মেডিস্টেপ হেলথকেয়ারের SME প্ল্যাটফর্মে IPO: শেয়ার প্রতি দাম ৪৩ টাকা

মেডিস্টেপ হেলথকেয়ারের SME প্ল্যাটফর্মে IPO: শেয়ার প্রতি দাম ৪৩ টাকা

মেডিস্টেপ হেলথকেয়ার ৮ই অগাস্ট ২০২৫ থেকে SME প্ল্যাটফর্মে তাদের IPO লঞ্চ করছে, যার দাম প্রতি শেয়ারে ₹৪৩ টাকা রাখা হয়েছে। কোম্পানি ₹১৬.০৯ কোটি টাকা তুলে ম্যানুফ্যাকচারিং-এর বিস্তার, নতুন মেশিনারি এবং কার্যকরী মূলধন-এর মতো কাজে লাগাবে। গ্রে মার্কেটে এর প্রিমিয়াম ₹১২ টাকা, যে কারণে লিস্টেড হওয়ার পরে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হেলথকেয়ার এবং ফার্মা সেক্টরের উদীয়মান কোম্পানি মেডিস্টেপ হেলথকেয়ার ৮ই অগাস্ট থেকে ১২ই অগাস্ট ২০২৫ পর্যন্ত SME প্ল্যাটফর্মে তাদের ইনিশিয়াল পাবলিক অফার (IPO) নিয়ে আসছে। কোম্পানি ₹৪৩ টাকা প্রতি শেয়ারের দরে ₹১৬.০৯ কোটি টাকা তোলার লক্ষ্য নিয়ে চলছে। এই টাকা থেকে তারা তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটের বিস্তার, নতুন মেশিন কেনা, কার্যকরী মূলধনের চাহিদা পূরণ এবং কর্পোরেট খরচ সামলানোর পরিকল্পনা করেছে। কোম্পানির উদ্দেশ্য গ্রামীণ এবং শহর এলাকায় স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি পণ্যের সরবরাহ বাড়ানো।

₹৪৩ টাকা প্রতি শেয়ার দাম নির্ধারিত হয়েছে

কোম্পানি তাদের IPO-র জন্য ₹৪৩ টাকা প্রতি ইক্যুইটি শেয়ারের প্রাইস ব্যান্ড নির্ধারণ করেছে। এই ইস্যু-তে বিনিয়োগ করার জন্য বিনিয়োগকারীদের কমপক্ষে ৩০০০টি শেয়ারের লট সাইজে আবেদন করতে হবে। এই ইস্যুটি মূলত সেই বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে যারা স্মলক্যাপ এবং মিডক্যাপ কোম্পানিতে ঝুঁকির সঙ্গে ভালো রিটার্ন চান।

মেডিস্টেপ হেলথকেয়ার তাদের পাবলিক ইস্যুর মাধ্যমে বাজার থেকে মোট ₹১৬.০৯ কোটি টাকা তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ইস্যুর অধীনে কোম্পানি প্রায় ৩৭,৪৪,০০০ ইক্যুইটি শেয়ার জারি করবে, যার ফেস ভ্যালু ₹১০ টাকা ধার্য করা হয়েছে।

শেয়ারের বিভাজন যেভাবে হবে

এই IPO-র মধ্যে ১৭.৭৯ লক্ষ শেয়ার রিটেল বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। वहीं, ১৭.৭৬ লক্ষ শেয়ার নন-ইনস্টিটিউশনাল বিনিয়োগকারীরা পাবেন এবং ১.৮৯ লক্ষ শেয়ার মার্কেট মেকারদের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। এর ফলে রিটেল বিনিয়োগকারীরা ভালো সুযোগ পেতে পারেন কারণ SME সেগমেন্টে রিটেল অংশগ্রহণের উপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়।

মেডিস্টেপ হেলথকেয়ার-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর গিরধারী লাল প্রজাপতি জানিয়েছেন যে এই IPO কোম্পানি-র বিস্তারের প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে। তিনি বলেছেন যে এই টাকা থেকে শুধুমাত্র কোম্পানির উৎপাদন ক্ষমতাই বাড়বে না, সেই সঙ্গে দেশীয় এবং বিদেশি বাজারেও তাদের সরবরাহ বাড়বে। প্রজাপতির মতে, কোম্পানির প্রোডাক্ট পোর্টফোলিও ব্যাপক, যেখানে স্যানিটারি প্যাড, ফার্মা, নিউট্রাসিউটিক্যালস, সার্জিক্যাল প্রোডাক্টস এবং ইন্টিমেট কেয়ার-এর সঙ্গে জড়িত জিনিস রয়েছে।

কম খরচ এবং শক্তিশালী নেটওয়ার্ক কোম্পানির বিশেষত্ব

২০২৩ সালে স্থাপিত এই কোম্পানির সবচেয়ে বড় শক্তি হল এর কম খরচের উৎপাদন মডেল এবং শক্তিশালী বিতরণ নেটওয়ার্ক। কোম্পানি রিটেল চ্যানেল এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে দেশজুড়ে তাদের প্রোডাক্ট সরবরাহ করে। এর লক্ষ্য গ্রামীণ এবং শহর উভয় বাজারেই স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে উপলব্ধ করানো।

মেডিস্টেপ হেলথকেয়ার-এর প্রদর্শন আর্থিক রূপে ক্রমাগত উন্নত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। কোম্পানি অর্থবর্ষ ২০২৩-২৪-এ ₹৩৯০৭.১৯ লক্ষ টাকার রাজস্ব নথিভুক্ত করেছে, যা ২০২৫-এ বেড়ে ₹৪৯৬৫.৪৮ লক্ষ টাকা হয়েছে। EBITDA-র কথা বলতে গেলে, এটিও ₹৪৫৪.২ লক্ষ থেকে বেড়ে ₹৫৬০ লক্ষ টাকা হয়েছে। वहीं, নিট লাভ (PAT) FY24-এর ₹৩৩২.৭৬ লক্ষ থেকে বেড়ে FY25-এ ₹৪১৪.৪২ লক্ষ পর্যন্ত পৌঁছেছে।

শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর মেডিস্টেপ হেলথকেয়ার-এর আনুমানিক মার্কেট ক্যাপ ₹৬১.১০ কোটির আশেপাশে থাকবে। এই অঙ্কটি কোম্পানির বর্তমান আর্থিক অবস্থা এবং শেয়ারের দাম দেখে তৈরি করা হয়েছে।

IPO-র গ্রে মার্কেট প্রিমিয়াম কী বলছে

বাজার থেকে আসা সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, মেডিস্টেপ হেলথকেয়ার-এর IPO-র গ্রে মার্কেট প্রিমিয়াম (GMP) ₹১২ টাকা বলা হচ্ছে। অর্থাৎ ₹৪৩ টাকার ইস্যু প্রাইসে এই শেয়ার লিস্টেড হওয়ার সময় প্রায় ₹৫৫ টাকায় খুলতে পারে। এই হিসাবে বিনিয়োগকারীরা প্রতি শেয়ারে প্রায় ২৭.৯১ শতাংশ সম্ভাব্য তালিকাভুক্তি লাভ পেতে পারেন।

বাজারে ভালো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যেতে পারে

IPO মার্কেটে এই মুহূর্তে অনেক নতুন বিকল্প সামনে আসছে, কিন্তু হেলথকেয়ার এবং ফার্মা-র মতো সেক্টরে বিনিয়োগকারীদের বিশেষ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মেডিস্টেপ হেলথকেয়ার-এর ইস্যুও ভালো চাহিদা তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে সেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যারা SME প্ল্যাটফর্মে উদীয়মান কোম্পানিগুলিতে প্রাথমিক পর্যায়ে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন।

স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে দেশে দ্রুত সচেতনতা বাড়ছে। গ্রামীণ এলাকাতেও স্যানিটারি ন্যাপকিন এবং অন্যান্য ইন্টিমেট কেয়ার প্রোডাক্ট-এর চাহিদা বাড়ছে। পাশাপাশি, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং নিউট্রাসিউটিক্যাল সেগমেন্টেও বড় স্তরে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।

কোম্পানির ফোকাস বিস্তারের উপর

মেডিস্টেপ হেলথকেয়ার স্পষ্ট করে দিয়েছে যে IPO থেকে তোলা অর্থের বড় অংশ কোম্পানির ম্যানুফ্যাকচারিং ক্যাপাসিটি বাড়ানোর জন্য লাগানো হবে। এতে উৎপাদন বাড়বে এবং কোম্পানি বেশি থেকে বেশি বাজারে তাদের দখল দৃঢ় করতে পারবে।

Leave a comment