টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক এবং বিখ্যাত ক্রিকেটার এম এস ধোনিকে তাঁর শান্ত স্বভাব এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য 'ক্যাপ্টেন কুল' নামে পরিচিত করা হয়। সম্প্রতি, তিনি এই 'Captain Cool' ট্যাগলাইনটিকে ট্রেডমার্ক করার জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু বর্তমানে এই বিষয়টি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
স্পোর্টস নিউজ: ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে শান্ত এবং বুদ্ধিমান অধিনায়কদের মধ্যে গণ্য হওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনি এখন তাঁর জনপ্রিয় উপনাম ‘ক্যাপ্টেন কুল’ -কে আইনিভাবে সুরক্ষিত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই প্রচেষ্টাকে আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ধোনির করা ট্রেডমার্ক আবেদনের উপর একটি খ্যাতনামা ল' ফার্ম ‘অ্যানালাইসিস অ্যাটর্নিজ অ্যাট ল'’ আনুষ্ঠানিক আপত্তি জানিয়েছে।
পুরো ঘটনাটি কী?
ধোনি জুন ২০২৩-এ ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নামের জন্য ট্রেডমার্ক আবেদন করেছিলেন, যা জুন ২০২৫-এ কলকাতা ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রি অফিস কর্তৃক গৃহীত হয়েছিল। এর পরে, ১৬ই জুন, ২০২৫ তারিখে এটি ট্রেডমার্ক জার্নালে প্রকাশিত হয়। ভারতীয় ট্রেডমার্ক আইন ১৯৯৯ অনুসারে, কোনো আবেদনের উপর ১২০ দিনের মধ্যে আপত্তি জানানো যেতে পারে।
এই সময়ের মধ্যেই, ল' ফার্মটি এই ট্রেডমার্কের বিরোধিতা করে বলেছে যে এই উপনামটি ধোনির ব্যক্তিগত নয়, বরং এটি অনেক খেলোয়াড় এবং বিভিন্ন প্রসঙ্গে আগে থেকেই ব্যবহৃত হচ্ছে।
আইনি যুক্তি: কেন ট্রেডমার্ক নাও পেতে পারেন?
ল' ফার্মের মতে: ‘ক্যাপ্টেন কুল’ একটি সাধারণ উপনাম হয়ে উঠেছে, যা অনেক অধিনায়ক এবং ব্যক্তিত্বকে দেওয়া হয়েছে। এটিকে কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে যুক্ত করা অনুচিত হবে। ধোনির আবেদনে এই উপনামটিকে বিশেষভাবে তাঁর সঙ্গে যুক্ত করার মতো শক্তিশালী প্রমাণ বা নথি দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে কোনো শব্দ বা শব্দগুচ্ছকে ট্রেডমার্ক করা যায় না, যতক্ষণ না এটি ব্র্যান্ড ভ্যালু এবং একটি সুনির্দিষ্ট পরিচয় প্রমাণ করে। এই নামটি পূর্বে বাণিজ্যিকভাবে নিবন্ধিত হয়নি, যা ধোনির দাবিকে দুর্বল করে তোলে।
ক্যাপ্টেন কুল: শুধু একটি নাম নয়, একটি পরিচয়
বর্তমানে বিষয়টি আইনি বিতর্ক এবং প্রমাণের উপর নির্ভরশীল হবে। যদি ধোনির দল এটি প্রমাণ করতে সফল হয় যে: এই উপনামটি ব্যাপকভাবে তাঁর সঙ্গেই জড়িত, এটি বাণিজ্যিক পরিচয় এবং ব্র্যান্ডিংয়ে ব্যবহৃত হয়েছে, এবং এটি আগে কেউ ট্রেডমার্ক হিসেবে নথিভুক্ত করেনি, তবে এই ট্রেডমার্কটি তাঁর পক্ষে যেতে পারে। কিন্তু যদি বিরোধীরা শক্তিশালী প্রমাণ পেশ করেন যে এই শব্দটি জনসাধারণের ব্যবহারেই ছিল, এবং কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত নয়, তবে ধোনির এই প্রচেষ্টা বাতিলও হতে পারে।
এম এস ধোনিকে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ বলাটা কেবল একটি উপনাম নয়, বরং তাঁর চিন্তা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং মাঠের চাপপূর্ণ পরিস্থিতিতে তাঁর শান্তির প্রতীক। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়, ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে বিজয়ী ছক্কা এবং ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অধিনায়কত্ব – এই সমস্ত মুহূর্তে ধোনির শান্ত মস্তিষ্ক এবং কৌশলগত চিন্তাভাবনা ভারতকে জয় এনে দিয়েছে।
ধোনির এই বৈশিষ্ট্যই তাঁকে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ বানিয়েছে। তিনি সবসময় মাঠে শান্তি এবং দলের প্রতি ইতিবাচকতা বজায় রেখেছেন, যে কারণে এই নামটি ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।