২২৪ কোটি টাকার নতুন অর্ডার সত্ত্বেও IRCON শেয়ারে পতন: কারণ কী?

২২৪ কোটি টাকার নতুন অর্ডার সত্ত্বেও IRCON শেয়ারে পতন: কারণ কী?

সরকারি প্রকৌশল সংস্থা IRCON International নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে থেকে ২২৪.৪৯ কোটি টাকার একটি নতুন কম্পোজিট কাজের অর্ডার পেয়েছে। প্রকল্পটি ১৮ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। তা সত্ত্বেও, ২৬শে সেপ্টেম্বর কোম্পানির শেয়ার ২% কমে ১৬৯.৭০ টাকায় বন্ধ হয়েছে, যখন এপ্রিল–জুন ২০২৫ ত্রৈমাসিকে নিট মুনাফা ২৬.৫% কমে ১৬৪.৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

IRCON শেয়ার: IRCON International নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে থেকে ২২৪.৪৯ কোটি টাকার একটি কম্পোজিট কাজের অর্ডার পেয়েছে, যার মধ্যে সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল এবং সিগন্যাল ও টেলিকম পরিকাঠামো অন্তর্ভুক্ত। এই প্রকল্পের আওতায় নিউ জলপাইগুড়ি কোচিং কমপ্লেক্স, শিলিগুড়িতে একটি জিই লোকো শেড এবং কাটিহার ডিভিশনে পণ্য রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা তৈরি করা হবে, যা ১৮ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। তা সত্ত্বেও, ২৬শে সেপ্টেম্বর কোম্পানির শেয়ার ২% কমে ১৬৯.৭০ টাকায় বন্ধ হয়েছে।

প্রকল্পের বিবরণ

IRCON International-এর এই নতুন প্রকল্পের অধীনে নিউ জলপাইগুড়ি কোচিং কমপ্লেক্সে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের রক্ষণাবেক্ষণ পরিকাঠামো আপগ্রেড করা হবে। এছাড়াও, শিলিগুড়িতে ২৫০টি জিই ইঞ্জিনের জন্য একটি জিই লোকোমোটিভ শেড নির্মাণ করা হবে। কাটিহার ডিভিশনে পরবর্তী প্রজন্মের পণ্য রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা স্থাপনও এর অন্তর্ভুক্ত। এই প্রকল্পটি কোম্পানির সক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।

IRCON শেয়ারে পতন, বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়ল

যদিও IRCON International একটি নতুন অর্ডার পেয়েছে, কিন্তু আজ ২৬শে সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারে এর শেয়ার প্রায় ২ শতাংশ কমে ১৬৯.৭০ টাকায় বন্ধ হয়েছে। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ার প্রায় ২৪ শতাংশ দুর্বল হয়েছে। একই সাথে, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে শেয়ারটি ৮ শতাংশ পতন দেখেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোম্পানির সাম্প্রতিক আর্থিক কর্মক্ষমতা এবং গত ত্রৈমাসিকের দুর্বল পরিসংখ্যান নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ রয়েছে।

আর্থিক কর্মক্ষমতা

এপ্রিল-জুন ২০২৫ ত্রৈমাসিকে IRCON International-এর নিট মুনাফা বার্ষিক ভিত্তিতে ২৬.৫ শতাংশ কমে ১৬৪.৫ কোটি টাকা হয়েছে। এছাড়াও, একত্রিত রাজস্ব প্রায় ২২ শতাংশ কমে ১,৭৮৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা এক বছর আগে ২,২৮৭ কোটি টাকা ছিল। এই পতন মূলত প্রকল্প শেষ হওয়ার ধীর গতি এবং কিছু আন্তর্জাতিক প্রকল্পে দেরির কারণে হয়েছে।

জুন ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত কোম্পানিতে সরকারের অংশীদারি ছিল ৬৫.১৭ শতাংশ। বর্তমানে IRCON International-এর বাজার মূলধন ১৫,৯০০ কোটি টাকা।

বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ এবং বাজারের অস্থিরতা

নতুন অর্ডার পাওয়া সত্ত্বেও শেয়ারবাজারে পতন বিনিয়োগকারীদের সতর্কতাকে নির্দেশ করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে সরকারি অংশীদারিত্ব থাকা পাবলিক সেক্টর কোম্পানিগুলিতে বিনিয়োগকারীরা সর্বদা আর্থিক কর্মক্ষমতা এবং প্রকল্পের সময়সীমার উপর নজর রাখে। IRCON International-এর সাম্প্রতিক ত্রৈমাসিক তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে কোম্পানির কার্যক্রমে ধীর গতি ছিল, যার কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারের দামের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

কোম্পানির সক্ষমতা 

IRCON International বিগত বহু বছর ধরে বড় বড় পরিকাঠামো প্রকল্প সম্পন্ন করেছে। কোম্পানির সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল এবং সিগন্যাল ও টেলিকম ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী প্রযুক্তিগত দল এবং দক্ষতা রয়েছে। নতুন প্রকল্পটি কোম্পানির প্রযুক্তিগত ও পরিচালন ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস যে এই নতুন প্রকল্পটি থেকে কোম্পানি আগামী ১৮ মাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজস্ব পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা উন্নত হতে পারে।

Leave a comment