নতুন বাজার কৌশল গ্রহণ করার এবং তাদের শিপমেন্টে বৈচিত্র্য আনার জন্য সময় পাবে। অনেক সংস্থা ইতিমধ্যেই ভুটান এবং নেপালের মতো নিকটবর্তী দেশগুলির মাধ্যমে বাণিজ্য করছে, যার ফলে ঝুঁকি কমানো যায়।

এমএসএমই সেক্টর এবং কর্মসংস্থান

এমএসএমই সেক্টর দেশের কর্মসংস্থানের অন্যতম প্রধান উৎস। এই সেক্টরকে অর্থনৈতিক ধাক্কা থেকে রক্ষা করা শুধু রপ্তানি বৃদ্ধির জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং দেশে কর্মসংস্থান বজায় রাখার জন্যও অপরিহার্য। সরকারের যোজনার উদ্দেশ্য হল ছোট ও মাঝারি ব্যবসাগুলির ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের বোঝা কমানো এবং তাদের কর্মচারীদের চাকরি সুরক্ষিত রাখা।

এছাড়াও, এই উদ্যোগের ফলে সংস্থাগুলি নতুন বাজার খুঁজে পাবে এবং তাদের ব্যবসাকে বিশ্বব্যাপী প্রসারিত করার সময় পাবে। এই পদক্ষেপটি দেখায় যে সরকার ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিকে ক্রমাগত সমর্থন দিতে এবং তাদের বিকাশের নিশ্চয়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বৈশ্বিক বাণিজ্যের উপর প্রভাব

এমএসএমই সেক্টরকে মার্কিন শুল্কের প্রভাব থেকে রক্ষা করার যোজনা ভারতের রপ্তানি স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে। এর ফলে বৈশ্বিক বাজারে ভারতের প্রতিযোগিতাत्मक অবস্থান শক্তিশালী হবে। ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলির জন্য এই যোজনা তাদের ব্যবসায়িক ঝুঁকি হ্রাস করবে এবং তাদের বৈশ্বিক বাণিজ্যে টেকসই করে তুলবে।

Leave a comment