উত্তর প্রদেশে মন্দিরে মুসলিম যুবকের পূজারী সেজে বসবাস: চাঞ্চল্য

উত্তর প্রদেশে মন্দিরে মুসলিম যুবকের পূজারী সেজে বসবাস: চাঞ্চল্য

উত্তর প্রদেশের মেরঠ জেলার দৌরালা থানা এলাকার দাদরি গ্রামে অবস্থিত একটি শিব মন্দিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে যখন জানা যায় যে সেখানে 'কৃষ্ণ বাবা' সেজে থাকা পূজারী আসলে একজন মুসলিম যুবক। যুবকের পরিচয় কাসিম পুত্র আলতাফ, নিবাস সীতামঢ়ী, বিহার হিসাবে জানা গেছে, যে গত এক বছর ধরে মন্দিরে পূজারী হিসাবে বসবাস করছিল।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন কাসিম শিবরাত্রির পরে কাঁওয়ার যাত্রা থেকে ফিরে মন্দিরে আসে এবং গ্রামবাসীরা দানপাত্রে কম টাকা দেখে সন্দেহ করে। যখন তার পরিচয় সংক্রান্ত নথি চাওয়া হয়, তখন আধার কার্ড থেকে তার আসল পরিচয় জানা যায়। এর পরে গ্রামবাসীরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ কাসিমকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছে এবং এখন তার পূর্বের রেকর্ড এবং মন্দিরে থাকার পেছনের উদ্দেশ্য তদন্ত করা হচ্ছে।

হিন্দু সংগঠনগুলির তীব্র ক্ষোভ

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ अखिल ভারতীয় হিন্দু সুরক্ষা সংগঠনের কর্মীরা শুক্রবার মন্দিরে পৌঁছে গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধিকরণ করে এবং হনুমান চালিসা পাঠ করে। সংগঠনের সভাপতি শচীন সিরোহী এই ঘটনাকে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন এবং মিডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন যে কাসিম পূজা-পাঠের অজুহাতে হিন্দু যুবতীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিল।

তিনি এই ঘটনাকে 'লাভ জিহাদ'-এর সাথে যুক্ত বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন যে এর পিছনে বড় কোনও ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। পাশাপাশি, তিনি কাসিমের জঙ্গি সংগঠনের সাথে কোনও প্রকার সম্পর্ক আছে কিনা, তাও তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন। সংগঠনটি বলেছে যে এটি কেবল পরিচয় গোপন করার বিষয় নয়, বরং ধর্মীয় স্থানগুলির মর্যাদা এবং সামাজিক সম্প্রীতির উপর সরাসরি আঘাত।

সমস্ত মন্দিরে পূজারীদের যাচাই করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন

ঘটনার পরে হিন্দু সংগঠনগুলি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে রাজ্যের সমস্ত মন্দিরে নিযুক্ত পূজারীদের যাচাই করার দাবি জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য হল, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এমন অনেক ঘটনা সামনে আসতে পারে যেখানে লোকেরা পরিচয় গোপন করে ধর্মীয় স্থানে বসবাস করছে।

সংগঠনটি আরও বলেছে যে এই ঘটনার তদন্ত এটিএস (Anti-Terrorism Squad) এর মাধ্যমে করানো উচিত যাতে যদি কোনও বড় নেটওয়ার্ক কাজ করে থাকে, তবে তার পুরো সত্য সামনে আনা যায়। তারা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছে যে এটিকে সাধারণ অপরাধ হিসাবে না দেখে, বরং নিরাপত্তা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সাথে জড়িত একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

আপাতত পুলিশ এই পুরো ঘটনার বিস্তারিত তদন্তে নিযুক্ত রয়েছে। কাসিম কীভাবে মন্দিরে এক বছর ধরে নিজেকে পূজারী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল এবং কার মদদে সে এটি করতে সক্ষম হয়েছিল, সেটি এখন তদন্তের বিষয়। স্থানীয় গ্রামীণ এবং সংগঠনগুলির ধারণা যে এই ঘটনাকে দৃষ্টান্ত তৈরি করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।

Leave a comment