কেরলে মৃত্যু বারাসতের পরিযায়ী শ্রমিকের, শোকে ছায়া উত্তর ২৪ পরগনায়

কেরলে মৃত্যু বারাসতের পরিযায়ী শ্রমিকের, শোকে ছায়া উত্তর ২৪ পরগনায়

কেরলে দুর্ঘটনায় মৃত্যু:কেরলে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের এক পরিযায়ী শ্রমিকের। মৃতের নাম অভিজিৎ ওরফে রাজু পোদ্দার (৩৪)। কেরালার তুতকুড়ি জেলার ত্রি-চন্দুর এলাকায় একটি মন্দির নির্মাণের কাজ করতে গিয়ে তিনতলা থেকে পড়ে যান তিনি। মাথায় গুরুতর আঘাত লাগায় বৃহস্পতিবার হাসপাতালে মারা যান।

অভিজিতের পরিবারে শোকের ছায়া

নেতাজি পল্লীর বাসিন্দা অভিজিৎ পরিবারে ছিলেন বৃদ্ধ বাবা-মা, দাদা, স্ত্রী ও এক বছরের সন্তান নিয়ে। প্রায় ১৫ দিন আগে বেশি রোজগারের আশায় কেরলে গিয়েছিলেন কাজ করতে। তাঁর মৃত্যু সংবাদে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে সমগ্র পরিবার ও পাড়া-প্রতিবেশী। রবিবার তাঁর দেহ বারাসতে পৌঁছনোর কথা।

ভিন রাজ্যে বারবার শিকার বাঙালি শ্রমিকরা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার ভিন রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের উপর হেনস্থা ও মৃত্যুর ঘটনায় সরব হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, কোথাও ভাষাগত কারণে, কোথাও আবার "বাংলাদেশি" তকমা দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের আক্রান্ত করা হচ্ছে। কিন্তু সেই প্রতিবাদ সত্ত্বেও ভিন রাজ্যে শ্রমিকদের মৃত্যু ও হেনস্থার ঘটনা থামছে না।

স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

বারাসতে শোকাহত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও তৃণমূল নেতা গোপাল রায়। তিনি ভিন রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের সুরক্ষা প্রশ্নে সরব হয়ে প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

আগেও ঘটেছে অনুরূপ ঘটনা

সম্প্রতি জয়পুরেও ভেঙে পড়া পুরনো বাড়ির ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁর মেয়ে। গুরুতর আহত হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। বাংলায় কাজের সুযোগ কম থাকায় প্রতিনিয়ত শ্রমিকেরা ভিন রাজ্যে ছুটে যান, আর সেখানেই দুর্ঘটনার শিকার হন অনেকেই।

কেরলে পরিযায়ী শ্রমিকের এই মৃত্যু আবারও সামনে আনল ভিন রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রশ্ন। পরিবার হারাল আপনজনকে, পাড়া হারাল প্রিয় মানুষটিকে। আগামী দিনে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে রাজ্যের অসংখ্য শ্রমিক পরিবার।

Leave a comment