হিমোগ্লোবিন কমে গেলে শরীরে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়, যার ফলে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হতে পারে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো আয়রন, ভিটামিন B12 এবং ফোলেটের অভাব, রক্তপাত, দীর্ঘস্থায়ী রোগ, অস্থি মজ্জার ব্যাধি এবং বংশগত রোগ। নিয়মিত পরীক্ষা এবং সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
কম হিমোগ্লোবিনের লক্ষণ: হিমোগ্লোবিন হলো লোহিত রক্তকণিকার একটি প্রোটিন, যা ফুসফুস থেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন বহন করে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এর স্বাভাবিক মাত্রা 13.8–17.2 গ্রাম/ডিএল, মহিলাদের ক্ষেত্রে 12.1–15.1 গ্রাম/ডিএল এবং শিশুদের ক্ষেত্রে 11–16 গ্রাম/ডিএল হওয়া উচিত। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে শরীরে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট এবং গুরুতর ক্ষেত্রে হার্ট ফেলিওরের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর প্রধান কারণগুলির মধ্যে রয়েছে পুষ্টির অভাব, দীর্ঘস্থায়ী রোগ, রক্তপাত, অস্থি মজ্জার ব্যাধি, বংশগত রোগ এবং কিছু ঔষধ। এটি প্রতিরোধ করার জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাদ্য, ভিটামিন B12 এবং ফোলেট গ্রহণ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি।
হিমোগ্লোবিন কী এবং এর অভাবের প্রভাব
হিমোগ্লোবিন হলো লোহিত রক্তকণিকার একটি প্রোটিন, যা ফুসফুস থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে অক্সিজেন বহন করার কাজ করে। যখন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়, তখন শরীরে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। এর ফলে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট এবং দুর্বলতা দেখা যায়।
পুরুষদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা 13.8 থেকে 17.2 গ্রাম/ডিএল, মহিলাদের ক্ষেত্রে 12.1 থেকে 15.1 গ্রাম/ডিএল এবং শিশুদের ক্ষেত্রে 11 থেকে 16 গ্রাম/ডিএল। যখন এই মাত্রা 8 থেকে 5 গ্রাম/ডিএল-এ নেমে আসে, তখন গুরুতর লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে।
কম হিমোগ্লোবিনের লক্ষণ
- অবিরাম ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভব করা।
- শ্বাসকষ্ট এবং সামান্য কাজেই হাঁপিয়ে ওঠা।
- মাথা ঘোরা বা মাথা ঘোরার অনুভূতি।
- ত্বকের ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া বা বিবর্ণতা।
- হৃৎস্পন্দন দ্রুত হওয়া বা অনিয়মিত হওয়া।
- গুরুতর ক্ষেত্রে হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি।
AIIMS-এর মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডঃ नीरज निश्चल-এর মতে, হিমোগ্লোবিন 8 গ্রাম/ডিএল-এর নিচে নেমে গেলে শরীরে দুর্বলতা এবং শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। যদি মাত্রা 5 গ্রাম/ডিএল-এর নিচে নেমে যায়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসার সাহায্য নেওয়া জরুরি।
হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার কারণ
- পুষ্টির অভাব - আয়রন, ভিটামিন B12 এবং ফোলেটের অভাব সবচেয়ে সাধারণ কারণ। হিমোগ্লোবিন তৈরির জন্য আয়রন অপরিহার্য, অন্যদিকে B12 এবং ফোলেট লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
- দীর্ঘস্থায়ী রোগ - কিডনির রোগ, ক্যান্সার, আর্থ্রাইটিস বা দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ শরীরে লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনকে প্রভাবিত করতে পারে।
- রক্তপাত - সার্জারি, আঘাত বা মহিলাদের অতিরিক্ত মাসিকের কারণে রক্তক্ষরণে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা দ্রুত কমে যেতে পারে।
- অস্থি মজ্জার ব্যাধি - লিউকেমিয়া বা অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়ার মতো রোগে অস্থি মজ্জা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন করতে পারে না।
- বংশগত রোগ - সিকেল সেল অ্যানিমিয়া এবং থ্যালাসেমিয়ার মতো বংশগত রোগ অস্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের কারণ হয়।
- ঔষধের প্রভাব - কেমোথেরাপির মতো ওষুধ লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন দমন করতে পারে।
হিমোগ্লোবিন ঘাটতি প্রতিরোধ
- আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খান - সবুজ শাকসবজি, মাংস, ডাল এবং ফোর্টিফাইড শস্য।
- ভিটামিন সি গ্রহণ - কমলালেবু, লেবু এবং টমেটোর সাথে খেলে আয়রনের শোষণ উন্নত হয়।
- নিয়মিত পরীক্ষা করান - পরিবারে কারও অ্যানিমিয়া থাকলে পর্যায়ক্রমে রক্ত পরীক্ষা করানো জরুরি।
- ভিটামিন B12 এবং ফোলেট - খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে অন্তর্ভুক্ত করলে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
হিমোগ্লোবিন হলো লোহিত রক্তকণিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা শরীরে অক্সিজেন বহন করে। এর অভাবে শরীরে ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট এবং গুরুতর স্বাস্থ্য সংকট দেখা দিতে পারে। পুষ্টিকর খাবার এবং সময়মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ভারসাম্যপূর্ণ রাখা যেতে পারে। শরীরে লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া নিরাপদ।