মুম্বাইয়ে ওলা-উবার ধর্মঘট: চরম দুর্ভোগে যাত্রী, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সতর্কতা

মুম্বাইয়ে ওলা-উবার ধর্মঘট: চরম দুর্ভোগে যাত্রী, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সতর্কতা

মুম্বাইয়ে ওলা এবং উবার চালকদের ধর্মঘট বুধবার দ্বিতীয় দিনেও অব্যাহত ছিল, যার ফলে শহরজুড়ে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এই বিক্ষোভের প্রভাব শুধু সড়ক যোগাযোগেই পড়েনি, বরং আকাশপথে ভ্রমণকারী যাত্রীদেরও সমস্যায় ফেলেছে। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (CSMIA) প্রশাসনকে যাত্রীদের জন্য অ্যাডভাইজরি পর্যন্ত জারি করতে হয়েছে।

বিমানবন্দরের অ্যাডভাইজরি

মুম্বাই বিমানবন্দর প্রশাসন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X (পূর্বে টুইটার)-এ যাত্রীদের পরামর্শ দিয়েছে যে ওলা এবং উবার চালকদের ধর্মঘটের কারণে অ্যাপ-ভিত্তিক ক্যাব পরিষেবাগুলি প্রভাবিত হতে পারে, তাই আগে থেকে ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন এবং পরিবহনের বিকল্প মাধ্যমগুলির কথা বিবেচনা করুন।

অ্যাডভাইজরিতে আরও বলা হয়েছে যে বিমানবন্দরে আসা-যাওয়ার জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বা ব্যক্তিগত ভ্রমণের ব্যবস্থা আগে থেকে করে নেওয়া ভালো, যাতে ফ্লাইট মিস করা বা দেরির মতো সমস্যা এড়ানো যায়।

যাত্রীদের জোর করে নামানো হয়েছে

ধর্মঘটের জেরে বুধবার শহরের বিভিন্ন অংশে যাত্রীদের ক্যাব এবং অটো থেকে জোর করে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অনেক যাত্রী জানিয়েছেন যে তাদের মাঝরাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং চালকরা যাত্রা সম্পন্ন করতে অস্বীকার করেছেন। কিছু ক্ষেত্রে, চালকদের দ্বারা হুমকির খবরও পাওয়া গেছে, যা যাত্রীদের মধ্যে ভয় এবং নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ তৈরি করেছে।

আজাদ ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে মহারাষ্ট্র থেকে হাজার হাজার ওলা-উবার চালক জড়ো হয়েছিলেন, যার ফলে মুম্বাইয়ের রাইড-শেয়ারিং পরিষেবাগুলি প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল।

চালকদের প্রধান দাবিগুলি কী কী?

ধর্মঘটরত চালকদের প্রধান দাবিগুলি হল:

•    অ্যাপ-ভিত্তিক ভাড়ার মিটার ট্যাক্সির সমান করা হোক।

•    বাইক ট্যাক্সি পরিষেবাগুলির উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।

•    ক্যাব এবং অটো রিকশা পারমিটের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হোক।

•    চালকদের জন্য একটি কল্যাণ বোর্ড গঠন করা হোক।

•    ‘মহারাষ্ট্র গিগ ওয়ার্কার্স অ্যাক্ট’ কার্যকর করা হোক, যা তাদের সামাজিক নিরাপত্তা দেবে।

চালকদের অভিযোগ

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নাগপুরের একজন ক্যাব চালক বলেছেন, ক্যাব অ্যাগ্রিগেটর কোম্পানিগুলি আমাদের হুমকি দেয়, আমাদের শোষণ করে এবং ভাড়ার একটি বড় অংশ কেটে নেয়। আমরা সামান্যই উপার্জন করি। এখন আমরা চুপ করে থাকব না।

চালকদের বক্তব্য, তারা ক্রমাগত আর্থিক চাপে কাজ করছেন এবং তাদের স্বার্থকে উপেক্ষা করা হচ্ছে।

এর প্রভাব কী হতে পারে?

মুম্বাইয়ের মতো একটি মহানগরীতে, যেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন অ্যাপ-ভিত্তিক রাইড-শেয়ারিং পরিষেবা ব্যবহার করে, এই ধরনের ধর্মঘট দৈনন্দিন জীবন এবং কর্মজীবীদের জন্য বেশ ক্ষতির কারণ হচ্ছে। যদি এই বিক্ষোভ দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকে, তবে সরকার এবং ক্যাব অ্যাগ্রিগেটর কোম্পানিগুলির উপর চালকদের সমস্যা সমাধানের জন্য চাপ বাড়তে পারে।

পুলিশ এবং প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, তবে ততক্ষণে যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে তারা এই অসুবিধার জন্য প্রস্তুত থাকুন এবং বিকল্প মাধ্যম ব্যবহার করুন।

Leave a comment