আরামবাগে মিঠুনের হুঁশিয়ারি তীব্র সমালোচনায় বিরোধীরা

আরামবাগে মিঠুনের হুঁশিয়ারি তীব্র সমালোচনায় বিরোধীরা

‘‘মারলে মারুন!’’— মিঠুনের বার্তা, নির্বাচনের আগে পাল্টা প্রস্তুতির ডাক

বিধানসভা ভোটের দামামা এখনও না বাজলেও মাঠে নেমে পড়েছেন বিজেপির তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। শুক্রবার হুগলির আরামবাগে দলের জেলা কার্যালয়ে কর্মী বৈঠকে কার্যত ‘অ্যাকশন মোডে’ দেখা গেল তাঁকে। মিঠুনের স্পষ্ট বার্তা, মার খেয়ে বাড়ি ফিরবেন না, বরং পাল্টা দিন। এই মন্তব্যে মুহূর্তে উষ্মা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সভায় উপস্থিত দলীয় কর্মীরা ওই বক্তব্যে উজ্জীবিত হলেও বিরোধীরা একে কুরুচিকর ও উসকানিমূলক বলে ব্যাখ্যা করেছে।

হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগ জানানোর আহ্বান, দলের মধ্যেই নজরদারির বার্তা

বক্তব্যে মিঠুন শুধু শত্রুপক্ষ নয়, নিজের দলের দিকেও নজর রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন। কর্মীদের উদ্দেশে জানিয়েছেন, কোনও অসন্তোষ থাকলে সরাসরি তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে জানান। কর্মীদের হাতে নিজের নম্বর তুলে দিয়ে মিঠুন জানান, দলের কোনও নেতা বা বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমাকে জানাও, আমি নিজে দেখব। বিজেপির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নিয়েও যে তিনি সচেতন, তা এই বার্তায় স্পষ্ট।

বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ, ‘‘উনি রাজনীতির জোকার’’

মিঠুনের বক্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, কিছুদিন আগেও উনি তৃণমূলের হয়ে কথা বলতেন, এখন বিজেপির হয়ে বলছেন। ঠিক বোঝা মুশকিল কার হয়ে আসলে কথা বলেন। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও এক ধাপ এগিয়ে মন্তব্য করেন, উনি একজন ভালো অভিনেতা, কিন্তু রাজনীতিতে একজন জোকার ছাড়া কিছুই নন।

ভোটার তালিকা নিয়ে হুঁশিয়ারি, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গ টেনে বার্তা

রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধন ও বাংলাভাষীদের ‘হেনস্থা’ নিয়ে যখন তৃণমূল সরব, তখন সেই ইস্যুতে মিঠুন জানান, যদি প্রকৃত বাঙালি বাদ পড়েন, আমরা প্রতিবাদ করব। কিন্তু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বাদ যেতেই হবে। এর মাধ্যমে বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক রক্ষার পাশাপাশি বাঙালি পরিচয় ঘিরে রাজনীতির জমিতে আগাম চাল দিতে চেয়েছেন বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

কলকাতার চার কেন্দ্রে বিশেষ টার্গেট, অভিনেতা থেকে পূর্ণাঙ্গ প্রচারক

২০২৬ সালের বিধানসভা ভোট যতই এগিয়ে আসছে, ততই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন মিঠুন চক্রবর্তী। সূত্রের খবর, কলকাতার জোড়াসাঁকো, শ্যামপুকুর, ভবানীপুর ও রাসবিহারী কেন্দ্রে তাঁকে স্পেশাল ক্যাম্পেইন ফেস হিসেবে ব্যবহার করবে বিজেপি। বৃহস্পতিবারই তিনি এই কেন্দ্রগুলির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই মুহূর্তে মিঠুন শুধু অভিনেতা নন, বিজেপির অন্যতম প্রচারক হিসেবে যে ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a comment