মারুতি সুজুকির প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি ই-ভিটারা ২০২৫ সালে আত্মপ্রকাশ করবে

মারুতি সুজুকির প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি ই-ভিটারা ২০২৫ সালে আত্মপ্রকাশ করবে

মারুতি সুজুকি তাদের প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি ই-ভিটারা ২০২৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর লঞ্চ করতে চলেছে। এই SUV-টি ৫০০ কিমি পর্যন্ত রেঞ্জ, দুটি ব্যাটারি বিকল্প এবং LED লাইট, ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার ও অ্যাডভান্সড সেফটি টেকনোলজির মতো একাধিক প্রিমিয়াম ফিচার-সহ আসবে। এটির দাম ১৭-২৫ লক্ষ টাকার মধ্যে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

নয়াদিল্লি: মারুতি সুজুকি ২০২৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তাদের প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি ই-ভিটারা লঞ্চ করবে। এই প্রিমিয়াম SUV-তে ৫০০ কিমি-এর সম্ভাব্য রেঞ্জ, ৪৮.৮ kWh এবং ৬১.১ kWh ব্যাটারি বিকল্প, ১৮-ইঞ্চি হুইল, LED হেডলাইট, ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার এবং ১০.১-ইঞ্চি টাচস্ক্রিন ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম থাকবে। গাড়িটিতে ৭টি এয়ারব্যাগ, লেন কিপ অ্যাসিস্ট, অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল, ব্লাইন্ড স্পট মনিটর এবং ৩৬০-ডিগ্রি ক্যামেরার মতো আধুনিক সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য দেওয়া হবে। এটি ভারতে গুজরাট প্ল্যান্টে তৈরি করে জাপান ও ইউরোপ সহ অন্যান্য দেশেও রপ্তানি করা হবে। এটির প্রাথমিক এক্স-শোরুম দাম ১৭ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে টপ ভেরিয়েন্ট ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ডিজাইন এবং বৈশিষ্ট্য

ই-ভিটারায় প্রিমিয়াম লুক এবং আধুনিক প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। গাড়িটিতে LED হেডলাইট, ডে-টাইম রানিং লাইটস (DRLs) এবং এলইডি টেইলল্যাম্প থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও SUV-তে ১৮-ইঞ্চি স্টাইলিশ হুইল এবং অ্যাক্টিভ এয়ার ভেন্ট গ্রিল ব্যবহার করা হবে, যা কেবল গাড়ির চেহারাকেই উন্নত করবে না, এরোডাইনামিক দক্ষতাও বাড়াবে।

বাহ্যিক ডিজাইনকে আধুনিক এবং প্রিমিয়াম রাখতে কোম্পানি উন্নত পেইন্ট বিকল্প এবং ক্রোম ফিনিশের দিকেও নজর দিয়েছে। SUV-টির স্টাইলিং এমনভাবে করা হয়েছে যাতে এটি শহর এবং দূরপাল্লার উভয় পরিস্থিতিতেই আকর্ষণীয় লাগে।

ইন্টেরিয়র এবং ডিজিটাল অভিজ্ঞতা

ই-ভিটারার ইন্টেরিয়রকে অত্যন্ত প্রিমিয়াম এবং আরামদায়ক করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এতে প্যানোরমিক সানরুফ, মাল্টি-কালার অ্যাম্বিয়েন্ট লাইটিং এবং স্মার্ট ডিজিটাল ফিচার থাকবে। ড্রাইভার এবং প্যাসেঞ্জার উভয়ের জন্য অভিজ্ঞতা উন্নত করতে SUV-তে ১০.২৫-ইঞ্চি ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার এবং ১০.১-ইঞ্চি টাচস্ক্রিন ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম দেওয়া হবে।

ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেমে ওয়্যারলেস অ্যান্ড্রয়েড অটো এবং অ্যাপেল কারপ্লে-এর সাপোর্ট থাকবে। এছাড়াও, কানেক্টিভিটি ফিচারের মধ্যে স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন এবং রিয়েল-টাইম নেভিগেশন অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

ব্যাটারি বিকল্প এবং রেঞ্জ

মারুতি ই-ভিটারা দুটি ব্যাটারি বিকল্পের সাথে আসবে। প্রথমটি ৪৮.৮ kWh এবং দ্বিতীয়টি ৬১.১ kWh ব্যাটারি প্যাক হবে। কোম্পানি দাবি করেছে যে ই-ভিটারার রেঞ্জ প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। তবে আসল রেঞ্জ ড্রাইভিং স্টাইল, ট্র্যাফিক এবং আবহাওয়ার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।

এই ব্যাটারি বিকল্পগুলির মাধ্যমে গ্রাহকরা দীর্ঘ দূরত্ব এবং শহরের ড্রাইভিং উভয়ের জন্য আরও ভাল মাইলেজ এবং পারফরম্যান্সের অভিজ্ঞতা পাবেন। দ্রুত চার্জিং ফিচারের সাথে SUV খুব কম সময়ে ব্যাটারি ফুল চার্জ করতে পারবে, যা দীর্ঘ যাত্রার সময়ও বিরতি কমিয়ে দেবে।

অ্যাডভান্সড সেফটি ফিচার

সুরক্ষার ক্ষেত্রে ই-ভিটারাকে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। SUV-তে লেন কিপ অ্যাসিস্ট, অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল, ৭টি এয়ারব্যাগ এবং ডিজিটাল সেন্সর দেওয়া হবে।

এই বৈশিষ্ট্যগুলি কেবল ড্রাইভার এবং যাত্রীর সুরক্ষা নিশ্চিত করবে না, দূরপাল্লার যাত্রা এবং শহরের ট্র্যাফিকে ড্রাইভিংকেও সহজ ও নিরাপদ করবে। এছাড়াও স্মার্ট ড্রাইভিং অ্যাসিস্ট এবং রিয়েল-টাইম অ্যালার্টের মতো বৈশিষ্ট্য ড্রাইভিংয়ের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করবে।

প্রিমিয়াম ইলেকট্রিক SUV-এর প্রতিযোগী

মারুতি ই-ভিটারা ভারতীয় ইলেকট্রিক SUV বাজারে একটি নতুন প্রিমিয়াম বিকল্প হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। এটির ৫০০ কিলোমিটারের বেশি রেঞ্জ, স্টাইলিশ ডিজাইন এবং অ্যাডভান্সড সেফটি ফিচার এটিকে অন্যান্য ইলেকট্রিক গাড়ি থেকে আলাদা এবং আকর্ষণীয় করে তোলে।

কোম্পানির উদ্দেশ্য কেবল দেশীয় গ্রাহকদের প্রিমিয়াম EV অভিজ্ঞতা দেওয়া নয়, বিশ্ব বাজারে রপ্তানি করে ব্র্যান্ডের সুনাম বাড়ানোও। বিশেষজ্ঞদের মতে, ই-ভিটারা ইলেকট্রিক SUV মার্কেটে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে পারে এবং ভারতীয় EV সেক্টরকে আরও শক্তিশালী করবে।

Leave a comment