রাজ্যসভায় মল্লিকার্জুন খার্গে অধিবেশন পরিচালনা নিয়ে উপাধ্যক্ষের কাছে প্রশ্ন তোলেন যে, তিনি (উপাধ্যক্ষ) নাকি অমিত শাহ অধিবেশন চালাচ্ছেন। সিআইএসএফ-এর মোতায়েন নিয়ে বিতর্ক হয়, বিরোধী দলগুলি জনস্বার্থের বিষয় উত্থাপন করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে, সরকার সেই অভিযোগগুলি অস্বীকার করে।
Mallikarjun Kharge: সংসদের বাদল অধিবেশনে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজ্যসভায় বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জুন খার্গে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি অধিবেশন পরিচালনা নিয়ে এমন একটি প্রশ্ন তোলেন যা বিতর্ককে আরও বাড়িয়ে তোলে — 'অধিবেশন কে চালাচ্ছেন? উপাধ্যক্ষ হরিবংশ নারায়ণ সিং নাকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ?' এই কটাক্ষ অধিবেশনের কাজকর্মকে ফের উত্তপ্ত করে তোলে।
সিআইএসএফ-এর মোতায়েন নিয়ে খাড়গের তীব্র প্রতিক্রিয়া
রাজ্যসভায় এই অধিবেশনে বিরোধী পক্ষ ‘অপারেশন সিন্দুর’ এবং বিহারে বিশেষ गहन पुनरीक्षण (SIR) এর মতো বিষয়গুলি উত্থাপন করে। সেই বিতর্কের মাঝে সিআইএসএফ জওয়ানদের সংসদে মোতায়েন করা নিয়ে খার্গে তীব্র আপত্তি জানান। তিনি বলেন, সংসদে সিআইএসএফ জওয়ানদের উপস্থিতি বিরোধীদের জন্য অস্বস্তিকর: 'আমাদের সংসদীয় কর্মীরা সক্ষম। তাঁরা নিজেরাই অধিবেশন চালাতে পারেন। কিন্তু আপনারা মিলিটারি ও পুলিশ নিয়ে আসছেন। এমন লাগছে যেন আপনারা ক্ষমতা দখল করতে চাইছেন।' এই মন্তব্যে অধিবেশনের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
চেয়ারম্যান-বিরোধী বক্তব্য ও শাসক দলের তীব্র প্রতিক্রিয়া
খাড়গের এই মন্তব্যের পর শাসক দলের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া আসে। তারা সরাসরি চেয়ারম্যানের ওপর আক্রমণ করে প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচিত সাংসদ কি তিনি ছিলেন? আপনারা কেন সরকারের হস্তক্ষেপ করছেন? এই বিতর্কের উত্তরে সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু স্পষ্ট করে জানান যে রাজ্যসভায় মোতায়েন করা নিরাপত্তারক্ষীরা শুধুমাত্র মার্শাল ছিলেন, সেখানে সিআইএসএফ বা অন্য কোনো সামরিক বাহিনী ছিল না।
তিনি বলেন: 'বিরোধী দলের নেতা সংসদে মিলিটারি ও পুলিশ মোতায়েন করার কথা বলেছেন, কিন্তু সেটি ভুল। অধিবেশনে শুধুমাত্র মার্শালরাই আসেন এবং পরিস্থিতির ওপর নজর রাখেন।' রিজিজু বলেন, এটা জানানো জরুরি যে সংসদীয় কাজকর্ম সুশৃঙ্খলভাবে চলছে এবং অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।
বিরোধী সাংসদদের কি বিষয় উত্থাপন করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে?
খার্গে অভিযোগ করেন যে বিরোধী সাংসদদের জনস্বার্থের বিষয়গুলি উত্থাপন করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন যে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যাতে সরকার বিরোধী কণ্ঠস্বরকে দমন করে বিল পাশ করানো যায়। এই অভিযোগে অধিবেশনের বিতর্ক আরও তীব্র হয়।
তিনি বলেন: 'এখানে জনস্বার্থের বিষয়গুলো উত্থাপন করতে দেওয়া হচ্ছে না। যদি সংসদে আলোচনা না হয়, তাহলে গণতন্ত্র কতটা জীবিত?'
উপাধ্যক্ষের জবাব: অভিযোগ ভিত্তিহীন
খার্গের তোলা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপাধ্যক্ষ হরিবংশ নারায়ণ সিং কঠোরভাবে সাফাই দেন। তিনি বলেন, অধিবেশনের কাজকর্ম সম্পূর্ণভাবে নিয়ম অনুযায়ী চলছে এবং সংসদ স্বাধীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন যে অভিযোগগুলো ভুল এবং অধিবেশন পরিচালনায় কোনো বাইরের হস্তক্ষেপ তিনি মেনে নেবেন না।
শীতকালীন অধিবেশনের আগে বাড়ল রাজনৈতিক উত্তাপ
এই ধরনের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে দিয়েছে, কারণ শীতকালীন অধিবেশনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধীরা এই অভিযোগগুলি নিয়ে সংসদে তাদের ভূমিকা আরও বেশি করে তুলে ধরবে, যেখানে সরকার তাদের কাজকর্ম স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে প্রস্তুত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংসদের স্বাধীনতা ও পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ, কিন্তু প্রকাশ্যে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের সংঘাত এই প্রশ্ন তোলে যে রাজনৈতিক আলোচনায় সাংবিধানিক मर्यादा বজায় থাকছে কি না।