কর্ণাটকে কংগ্রেসের সঙ্কট গভীর। বিধায়ক ইকবাল হোসেনের দাবি, ১০০ জন বিধায়ক ডি কে শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চান। সুরজেওয়ালা নেতৃত্ব পরিবর্তনের কথা খারিজ করেছেন।
Karnataka Politics: কর্ণাটক কংগ্রেসে নেতৃত্ব পরিবর্তন নিয়ে টানাপোড়েন জোরদার হয়েছে। উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের ঘনিষ্ঠ বিধায়ক ইকবাল হোসেন দাবি করেছেন যে, প্রায় ১০০ জন বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তনের পক্ষে। তিনি বলেছেন, যদি নেতৃত্ব পরিবর্তন না হয়, তাহলে ২০২৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে ক্ষমতা হারাতে হতে পারে। হাইকমান্ড থেকে রাজ্য নেতৃত্ব পর্যন্ত তোলপাড় শুরু হয়েছে। রণদীপ সুরজেওয়ালা কর্ণাটকে এসে বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করছেন।
নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবি প্রকাশ্যে
কর্ণাটক কংগ্রেসের অভ্যন্তরে নীরব বিতর্ক এবার প্রকাশ্যে আসছে। উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বিধায়ক ইকবাল হোসেন সরাসরি বলেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর পদে পরিবর্তন হওয়া উচিত। তিনি দাবি করেছেন যে, ১০০ জনের বেশি বিধায়ক এই পরিবর্তনের পক্ষে। তাঁর মতে, ডি কে শিবকুমার দলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন এবং তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পাওয়া উচিত।
'শুধু আমার নয়, ১০০ বিধায়কের আওয়াজ'
ইকবাল হোসেন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, "এটা শুধু আমার কথা নয়। ১০০ জনের বেশি বিধায়ক পরিবর্তন চান। তাঁরা এই মুহূর্তের অপেক্ষা করছেন। তাঁরা ভালো শাসনের আশা করছেন এবং মনে করেন ডি কে শিবকুমারের নেতৃত্ব পাওয়া উচিত।" তিনি আরও বলেন যে, এই বিষয়টি তিনি রণদীপ সুরজেওয়ালার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তুলবেন।
২০২৮-এর নির্বাচন সংকটে
হোসেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি নেতৃত্বে পরিবর্তন না করা হয়, তাহলে দলকে ২০২৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে পারে। তাঁর মতে, দলের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত এখনই নেওয়া জরুরি। তিনি বলেন, "এখন পরিবর্তন না হলে আমরা ২০২৮ সালে ক্ষমতায় থাকতে পারব না।"
হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত
যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, দলীয় হাইকমান্ড ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছে যে মুখ্যমন্ত্রী পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত তাঁরাই নেবেন, তখন তিনি উত্তর দেন, "আমরা কংগ্রেসের অনুশাসন মেনে চলি, কিন্তু আমাদের সত্যি কথা বলতে হবে। যদি কিছু ভুল হয় বা সংস্কারের প্রয়োজন হয়, তবে তা সামনে আনা আমাদের কর্তব্য।"
রণদীপ সুরজেওয়ালার কর্ণাটক সফর
কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা এবং কর্ণাটক বিষয়ক प्रभारी সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা ইদানিং রাজ্য সফরে রয়েছেন। যদিও তিনি তাঁর সফরকে সাংগঠনিক বলে উল্লেখ করেছেন, তবে যেভাবে বিধায়কেরা তাঁর কাছে নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছেন, তাতে রাজনৈতিক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
'নেতৃত্ব পরিবর্তনের কথা নিছক কল্পনা'
সুরজেওয়ালা মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় নেতৃত্ব পরিবর্তনের জল্পনাকে "নিছক কল্পনা" বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন যে, তাঁর সফর দলের শক্তি বৃদ্ধি, উন্নয়নমূলক কাজের পর্যালোচনা এবং বিধায়কদের কাছ থেকে ফিল্ড রিপোর্ট জানার জন্য। তা সত্ত্বেও দলের অভ্যন্তরের অভ্যন্তরীণ আলোড়নগুলি উপেক্ষা করা যায় না।
বিধায়কদের সঙ্গে মুখোমুখি কথা হচ্ছে
সুরজেওয়ালার এই তিন দিনের সফরে তিনি বিভিন্ন জেলার প্রায় ৮০ জন বিধায়কের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করছেন। প্রথম দিনে তিনি বেঙ্গালুরু শহর, বেঙ্গালুরু গ্রামীণ, মহীশূর, চামরাজনগর, কোলার এবং দক্ষিণ কন্নড় জেলার বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সূত্রানুসারে, এই বৈঠকগুলিতে অনেক বিধায়ক রাজ্য সরকারের কাজকর্ম এবং নেতৃত্ব নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
ডি কে শিবকুমার গত কয়েক বছর ধরে কর্ণাটক কংগ্রেসের অন্যতম শক্তিশালী নেতা হিসেবে গণ্য হন। দলের প্রদেশ ইউনিটকে শক্তিশালী করতে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দলের জয়েও তাঁর বড় অবদান ছিল বলে মনে করা হয়। তিনি কংগ্রেসের অভ্যন্তরে সাংগঠনিক বিষয়গুলিতে ক্রমাগত সক্রিয় ছিলেন এবং কর্মীদের মধ্যে শক্তিশালী প্রভাব বজায় রেখেছেন।