নিউ টাউনে স্ত্রী হত্যাকাণ্ড গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার দেহ গ্রেপ্তার স্বামী

নিউ টাউনে স্ত্রী হত্যাকাণ্ড গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার দেহ গ্রেপ্তার স্বামী

গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার মৃতদেহ, স্ত্রীর শ্বাসরোধে মৃত্যুর অভিযোগ

নিউ টাউনের সাহা মার্কেট এলাকার একটি গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার হল ২২ বছরের এক তরুণীর মৃতদেহ। মৃতার নাম ইতিকা মণ্ডল, বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার স্বামী-স্ত্রী মিলে ইকোপার্ক ঘুরতে এসেছিলেন এবং রাতেই উঠেছিলেন গেস্ট হাউসে। পরের দিন সকালে আসে এক চাঞ্চল্যকর ফোন—‘এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছেন।’ ১০০ নম্বরে আসা এই ফোনের পর তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নিউ টাউন ও ইকোপার্ক থানার পুলিশ বাহিনী।

ময়নাতদন্তে পাঠানো হল দেহ, তদন্তে সক্রিয় নিউ টাউন থানার পুলিশ

ইতিমধ্যেই ইতিকার মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। নিউ টাউন থানার পুলিশ বিশ্বজিৎকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এসিপি নিউ টাউন, উৎসা শ্রীমানি জানান, একটি ফোন কলের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমরা প্রথমে মৃতদেহ উদ্ধার করি। পরে অভিযুক্তকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করি। পুলিশের অনুমান, এটি রাগ, সন্দেহ এবং দাম্পত্যের টানাপোড়েন থেকে সৃষ্টি হওয়া একটি পূর্বপরিকল্পিত খুন।

অবৈধ কাজের আখড়া হয়ে উঠছে গেস্ট হাউস, অভিযোগ স্থানীয়দের

ঘটনার পরে উঠে এসেছে আরও এক ভয়াবহ তথ্য। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সাহা মার্কেটের ওই গেস্ট হাউস বহুদিন ধরেই বেআইনি কাজের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এমনকি স্কুল পড়ুয়াদের পর্যন্ত এখানে অনায়াসে জায়গা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আমরা বহুবার পুলিশকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি, ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এক বাসিন্দা। এই হত্যাকাণ্ড যেন সেই দীর্ঘদিনের অভিযোগের মঞ্চে একটি হাইভোল্টেজ চূড়ান্ত পরিণতি।

নব্য শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন, ভোটের মুখে প্রশাসনের চাপে তীব্রতা

একদিকে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিউ টাউন-সহ গোটা শহরতলিতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি প্রশাসনের, অন্যদিকে এমন হত্যাকাণ্ড প্রশাসনিক ব্যর্থতার দিকেই আঙুল তুলছে। মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রামীণ সমস্যা সমাধানে প্রকল্প’ ঘোষণার মধ্যেই এই শহুরে নৃশংস হত্যাকাণ্ড যেন রাজনৈতিক এবং সামাজিক নিরাপত্তার ছবিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

মানসিক স্বাস্থ্য, সম্পর্কের টানাপোড়েন ও আইন-শৃঙ্খলার জটিল জট

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ঘটনা শুধুই আইন-শৃঙ্খলার ব্যর্থতা নয়, এটি একটি মানসিক স্বাস্থ্য সংকটেরও প্রতিচ্ছবি। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাসহীনতা, অপ্রস্তুত দাম্পত্য এবং ক্রোধের অপ্রত্যাশিত বিস্ফোরণ একটি তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিল। সমাজকেও এই সংকেত বুঝতে হবে যে, শুধুই কঠোর আইন নয়, প্রয়োজন মানসিক সহায়তাও।

Leave a comment