ভারতে ঘোরার মতো জায়গার অভাব নেই, এবং এদের মধ্যে জয়পুরের নাম সবসময় শীর্ষে থাকে। নিজের রাজস্থানী সংস্কৃতি, রাজকীয় খানাপিনা, ঐতিহাসিক ইমারত এবং রাজমহলের জন্য বিখ্যাত জয়পুর "পিঙ্ক সিটি" নামেও পরিচিত।
Must Visit City: জয়পুর, যাকে ভারতের ‘পিঙ্ক সিটি’ নামে জানা যায়, আবারও আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের সম্মান বাড়িয়েছে। বিখ্যাত ট্রাভেল ম্যাগাজিন Travel + Leisure-এর ‘ওয়ার্ল্ডস বেস্ট সিটিজ ২০২৫’ র্যাঙ্কিং-এ জয়পুর ৫ম স্থান পেয়েছে। ৯১.৩৩-এর প্রভাবশালী স্কোর নিয়ে জয়পুর ইতালির ফ্লোরেন্স (৯০.০৮)-এর মতো বিশ্ববিখ্যাত শহরকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে।
এই কৃতিত্ব প্রমাণ করে যে জয়পুর তার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, আতিথেয়তা, খাবার এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলোর জন্য সারা বিশ্বের পর্যটকদের পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
- ‘World’s Best Cities 2025’ লিস্টে টপ ৫ শহর
- San Miguel de Allende, মেক্সিকো – স্কোর: ৯৩.৪৪
- Chiang Mai, থাইল্যান্ড – স্কোর: ৯১.৯৪
- Tokyo, জাপান – স্কোর: ৯১.৬৩
- Bangkok, থাইল্যান্ড – স্কোর: ৯১.৪৮
- Jaipur, ভারত – স্কোর: ৯১.৩৩
জয়পুর কেন টপ ৫-এ স্থান পেল?
Travel + Leisure প্রতি বছর তাদের আন্তর্জাতিক পাঠকদের শহরগুলোকে আলাদা আলাদা মানদণ্ডে রেট করতে বলে। এতে সংস্কৃতি, পর্যটন স্থল, খানাপিনা, কেনাকাটা, হোটেল, মানুষের অতিথিপরায়ণতা এবং ভ্রমণের সামগ্রিক অভিজ্ঞতা অন্তর্ভুক্ত থাকে। ২০২৫-এর র্যাঙ্কিং-এ জয়পুর তার অনন্য অভিজ্ঞতা এবং বৈচিত্র্যের কারণে উচ্চ স্কোর পেয়েছে।
জয়পুরকে কেবল একটি পর্যটন কেন্দ্র বলা এর গুরুত্বকে কম করে দেওয়া হবে। এই শহর রাজা-মহারাজাদের ঐতিহ্য, রাজকীয় মহল, প্রাচীন দুর্গ এবং লোকসংস্কৃতির জীবন্ত উদাহরণ। এখানকার কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য:
- আমের ফোর্ট: রাজপুতানা শৈলীর সুন্দর দুর্গ যা আরাবল্লী পাহাড়ে অবস্থিত।
- হাওয়া মহল: গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে তৈরি, ৯৫৩টি জানালাযুক্ত এই মহল জয়পুরের পরিচয়।
- সিটি প্যালেস: একটি সুন্দর প্রাসাদ যা আজও রাজপরিবারের বাসস্থান।
- জল মহল এবং নাহারগড় ফোর্ট: জলাশয়ের মাঝে অবস্থিত এই মহল এবং পাহাড়ের উপরে তৈরি দুর্গ রোমাঞ্চকর দৃশ্য প্রদান করে।
'পিঙ্ক সিটি'-র ঐতিহাসিক তাৎপর্য
জয়পুরকে 'পিঙ্ক সিটি' কেন বলা হয়, এর ইতিহাসও খুব আকর্ষণীয়। ১৮৭৬ সালে মহারাজা সওয়াই রাম সিং দ্বিতীয় ইংল্যান্ডের প্রিন্স অফ ওয়েলস (পরে কিং এডওয়ার্ড VII)-এর স্বাগত জানানোর জন্য পুরো শহরকে গোলাপি রঙে রাঙিয়ে দিয়েছিলেন। তখন থেকেই এই গোলাপি রং এই শহরের পরিচয় হয়ে গেছে। জয়পুরের বাজার দেশ-বিদেশের পর্যটকদের নিজের দিকে আকৃষ্ট করে। এখানকার বিশেষত্ব:
- জৌहरी বাজার: ঐতিহ্যবাহী গহনা এবং রুপোর জিনিসের জন্য বিখ্যাত।
- বাপু বাজার এবং ত্রিপোলিয়া বাজার: ব্লক প্রিন্টেড কাপড়, bandhej শাড়ি, জুতো এবং রাজস্থানী হস্তশিল্পের ভাণ্ডার।
- নীলি পটারি: মাটি ও কাঁচ দিয়ে তৈরি এই শিল্প জয়পুরের বিশেষ পরিচয়।
বিশেষত্বে ভরা জয়পুরের স্বাদ
খাবার প্রেমীদের জন্য জয়পুর কোনো স্বর্গ থেকে কম নয়:
- ডাল বাটি চুরমা – ঐতিহ্যবাহী রাজস্থানী থালির প্রধান আকর্ষণ।
- ঘেवर এবং কচুরি – মিষ্টি এবং মশলার দারুণ সংমিশ্রণ।
- মির্চি বড়া, পেঁয়াজের কচুরি এবং লस्सी – স্থানীয় স্ট্রিট ফুডের আনন্দ।
কীভাবে পৌঁছাবেন জয়পুরে?
জয়পুর ভারতের প্রধান শহরগুলোর সঙ্গে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে ভালোভাবে যুক্ত:
- দিল্লি থেকে দূরত্ব: প্রায় ২৮০ কিমি
- আকাশ পথ: জয়পুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে দেশ ও বিদেশের অনেক শহরে সরাসরি বিমান উপলব্ধ রয়েছে।
- রেলপথ: জয়পুর জংশন প্রধান রেলওয়ে স্টেশনগুলোর মধ্যে একটি।
- সড়ক পথ: ন্যাশনাল হাইওয়ে দ্বারা জয়পুর দেশের অনেক অংশের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপন করে।
এই র্যাঙ্কিং আরও একবার প্রমাণ করল যে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐশ্বর্য, ঐতিহ্য এবং আধুনিক পর্যটনের অনন্য মিশ্রণ বিশ্ব মানচিত্রে শক্তিশালী উপস্থিতি दर्ज करा रहा है। এটি কেবল পর্যটনকে উৎসাহিত করবে না, স্থানীয় কারিগর, হোটেল শিল্প এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোকেও নতুন জীবন দেবে।