নিম্নরুচির আমার অ্যাটেনশন পাওয়ার যোগ্য নন মহুয়া নিয়ে ফের কল্যাণের বিস্ফোরণ!

নিম্নরুচির আমার অ্যাটেনশন পাওয়ার যোগ্য নন মহুয়া নিয়ে ফের কল্যাণের বিস্ফোরণ!

মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে ফের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা। শ্রীরামপুরের সাংসদ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, কৃষ্ণনগরের সাংসদ এখন আর তাঁর বলার মতো বিষয় নন।মহুয়ার প্রতি ক্ষোভ এখনও অব্যাহত কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মহুয়ার জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তিনি এখন অনুতপ্ত, কিন্তু মহুয়ার প্রতি তাঁর ক্ষোভের বিন্দুমাত্র কমতি নেই।

‘সময় ও এনার্জির অপচয়’ — সরাসরি আক্রমণ

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কল্যাণ বলেন, মহুয়া মৈত্র সম্পর্কে কথা বলাই সময় ও এনার্জির অপচয়। তাঁর কথায়, “ওঁর বিষয়ে বলার কোনও অর্থ নেই, কারণ উনি বড্ড নিম্নমানের।” এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়েছে।মাথা গরম থেকে অনুশোচনা — দিদির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনাকল্যাণ স্বীকার করেছেন, মহুয়ার আচরণ তাঁকে উত্তেজিত করেছিল এবং সেই রাগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভুলভাল কথা বলে ফেলেছিলেন। এখন তাঁর খারাপ লাগছে এবং এজন্য দিদির কাছে তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন।

জুনিয়র আইনজীবীর মেসেজে বদলে গেল মনোভাব

কল্যাণ জানান, এক জুনিয়র আইনজীবীর পাঠানো একটি টেক্সট মেসেজ তাঁর চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন এনেছে। এই মেসেজ থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আর মহুয়ার প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করবেন না।

‘অ্যাটেনশন দেওয়াই ভুল’ — ক্ষোভে ভরা স্বীকারোক্তি

তৃণমূল সাংসদের দাবি, মহুয়া তাঁর অ্যাটেনশনের যোগ্য নন এবং অতীতে যে তিনি তাঁকে গুরুত্ব দিয়েছেন, সেটাই ছিল তাঁর ভুল। এই মন্তব্যে দলীয় অন্দরে গুঞ্জন আরও বেড়েছে।মমতার সঙ্গে আশীর্বাদ বিনিময় রাখির দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে কল্যাণ বলেন, “দিদিকে প্রণাম জানিয়েছি, দিদি তিনবার আশীর্বাদ করেছেন।” যদিও দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্বের জল্পনা এখনও মিলিয়ে যায়নি।

ভার্চুয়াল বৈঠকের পর ইস্তফা

লোকসভায় তৃণমূল সাংসদদের সমন্বয়ের অভাব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশের পর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে দায়িত্ব যায়। এর পরেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্য সচেতকের পদ থেকে ইস্তফা দেন।মহুয়ার বিরুদ্ধে এক্স পোস্টে ক্ষোভ ঝাড়লেন পদত্যাগের পরপরই মহুয়ার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে এক্স হ্যান্ডলে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন কল্যাণ। সেখানে তিনি মহুয়ার আচরণকে ‘অসাংসদীয়’ ও ‘অশোভন’ বলে আখ্যা দেন।

মহুয়ার ‘শূকরশাবক’ মন্তব্যে পাল্টা আক্রমণ

সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডে পডকাস্টে কল্যাণের নাম না নিয়ে মহুয়া একটি পরিচিত উপমা ব্যবহার করেন, যা শূকরশাবকের সঙ্গে তুলনা করে। এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে কল্যাণ প্রকাশ্যে তাঁর প্রতিক্রিয়া দেন।‘নারীবিদ্বেষী’ মন্তব্য নিয়েও বিতর্কমহুয়ার মন্তব্যে শুধু কল্যাণ নন, তৃণমূলের একাংশও অস্বস্তি বোধ করেছে। তিনি বলেছেন, নারীবিদ্বেষী ও হতাশাগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতা সব দলেই আছেন এবং সংসদেও তার প্রতিফলন দেখা যায়।রাজনৈতিক অঙ্গনে তপ্ত পরিস্থিতিতৃণমূলের দুই সাংসদের এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দলের ভাবমূর্তিকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মন্তব্য পাল্টা-মন্তব্যে আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে।

দল কি পদক্ষেপ নেবে?

দলের ভেতরে এখন প্রশ্ন, এই প্রকাশ্য বাকযুদ্ধের পর নেতৃত্ব কি কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে, নাকি বিষয়টিকে আপাতত ঠান্ডা করার চেষ্টা করবে। কল্যাণ-মহুয়া সংঘাত তৃণমূলের জন্য বড় মাথাব্যথায় পরিণত হচ্ছে।

Leave a comment