জাতীয় যুব দিবস: স্বামী বিবেকানন্দের জীবন ও শিক্ষায় যুবশক্তির অনুপ্রেরণা

জাতীয় যুব দিবস: স্বামী বিবেকানন্দের জীবন ও শিক্ষায় যুবশক্তির অনুপ্রেরণা

প্রতি বছর 12 জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দ জয়ন্তী পালিত হয়, যা জাতীয় যুব দিবস হিসাবেও পরিচিত। এই দিনটি যুবকদের তাঁর জীবন, চিন্তাভাবনা এবং শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার সুযোগ দেয়। বিবেকানন্দজির বার্তা আত্মবিশ্বাস, সেবাপরায়ণতা এবং সমাজের জন্য সক্রিয় অবদানের গুরুত্ব শেখায়।

স্বামী বিবেকানন্দ জয়ন্তী: 12 জানুয়ারি দেশজুড়ে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন পালিত হয়, যা জাতীয় যুব দিবস হিসাবেও স্মরণ করা হয়। এই উপলক্ষে যুবকদের তাঁর আদর্শ, শিক্ষা এবং জীবন মূল্যবোধ থেকে অনুপ্রাণিত করা হয়। কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী স্বামী বিবেকানন্দ শিক্ষা, আত্মবিশ্বাস এবং সমাজসেবার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন এবং যুবকদের তাঁদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার শিক্ষা দিয়েছেন। এই দিনে স্কুল, কলেজ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর চিন্তাভাবনা নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

যুব অনুপ্রেরণার প্রতীক

স্বামী বিবেকানন্দ জয়ন্তী প্রতি বছর 12 জানুয়ারি পালিত হয়। এই দিনের গুরুত্ব শুধুমাত্র তাঁর জন্মদিনে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি জাতীয় যুব দিবস হিসাবেও পালিত হয়। 1984 সালে ভারত সরকার 12 জানুয়ারিকে জাতীয় যুব দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছিল এবং সেই বছরই জাতিসংঘ 'আন্তর্জাতিক যুব বর্ষ' উদযাপন করেছিল। এই দিনের উদ্দেশ্য হল যুবকদের স্বামী বিবেকানন্দের জীবন ও চিন্তাভাবনা থেকে অনুপ্রেরণা দেওয়া এবং তাঁদের সমাজের জন্য সক্রিয় করে তোলা।

স্বামী বিবেকানন্দের জীবন ত্যাগ, জ্ঞান এবং আত্মশক্তির উদাহরণ। তিনি তাঁর গুরু শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের কাছ থেকে জ্ঞান লাভ করেন এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার বার্তা ছড়িয়ে দেন। তিনি যুবকদের শেখাতেন যে আত্মবিশ্বাস, কঠোর পরিশ্রম এবং কর্তব্যপরায়ণতাই জীবনে সাফল্য অর্জনের সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি। তাঁর বিখ্যাত উক্তি, 'ওঠো, জাগো এবং লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত থেমো না', আজও অনুপ্রেরণার উৎস।

জীবন ও প্রাথমিক শিক্ষা

স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ধার্মিক চিন্তাভাবনা দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলেন এবং বাবা-মায়ের সংস্কার তাঁর মধ্যে ঈশ্বরের প্রতি গভীর আস্থা তৈরি করেছিল। 25 বছর বয়সে তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করেন এবং তাঁর জীবন জ্ঞান অন্বেষণ ও সমাজসেবায় উৎসর্গ করেন। তাঁর জীবন থেকে যুবকরা এই শিক্ষা পায় যে জীবনের উদ্দেশ্য কেবল ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং অন্যের জন্য কিছু করাও হওয়া উচিত।

তাঁর চিন্তাভাবনা আজও যুবকদের জন্য প্রাসঙ্গিক। তিনি শিক্ষা, নৈতিকতা এবং সেবাকে একত্রিত করে দেখিয়েছেন যে সমাজ ও দেশের অগ্রগতির জন্য যুবশক্তির সঠিক ব্যবহার অপরিহার্য। বিবেকানন্দজি দেশ ও বিশ্বে ভারতের মর্যাদা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

জাতীয় যুব দিবস ও অনুষ্ঠান

স্বামী বিবেকানন্দ জয়ন্তীতে দেশজুড়ে স্কুল, কলেজ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর চিন্তাভাবনা নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই উপলক্ষে ছাত্রছাত্রী ও যুবকদের তাঁর জীবন ও শিক্ষা থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন কার্যকলাপ, বক্তৃতা এবং আলোচনার আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানগুলির মূল উদ্দেশ্য হল যুবকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব ক্ষমতা এবং সমাজসেবার প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

বিবেকানন্দজির বার্তা হলো যে প্রতিটি যুবকের মধ্যেই অসীম শক্তি রয়েছে, কেবল তাকে চিনতে এবং সঠিক পথে চালিত করতে হবে। তাঁর জীবন দেখায় যে প্রকৃত শক্তি কেবল শারীরিক নয়, মানসিক এবং আধ্যাত্মিকও বটে। যুবকরা তাঁর আদর্শ গ্রহণ করে কেবল নিজেদের জীবনেই সাফল্য অর্জন করতে পারে না, বরং সমাজের জন্যও অবদান রাখতে পারে।

Leave a comment