পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে এসে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন। জলপাইগুড়িতে আয়োজিত এক জনসভায় তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ এনেছেন।
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে এসে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উপর কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন। জলপাইগুড়িতে আয়োজিত এক সভায় তিনি অসম থেকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে এনআরসি নোটিশ পাঠানো, অন্যান্য রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের মতো বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী সরকারের সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন যে এই পদক্ষেপ কেবল জনগণের অধিকারের উপর আক্রমণ নয়, বরং রাজ্যগুলির স্বায়ত্তশাসনকেও দুর্বল করে। পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার, অসম থেকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে এনআরসি নোটিশ পাঠানো এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের মতো বিষয়গুলিতে তিনি তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানান। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, দিল্লি নয়, বাংলাই বাংলাকে চালাবে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের বিষয়ে মমতার কড়া অবস্থান
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে দেশের বিভিন্ন অংশ যেমন উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, বিহার এবং মধ্যপ্রদেশে পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অন্যায় ও অত্যাচার বাড়ছে। তিনি অভিযোগ করেন যে বাংলাভাষী মানুষকে 'বাংলাদেশী' বলে নিশানা করা হচ্ছে এবং তাদের জোর করে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা পশ্চিমবঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের মানুষকে ভালোবাসা ও সম্মান দিই, কিন্তু আমরা আমাদের মানুষের উপর অত্যাচার সহ্য করব না। তিনি সতর্ক করে বলেন, দেখা যাক, কার কতটা সাহস আছে, কতটা অত্যাচার করতে পারে। বাংলা তার অধিকারের জন্য রুখে দাঁড়াবে।
এনআরসি নোটিশ এবং অসম থেকে হয়রানির বিষয়
সিএম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসম থেকে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের এনআরসি নোটিশ পাঠানোর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন যে এই পদক্ষেপ কেবল বিভেদ সৃষ্টিকারী নয়, বরং সমাজে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতা ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের মানুষ দেশের প্রতিটি প্রান্তে পরিশ্রম করছে। তাদের হয়রানি করা কেবল অমানবিক নয়, বরং সংবিধানের আত্মার পরিপন্থী।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে ভোটার তালিকা সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাড়াহুড়ো করে রাজ্যগুলির প্রক্রিয়া ব্যাহত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গতবার এই কাজে দুই বছর সময় লেগেছিল। এখন দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে এটি শেষ করার কথা বলা হচ্ছে। এটি কীভাবে সম্ভব? এটি তো রাজ্যগুলির প্রশাসনিক ক্ষমতার উপর প্রশ্ন তোলার শামিল।