ওয়েস্ট ইন্ডিজের শক্তিশালী অলরাউন্ডার কাইরন পোলার্ড টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একটি বড় কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। পোলার্ড এখন এই ফরম্যাটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন।
কাইরন পোলার্ড রেকর্ড: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বংসী অলরাউন্ডার কাইরন পোলার্ড আবারও তাঁর বিস্ফোরক খেলা দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন। পোলার্ড মেজর লীগ ক্রিকেট (এমএলসি) ২০২৩-এ খেলার সময় এমন একটি মাইলফলক অর্জন করেছেন যা দেখে ক্রিকেট ভক্তরা হতবাক। টেক্সাস সুপার কিংসের বিরুদ্ধে খেলা ম্যাচে দুর্দান্ত ইনিংস খেলে তিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান করার ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলসকে পেছনে ফেলেছেন এবং এখন এই ফরম্যাটে ক্রিস গেইলের পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন।
পোলার্ড এই ম্যাচে ৩৯ বলে ৭০ রানের একটি বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন, যেখানে তিনি ৫টি চার ও ৫টি ছক্কা হাঁকান। তাঁর এই দুর্দান্ত ইনিংস শুধু মি নিউইয়র্ক দলকে শক্তিশালী করেনি, বরং তাঁর ব্যক্তিগত রেকর্ডেও ঐতিহাসিক সংযোজন করেছে। পোলার্ডের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন ৭০২ ম্যাচে ১৩,৭৩৮ রান রয়েছে, যা তাঁকে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে রান করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ক্রিস গেইলের পরেই স্থান দিয়েছে।
পোলার্ডের পরে আর কার কী অবস্থা?
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রান করা শীর্ষ খেলোয়াড়দের কথা বললে, পোলার্ড এখন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। প্রথম স্থানে এখনও ইউনিভার্স বস নামে পরিচিত ক্রিস গেইল রয়েছেন, যিনি ৪৬৩ ম্যাচে ১৪,৫৬২ রান করেছেন। অন্যদিকে, পোলার্ডের ঠিক পরেই রয়েছেন ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলস, যিনি ৫০১ ম্যাচে ১৩,৭৩৫ রান করেছেন। এরপর পাকিস্তানের শোয়েব মালিক (১৩,৫৭১ রান) এবং ভারতের বিরাট কোহলি (১৩,৫৪3 রান) যথাক্রমে চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছেন।
- ক্রিস গেইল (৪৬৩ ম্যাচ) - ১৪,৫৬২ রান
- কাইরন পোলার্ড (৭০২ ম্যাচ) - ১৩,৭৩৮ রান
- অ্যালেক্স হেলস (৫০১ ম্যাচ) - ১৩,৭৩৫ রান
- শোয়েব মালিক (৫৫৭ ম্যাচ) - ১৩,৫৭১ রান
- বিরাট কোহলি (৪১৪ ম্যাচ) - ১৩,৫৪3 রান
পোলার্ডের ধারাবাহিকতা এবং বিস্ফোরক শৈলী
৭০২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা পোলার্ডের গড় ৩১.৪৩, যা তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ারে ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে। এই সময়ে তিনি একটি সেঞ্চুরি এবং ৬২টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন, যা তাঁর ধারাবাহিকতার প্রমাণ। বিশেষ বিষয় হল, পোলার্ড শুধু একজন ব্যাটসম্যানই নন, একজন দুর্দান্ত ফিনিশারও ছিলেন, যিনি অনেক ম্যাচে শেষ ওভারে দলকে জিতিয়েছেন।
এমএলসি ২০২৩-এও পোলার্ডের ব্যাট বেশ ভালোভাবেই চলছে। বর্তমান মরশুমে তিনি এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ৪০.২০ গড়ে এবং ১৮৬.১১ স্ট্রাইক রেটে ২০১ রান করেছেন। তাঁর খেলায় সেই পুরনো আগ্রাসন দেখা যাচ্ছে, যা তাঁকে বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির সবচেয়ে পছন্দের খেলোয়াড় করে তুলেছে।
পোলার্ডের কেরিয়ার কেন বিশেষ?
কাইরন পোলার্ড যেভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিজের ছাপ রেখেছেন, তা খুবই বিশেষ। তিনি বিশ্বের প্রায় প্রতিটি বড় লীগে অংশ নিয়েছেন — আইপিএল, সিপিএল, বিবিএল, পিএসএল, বিপিএল এবং এখন এমএলসি-তেও। প্রতিটি স্থানে তিনি তাঁর বড় হিট ও ম্যাচ জেতানো ইনিংস দিয়ে মানুষের মন জয় করেছেন।
পোলার্ডের কেরিয়ার এই কথার উদাহরণ যে কীভাবে একজন অলরাউন্ডার তাঁর যোগ্যতা ও ফিটনেস দিয়ে ৭০০-এর বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে সফল হতে পারে। তাঁর শক্তিশালী ব্যাটিং এবং উপযোগী বোলিং তাঁকে ক্রিকেট জগতে সুপারস্টার করে তুলেছে।
এখন যখন পোলার্ড টি-টোয়েন্টিতে ১৩,৭৩৮ রানে পৌঁছেছেন, তখন ক্রিকেট প্রেমীদের মনে প্রশ্ন উঠছে — পোলার্ড কি ক্রিস গেইলের ১৪,৫৬২ রানের রেকর্ড ভাঙতে পারবেন? পোলার্ডের বর্তমান ফিটনেস ও ফর্ম দেখে এটা অসম্ভব বলে মনে হয় না। যদিও, এর জন্য তাঁকে আরও কিছু মরশুম একইভাবে খেলে যেতে হবে।