মার্কিন কাস্টমস বিভাগ ওয়্যারি এনার্জিজের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ তুলে তদন্ত শুরু করেছে। কোম্পানির বিরুদ্ধে সন্দেহ করা হচ্ছে যে তারা চীনে তৈরি সোলার সেল এবং প্যানেল 'মেড ইন ইন্ডিয়া' বলে আমেরিকায় বিক্রি করেছে। এই খবরের জেরে ওয়্যারি এনার্জিজের শেয়ার আজ ৬% এর বেশি কমে গেছে।
ওয়্যারি এনার্জিজ: সোলার কোম্পানি ওয়্যারি এনার্জিজের সমস্যা বেড়েছে কারণ মার্কিন কাস্টমস বিভাগ কোম্পানির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ তুলে তদন্ত শুরু করেছে। এজেন্সির দাবি, কোম্পানিটি চীনে তৈরি সোলার সেল এবং প্যানেল 'মেড ইন ইন্ডিয়া' ট্যাগ লাগিয়ে আমেরিকায় বিক্রি করেছে। এই খবরের জেরে ওয়্যারি এনার্জিজের শেয়ার ২২৮ টাকা কমে ৩,২১৭.৬০ টাকায় নেমে এসেছে।
আমেরিকায় তদন্তের কারণ
মার্কিন কাস্টমস বিভাগের অভিযোগ, ওয়্যারি এনার্জিজ চীনে তৈরি সোলার সেল এবং প্যানেল 'মেড ইন ইন্ডিয়া' ট্যাগ লাগিয়ে আমেরিকায় বিক্রি করেছে। আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরে চীনের ডাম্পিং পণ্যের ওপর কঠোর শুল্ক নীতি প্রয়োগ করে আসছে। বিভাগের মতে, ওয়্যারি কিছু আমদানিকৃত পণ্যের উপর অ্যান্টিডাম্পিং এবং ক্ষতিপূরণমূলক শুল্ক মানেনি। এই কারণেই কোম্পানির তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মেমো
মার্কিন সীমান্ত শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ ওয়্যারি এবং আমেরিকান অ্যালায়েন্স ফর সোলার ম্যানুফ্যাকচারিং ট্রেড কমিটির আইনজীবীদের একটি মেমো পাঠিয়েছে। এই কমিটি আমেরিকার ঘরোয়া সোলার উৎপাদকদের একটি জোট। মেমোতে লেখা আছে যে ওয়্যারির পণ্যের উপর যথাযথ শুল্ক আরোপ করা হয়নি, যা মার্কিন নিয়ম লঙ্ঘন করেছে।
কোম্পানির অবস্থান
ওয়্যারি এনার্জিজ জানিয়েছে যে কোম্পানি মার্কিন কর নিয়মাবলী মেনে চলার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। কোম্পানি তদন্তের সময় প্রয়োজনীয় নগদ জমা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কোম্পানির আইনজীবী এবং মুখপাত্র এই মুহূর্তে এই বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেওয়ার জন্য উপলব্ধ ছিলেন না।
ভারত থেকে আমেরিকায় সোলার প্যানেল আমদানি
গত দুই বছরে আমেরিকা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি থেকে সোলার প্যানেলের উপর শুল্ক আরোপ করেছে। এর পরে ভারত থেকে আমেরিকায় সোলার প্যানেলের আমদানি বেড়েছে। এই প্যানেলগুলি মার্কিন বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে আছে। চীনর উপর আমেরিকা প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শুল্ক আরোপ করে আসছে।
শেয়ারের উপর প্রভাব
মার্কিন কাস্টমস বিভাগের তদন্তের খবর ওয়্যারির শেয়ারের উপর তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলেছিল। কোম্পানির শেয়ার আজ প্রায় ৬.৬০ শতাংশ কমে ৩,২১৭.৬০ টাকায় লেনদেন হচ্ছিল। খবর লেখা পর্যন্ত শেয়ারগুলি প্রায় ২২৮ টাকা কমে গিয়েছিল।
ওয়্যারি এনার্জিজের গত ছয় মাসের পারফরম্যান্স
তবে সাম্প্রতিক পতন সত্ত্বেও, গত ছয় মাসে কোম্পানির পারফরম্যান্স শক্তিশালী ছিল। এই সময়ের মধ্যে বিনিয়োগকারীরা ওয়্যারির শেয়ার থেকে প্রায় ৩৩ শতাংশ রিটার্ন পেয়েছেন। কোম্পানি তার পণ্য এবং পরিষেবার মাধ্যমে সৌর শক্তি খাতে স্থিতিশীল বৃদ্ধি রেকর্ড করেছে।
তদন্তের ভবিষ্যৎ এবং সম্ভাব্য প্রভাব
মার্কিন কাস্টমস বিভাগের তদন্ত ওয়্যারি এনার্জিজের জন্য চ্যালেঞ্জিং প্রমাণিত হতে পারে। যদি কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক বলে প্রমাণিত হয়, তবে এর অর্থনৈতিক ও আইনি পরিণতি হতে পারে। তবে, কোম্পানির পণ্য এবং প্রকল্পগুলি আমেরিকায় এখনও চালু থাকবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় সৌর সংস্থাগুলির ব্যবসা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়্যারি এনার্জিজের মতো বড় খেলোয়াড়রা এই সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমেরিকার কর নিয়মাবলী মেনে চলা এই সংস্থাগুলির জন্য অপরিহার্য।