মহারাষ্ট্রের মহিলা কল্যাণ প্রকল্প 'লাডকী বহেন'-এ ১৪,২৯৮ জন পুরুষ প্রতারণার মাধ্যমে সুবিধা নিয়েছে। তারা ২1.৪৪ কোটি টাকা পেয়েছে। সরকার পুনরুদ্ধার এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে। সুপ্রিয়া সুলে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
Maharashtra Politics: মহারাষ্ট্র সরকারের ‘মুখ্যমন্ত্রী মাজি লাডকী বহেন যোজনা’ আর্থিকভাবে দুর্বল মহিলাদের জন্য শুরু করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল ২১ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মহিলাদের প্রতি মাসে 1,500 টাকা করে সাহায্য করা। কিন্তু এখন এই প্রকল্পে বড়সড় কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এসেছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ১৪,২৯৮ জন পুরুষ এই প্রকল্পের অধীনে সুবিধা নিয়েছে, যার ফলে রাজ্যের ২1.৪৪ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
সুপ্রিয়া সুলের গুরুতর অভিযোগ
এনসিপি (শরদচন্দ্র পাওয়ার গোষ্ঠী)-র ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট সুপ্রিয়া সুলে দাবি করেছেন যে এই পুরুষরা একটানা ১০ মাস ধরে প্রকল্পের টাকা পেয়ে গেছে। তিনি জানান যে এই স্কিম মহিলাদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং সামাজিক সুরক্ষার জন্য শুরু করা হয়েছিল, কিন্তু সিস্টেমের ত্রুটির কারণে এই জালিয়াতি হয়েছে। সুপ্রিয়া সুলে এই পুরো ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
অজিত পাওয়ারের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি
রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার স্বীকার করেছেন যে যদি কোনও পুরুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে থাকে, তবে তার থেকে পুরো টাকা ফেরত নেওয়া হবে। তিনি বলেন যে এই প্রকল্প শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য এবং পুরুষদের সুবিধা পাওয়ার কোনও যুক্তি নেই। অজিত পাওয়ার স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে যদি এই ধরনের সুবিধাভোগীরা টাকা ফেরত দিতে সহযোগিতা না করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারের সুবিধাভোগীদের তদন্ত শুরু
উপমুখ্যমন্ত্রীর মতে, সুবিধাভোগীদের তদন্তের সময় এমন কিছু নাম উঠে এসেছে, যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি কিছু মহিলাও ছিলেন, যাদের চাকরি থাকা সত্ত্বেও প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সরকার এখন এই সমস্ত নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।
'মাজি লাডকী বহেন' প্রকল্প কী
এই প্রকল্পটি রাজ্য সরকার গত বছর শুরু করেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল সেই মহিলাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া, যাদের বার্ষিক পারিবারিক আয় ২.5 লক্ষ টাকার কম। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তাদের প্রতি মাসে 1,500 টাকা দেওয়া হবে। এই অর্থ সরাসরি সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।
কীভাবে জালিয়াতি হয়েছে
এই কেলেঙ্কারিতে এখনও পর্যন্ত এটা স্পষ্ট নয় যে পুরুষদের নাম কীভাবে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে যে আবেদন প্রক্রিয়ায় কোনও ধরনের প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা নথিপত্রের ভুল যাচাইয়ের কারণে এমনটা হয়েছে। এটাও সম্ভব যে কিছু সুবিধাভোগী ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দিয়ে প্রকল্পের টাকা হাতিয়েছে।
রাজ্য কোষাগারের বড় ক্ষতি
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই জাল সুবিধাভোগীদের এখন পর্যন্ত মোট ২1.৪৪ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এই অর্থ ১০ মাসে দেওয়া হয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে রাজ্যের কোষাগারের ওপর।
এই পুরো ঘটনায় এখন রাজনীতিও শুরু হয়ে গেছে। এনসিপি (শরদ গোষ্ঠী) সরকারের পরিকল্পনা এবং তার নজরদারি ব্যবস্থার ওপর প্রশ্ন তুলেছে। সুপ্রিয়া সুলে বলেছেন যে এত বিপুল সংখ্যক পুরুষদের টাকা পাওয়া প্রশাসনের বড় ব্যর্থতা এবং এর গুরুতর তদন্ত হওয়া উচিত।