সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেলেন কঙ্গনা রানাউত, কৃষক আন্দোলন সংক্রান্ত টুইটের মামলা নিম্ন আদালতে

সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেলেন কঙ্গনা রানাউত, কৃষক আন্দোলন সংক্রান্ত টুইটের মামলা নিম্ন আদালতে

কঙ্গনা রানাউত কৃষক আন্দোলনের সময় করা টুইটের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেছিলেন। আদালত শুনানি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আবেদনটি প্রত্যাহার করার জন্য বলেছে। এখন মামলাটি নিম্ন আদালতে অগ্রসর হবে।

কঙ্গনা রানাউত সংবাদ: বলিউড অভিনেত্রী এবং বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউত সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি বড় ধাক্কা খেয়েছেন। কৃষক আন্দোলনের সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিতর্কিত পোস্ট এবং টুইটের কারণে পাঞ্জাবে দায়ের করা মানহানির মামলাটি বাতিল করার জন্য তিনি একটি আবেদন করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদনে শুনানি করতে অস্বীকার করেছে এবং কঙ্গনাকে আবেদনটি প্রত্যাহার করার পরামর্শ দিয়েছে। এরপরে, কঙ্গনা আদালতের পরামর্শ মেনে আবেদনটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

ঘটনাটি কী?

২০২০-২১ সালের কৃষক আন্দোলনের সময়, কঙ্গনা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি পোস্ট করেছিলেন, যেখানে তিনি বয়স্ক মহিলা প্রতিবাদকারী মহিন্দর कौरকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর টুইট এবং রিটুইটে দাবি করা হয়েছিল যে মহিলা প্রতিবাদকারীদের টাকা দিয়ে আনা হয়েছিল এবং এই মহিলা শাহীন বাগের বিলকিস দাদীর সাথে যুক্ত। এই মন্তব্যের উপর ভিত্তি করে, মহিন্দর कौर ২০২১ সালে পাঞ্জাবের বাথিন্ডায় মানহানির মামলা দায়ের করেন।

কঙ্গনা সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেছিলেন, যেখানে তিনি এই মামলায় স্বস্তি চেয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল যে এই টুইটটি তাঁর সদিচ্ছার অধীনে করা হয়েছিল এবং তাঁর কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।

সুপ্রিম কোর্ট কী বলেছে?

বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং সন্দীপ মেহতার একটি বেঞ্চ কঙ্গনার আবেদনটি বিবেচনা করতে অস্বীকার করেছে। আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এটি কেবল একটি সাধারণ রিটুইট ছিল না। কঙ্গনা তাঁর রিটুইটের সাথে মন্তব্যও যোগ করেছিলেন, যা বিষয়টি আরও গুরুতর করে তুলেছিল। বেঞ্চ বলেছে, "আপনি এতে মশলা যোগ করেছেন।" আদালত কঙ্গনাকে এও বলেছে যে তাঁর আত্মপক্ষ সমর্থন নিম্ন আদালতে করা যেতে পারে এবং সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবে না কারণ এটি বিচার প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে।

সুপ্রিম কোর্ট আবেদনটি প্রত্যাহার করার পরামর্শ দিয়েছে, যা কঙ্গনা মেনে নিয়েছেন। আদালত সতর্ক করেছিল যে যদি শুনানি চলতে থাকে তবে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিকূল মন্তব্য আসতে পারে।

আইনি প্রক্রিয়া

ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তদন্তের পর দেখতে পায় যে কঙ্গনার রিটুইট এবং মন্তব্য আইপিসি-র ধারা ৪৯৯ (মানহানি) এর অধীনে অপরাধ গঠন করে। এরপরে কঙ্গনা পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেন, যা খারিজ করে দেওয়া হয়। আদালত এও বলেছে যে ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যতিক্রমগুলি বিবেচনা না করা আদেশকে অবৈধ করে না।

কঙ্গনা যুক্তি দিয়েছিলেন যে তাঁর উদ্দেশ্য সদিচ্ছার ছিল এবং তাঁর কোনও দোষী মন (mens rea) ছিল না, যার ফলে তাঁর পোস্টগুলি ধারা ৪৯৯ এর ব্যতিক্রমের আওতায় আসে। হাইকোর্ট এটি গ্রহণ করেনি।

টুইটারের ভূমিকা

সুপ্রিম কোর্ট কঙ্গনার রিটুইট নিশ্চিত করার জন্য টুইটার কমিউনিকেশনস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড (TCIPL) থেকে একটি প্রতিবেদন চেয়েছিল। প্রতিবেদনটি পাওয়া যায়নি, তবে আদালত বলেছে যে TCIPL www.twitter.com এর মালিক বা নিয়ন্ত্রক নয় এবং এটি কেবল বিপণন ও গবেষণায় জড়িত। তাই প্রতিবেদন না আসার কারণে ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশকে অবৈধ বলে গণ্য করা যায় না।

Leave a comment