উত্তরাখণ্ডে নতুন হ্রদ: বন্যার আশঙ্কা, প্রশাসন তৎপর

উত্তরাখণ্ডে নতুন হ্রদ: বন্যার আশঙ্কা, প্রশাসন তৎপর

উত্তরকাশীর ধারালিতে বিপর্যয়ের পর ভাগীরথী নদীর কাছে ক্ষীরগঙ্গা ও তৈলসাং নদীর ধ্বংসাবশেষের কারণে নতুন হ্রদ তৈরি হয়েছে, যা বন্যার একটি গুরুতর হুমকি হয়ে উঠতে পারে। প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞরা পরিস্থিতির উপর সতর্ক নজর রাখছেন এবং জলের স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ম্যানুয়াল চ্যানেলাইজেশন শুরু করা হয়েছে।

Uttarakhand: উত্তরকাশীর ধারালি অঞ্চলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের পরে ভাগীরথী নদীর প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি নতুন হ্রদ তৈরি হয়েছে। এই হ্রদটি ক্ষীরগঙ্গা ও তৈলসাং নদীর ধ্বংসাবশেষ থেকে তৈরি হয়েছে, যা এলাকায় আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। প্রশাসন পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে এবং হ্রদের জলের স্তর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ম্যানুয়াল চ্যানেলাইজেশনের কাজ শুরু করেছে, যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আগে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

নতুন হ্রদের ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনের প্রস্তুতি

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জানিয়েছেন যে এই হ্রদের জল কমাতে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে চ্যানেলাইজেশন করা হবে। ভারী যন্ত্রপাতি এখানে পৌঁছাতে ১০ থেকে ১৫ দিন লাগতে পারে, যেখানে বিপদটি তাৎক্ষণিক। তাই, ৩০ জন কর্মীর একটি দল ম্যানুয়াল কাজে নিযুক্ত রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হিমালয় অঞ্চলে নিয়মিত ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা এবং নর্দমা পরিষ্কার করা জরুরি, যাতে ধ্বংসাবশেষ জমা না হয় এবং নদীর প্রবাহে বাধা না আসে। এছাড়াও, দুর্যোগের পরে তৈরি হওয়া হ্রদগুলির বিজ্ঞানসম্মত অধ্যয়ন এবং ব্যবস্থাপনা বাধ্যতামূলক, যা আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি কমাতে পারে।

ধারালিতে আসা ভয়াবহ বিপর্যয়ের প্রভাব

৫ই আগস্ট ধারালিতে আকস্মিক মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কারণে ক্ষীরগঙ্গা ও তৈলসাং নর্দমায় প্রচুর পরিমাণে ধ্বংসাবশেষ জমা হয়েছে, যার ফলে এই এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই দুর্যোগে বাজার, বাড়িঘর, দোকানপাট ও হোটেল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও, ভাগীরথী নদীর প্রবাহে বাধার কারণে আশেপাশের ভূ-ভাগও সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ কাজের কারণে এ ধরনের বিপদের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। প্রশাসন ও বিজ্ঞানীরা স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলিতভাবে আরও ভালো সমন্বয় ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দিকে কাজ করছেন।

ত্রাণকার্য ও ক্ষতিগ্রস্থদের অবস্থা

ধারালি বিপর্যয়ের পরে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ ও আইটিবিপি-র ত্রাণকারী দল উদ্ধার কাজে নিযুক্ত রয়েছে। এ পর্যন্ত ছয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে ৪৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন, যাদের মধ্যে উত্তরাখণ্ডের ১৪ জন, বিহারের ১২ জন, নেপালের ৯ জন, উত্তর প্রদেশের ৩ জন, রাজস্থানের ১ জন এবং একজন সেনা জওয়ান রয়েছেন। এই অঞ্চলের অর্থনীতি পর্যটনের উপর নির্ভরশীল, যা এখন সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত। হোটেল, দোকান ও পরিবহন পরিষেবা বন্ধ থাকায় স্থানীয় মানুষের জীবিকা নির্বাহের উপর গুরুতর সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ সম্প্রদায় আশা করছে যে সড়ক যোগাযোগ পুনরুদ্ধার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে পর্যটন কার্যক্রম আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

Leave a comment