আমেরিকা-ভারত শুল্ক বিতর্ক মধ্যে ইজরায়েলের ভারতের সমর্থন। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ভারত এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
Israel Support India: ভারত ও আমেরিকার মধ্যে শুল্ক নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইজরায়েল ভারতের পক্ষে স্পষ্ট এবং দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ভারতকে এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে অভিহিত করেছেন। নেতানিয়াহু ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে ইতিবাচক বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে আমেরিকাতেও এই ধারণা তৈরি হয়েছে যে ভারত এশিয়ার একটি শক্তিশালী শক্তি এবং ইজরায়েল তার পাশে আছে। নেতানিয়াহু আশা প্রকাশ করেছেন যে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে চলমান মতভেদ শীঘ্রই মিটে যাবে।
ভারত-ইজরায়েল কূটনৈতিক সাক্ষাৎ
সম্প্রতি নেতানিয়াহু ইজরায়েলে ভারতের রাষ্ট্রদূত জেপি সিংয়ের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এই সাক্ষাতে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা হয়। নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বৈঠকে কৌশলগত সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এই সময় প্রকাশিত ছবিগুলোতে দুই নেতার মধ্যে উষ্ণতা স্পষ্ট দেখা গেছে।
ভারত-আমেরিকা শুল্ক বিতর্কের পটভূমি
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে শুল্ক নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি মনে করতেন যে ভারী আমদানি শুল্ক চাপিয়ে ভারতকে চাপে রাখা যেতে পারে। কিন্তু এর বিপরীতে, ভারত অনেক দেশের সমর্থন পাচ্ছে। বিশেষ করে ইজরায়েলের মতো দেশ প্রকাশ্যে ভারতের পক্ষে দাঁড়িয়ে এই বার্তা দিয়েছে যে ভারত বিশ্ব কূটনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-ইজরায়েল সহযোগিতা
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ভারতের সাথে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান যে অপারেশন সিন্ধুরের সময় ইজরায়েলি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল এবং তাদের ক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। এতে স্পষ্ট হয় যে ইজরায়েল ভারতকে একটি নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তা অংশীদার হিসেবে দেখে।
আমেরিকার পাকিস্তান নীতি ও ভারতের কৌশলগত অবস্থান
যেখানে আমেরিকা পাকিস্তানের সাথে তার সম্পর্ক আরও গভীর করার চেষ্টা করছে, সেখানে ভারত অনেক দেশের সমর্থন পাচ্ছে। ইজরায়েল দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছে যে ভারত তার সবচেয়ে শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য অংশীদার। এই মুহূর্তে এই বার্তা দেওয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমেরিকার নীতি ভারতকে নিয়ে অস্থির দেখাচ্ছে।
ভারতের সাথে বাণিজ্য এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে অন্যান্য বিশ্বশক্তির মনোভাবও পাল্টাচ্ছে। চীন, রাশিয়া ও ব্রাজিলের মতো দেশ ভারতের সাথে তাদের সম্পর্ক জোরদার করার দিকে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
চীনের বাণিজ্যিক প্রস্তাব
চীনা রাষ্ট্রপতি ভারতের সাথে বাণিজ্য বাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। একই সাথে চীনা রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং আমেরিকার শুল্ক নীতিকে হুমকি দেওয়ার কৌশল বলেছেন। তিনি নাম না করে বলেন যে, "ধমকদাতাদের যদি এক ইঞ্চি ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে তারা এক মাইল নেওয়ার চেষ্টা করে।" এই মন্তব্য ভারতের পক্ষে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাশিয়া ও ব্রাজিলের অংশগ্রহণ
রাশিয়ার রাষ্ট্রপতিও এই মাসের শেষে ভারত সফরে আসছেন। একই সময়ে ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তারা ভারতের সাথে তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক তিনগুণ বাড়াতে চান। এই ঘোষণাগুলো থেকে এটা স্পষ্ট যে বিশ্বব্যাপী ভারতের গ্রহণযোগ্যতা ক্রমাগত বাড়ছে।
ভারত-ইজরায়েল বন্ধুত্বে প্রভাব পড়বে না
আমেরিকার নীতি সত্ত্বেও ইজরায়েল স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ভারত এবং তাদের সম্পর্ক কোনো অবস্থাতেই প্রভাবিত হবে না। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই বার্তা দিয়ে ভারতকে কেবল কূটনৈতিক সমর্থন দেননি, বরং আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছেন।