শ্রীলঙ্কা সফরে পাক সেনাপ্রধান: রাজকীয় আয়োজনে বিতর্ক

শ্রীলঙ্কা সফরে পাক সেনাপ্রধান: রাজকীয় আয়োজনে বিতর্ক

পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির ২০-২৪ জুলাই শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছেন। ফাইভ-স্টার হোটেলে উঠবেন এবং হেলিকপ্টারে করে ভ্রমণ করবেন। অর্থনৈতিক দুর্দশাগ্রস্ত দেশ এই রাজকীয় সফরে ক্ষুব্ধ।

PAK: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এই মাসে শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, এই সফর কূটনৈতিকের চেয়ে বেশি রাজকীয়। প্রাইভেট জেট, ফাইভ স্টার হোটেল এবং হেলিকপ্টারে ঘোরার মতো সুবিধাগুলি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যেখানে পাকিস্তান গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ সেনাপ্রধানের এই সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

সেনাপ্রধানের রাজকীয় পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক

পাকিস্তান এই মুহূর্তে গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দেশের বৈদেশিক ঋণ ১৩৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি হয়ে গেছে। মুদ্রাস্ফীতি চরম পর্যায়ে এবং বেকারত্ব ক্রমাগত বাড়ছে। মানুষ ভর্তুকিযুক্ত রেশন পাওয়ার জন্য পর্যন্ত সংগ্রাম করছে। এরই মধ্যে জেনারেল আসিম মুনিরের বিদেশ সফর আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, সেনাপ্রধান ২০ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা সফরে থাকবেন। এই সফর একদিকে কূটনৈতিক এজেন্ডার অধীনে বলা হচ্ছে, অন্যদিকে এর জমকালো আয়োজন জনগণকে ভাবতে বাধ্য করেছে।

প্রাইভেট জেটে যাত্রা, হেলিকপ্টারে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ

সূত্রের খবর, মুনির স্পেশাল এয়ারক্রাফট অর্থাৎ প্রাইভেট জেটে শ্রীলঙ্কা যাবেন। সেখানে তার অভ্যর্থনার জন্য বাইক এসকর্ট এবং ভিভিআইপি প্রোটোকলের ব্যবস্থা থাকবে। সফরের সময় তিনি শ্রীলঙ্কার প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পরিদর্শন করবেন।

মুনির সিগিরিয়া রক এবং অ্যাডামস পিক-এর মতো বিখ্যাত স্থানগুলিতেও যাবেন। এই সমস্ত ব্যবস্থা এই সফরকে একটি সাধারণ কূটনৈতিক সফরের পরিবর্তে রাজকীয় ছুটিতে পরিণত করেছে।

ফাইভ স্টার হোটেলে থাকার প্রস্তুতি

খবর রয়েছে যে, এই সময় জেনারেল মুনির কলম্বোর একটি বিলাসবহুল ফাইভ স্টার হোটেলে উঠবেন। এটি সেই পাকিস্তান যেখানে সরকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাদের মন্ত্রীদেরও বিদেশ সফরে যেতে বাধা দিয়েছে এবং সরকারি খরচ কমানোর কথা বলেছে। এমন পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধানের জন্য করা এই রাজকীয় ব্যবস্থা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না।

সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ

পাকিস্তানের জনগণ এই সফর নিয়ে ক্ষুব্ধ। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে, যখন দেশ অর্থনৈতিকভাবে জর্জরিত এবং সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না, তখন সেনাপ্রধানের এই ধরনের সফর কেন হচ্ছে?

গত কয়েক মাস ধরে, এটি প্রথমবার নয় যখন মুনিরের বিদেশ সফর বিতর্কে এসেছে। এর আগে আমেরিকা সফরের সময়ও খবর এসেছিল যে তিনি সেখানে দামি শপিং মলে কেনাকাটা করেছেন, যা নিয়ে জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

মন্ত্রীদের বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা

পাকিস্তান সরকার সম্প্রতি আর্থিক সংকটের কারণে মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মন্ত্রীদের এখন অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এবং দামি হোটেলে থাকার অনুমতি নেই। কিন্তু সেনাপ্রধানের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। এর একটি বড় কারণ হল পাকিস্তানের ক্ষমতা কাঠামোতে সেনাবাহিনীর আধিপত্য সবসময় ছিল।

Leave a comment