‘তারক মেহতা কা উলটা চশমা’ ভারতীয় টেলিভিশনের দীর্ঘতম এবং জনপ্রিয় কমেডি শো-গুলির মধ্যে অন্যতম। এই শোটি ২৮ জুলাই, ২০০৮ সালে শুরু হয়েছিল এবং এখন ১৭ বছর পূর্ণ করেছে, যা নিজেই একটি ঐতিহাসিক কৃতিত্ব।
বিনোদন: জনপ্রিয় টেলিভিশন শো 'তারক মেহতা কা উলটা চশমা' সম্প্রতি তাদের ১৭ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। এই উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে শো-এর অনেক প্রধান ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলেন 'ববিতা জি'-র চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেত্রী মুনমুন দত্ত, যাঁর পোশাক এবং মঞ্চে করা একটি সাধারণ আচরণ সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিং-এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
স্টাইলিশ লুকে মুনমুন, কিন্তু স্টোল আকর্ষণ করলো দৃষ্টি
সেলিব্রেশন ইভেন্টে মুনমুন দত্ত ডেনিম শর্ট ড্রেস এবং বুট-হিলসে অত্যন্ত স্টাইলিশ ভঙ্গিতে উপস্থিত হয়েছিলেন। যখনই তিনি মঞ্চে পৌঁছলেন, তাঁর হাতে একটি মাল্টিকালার স্টোল দেখা যায়। তিনি মঞ্চে উপস্থিত ব্যক্তিদের অভিবাদন জানান এবং তারপর চেয়ারে বসেন। এরপর তিনি তাঁর হাতে নেওয়া স্টোলটি পা দিয়ে ঢেকে দেন, যা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে।
কিছু লোকের ধারণা, যখন মুনমুন এত ছোট পোশাকে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না, তখন তাঁর এমন পোশাক নির্বাচন করাই উচিত হয়নি। আবার, অনেক দর্শক এবং অনুরাগী তাঁর এই আচরণকে সংবেদনশীলতা এবং আত্ম-সচেতনতার সঙ্গে যুক্ত করে দেখেছেন এবং তাঁর প্রশংসা করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এই ভিডিওটি সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ইন্টারনেটে ট্রোলের বন্যা বয়ে যায়। অনেক ব্যবহারকারী মুনমুনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাঁর ড্রেসিং চয়েস নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, "দেখাতেও চান আবার লুকাতেও চান, না জানি এই নায়িকারা কী চান।" অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, "যখন পরতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না, তখন এমন পোশাক পরার কী দরকার ছিল?"
তবে, অনেক লোক মুনমুনের সমর্থন করেছেন। একজন ব্যবহারকারী বলেছেন, "তিনি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন, কোনো অপ্রীতিকর মুহূর্ত থেকে বাঁচতে নিজেকে ঢেকে রাখা ভুল নয়।" অন্য একজন লিখেছেন, "এটা তাঁর শরীর এবং তাঁর নিজের মতো করে সামলানোর সম্পূর্ণ অধিকার আছে। ট্রোলারদের চুপ থাকা উচিত।"
কেন এই আলোচনা জরুরি?
এই ঘটনাটি শুধুমাত্র একজন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত পছন্দ বা স্টাইল স্টেটমেন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি সমাজে ফ্যাশন, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং জনসাধারণের প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে চলমান দ্বৈত মানদণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করে। মহিলাদের পোশাক এবং তাদের পরিধান নিয়ে বার বার হওয়া আলোচনা প্রমাণ করে যে আজও সমাজের অনেক মহল মহিলাদের পোশাককে তাদের চরিত্র বা চিন্তাভাবনার সঙ্গে যুক্ত করে দেখার মানসিকতা রাখে।
মুনমুন দত্তের মতো জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের জনসমক্ষে প্রতিটি পদক্ষেপ খুব সাবধানে নিতে হয়। কখনও কখনও এই চেষ্টাও ট্রোলিং-এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যেমনটা এইবার হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, মুনমুন দত্ত প্রায়শই শক্তিশালী মহিলা চরিত্র নিয়ে কথা বলেন এবং সামাজিক সমস্যাগুলিতে সোচ্চার হন। এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে মুনমুনের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর অনুরাগীরা তাঁর সমর্থনে ক্রমাগত আওয়াজ তুলছেন।