ভারতের প্রত্যাঘাত ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তানের পরমাণু হুমকি ব্যর্থ। পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ স্বীকার করেছেন যে তাঁদের নিউক্লিয়ার প্রোগ্রাম শুধুমাত্র শান্তি ও সুরক্ষার উদ্দেশ্যে।
পাকিস্তান: ভারতের তরফে সম্প্রতি সম্পাদিত ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তান তাদের অবস্থানে বড় পরিবর্তন দেখিয়েছে। যেখানে আগে পাকিস্তানের তরফে পরমাণু হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, সেখানে এখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নিজেই স্বীকার করেছেন যে তাঁদের পরমাণু কর্মসূচি আগ্রাসনের জন্য নয়, বরং শান্তি বজায় রাখার জন্য।
পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক
২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে একটি বড়সড় সন্ত্রাসী হামলা হয়। এর জবাবে ভারত পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK)-এ অবস্থিত মোট ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে নির্ভুল হামলা চালায়। এই হামলাগুলিকে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দেওয়া হয়। এই অভিযান এতই নির্ভুল এবং দ্রুত ছিল যে পাকিস্তান সম্পূর্ণভাবে হতচকিত হয়ে যায়।
এগুলির মধ্যে একটি ঘাঁটি ছিল বাহাওয়ালপুরে, যা জইশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ভারতের এই পদক্ষেপে পাকিস্তানের সামরিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা টালমাটাল হয়ে যায়।
পাকিস্তানের প্রথম প্রতিক্রিয়া: পরমাণু হুমকি
ভারতের এই পদক্ষেপের পর পাকিস্তানের দিক থেকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করা হয়। যদিও ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই সমস্ত হামলা ব্যর্থ করে দেয়। এরপর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধানরা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিতে শুরু করেন।
ISI-এর প্রাক্তন ডিজি জাভেদ আশরাফ কাজী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন যে, যেমন জাপানের উপর দুটি পরমাণু বোমা ফেলা হয়েছিল, তেমনই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হলে ফল আরও ভয়াবহ হবে। তিনি আরও বলেন যে উভয় দেশের কাছে প্রায় ১৭০টি পরমাণু বোমা রয়েছে, যা বিরাট ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে পারে।
শাহবাজ শরিফের সুর পরিবর্তন, শান্তির বার্তা
যদিও, এখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের একটি বিবৃতি এসেছে, যেখানে তিনি ভারতের সঙ্গে পরমাণু সংঘর্ষের আশঙ্কাকে খারিজ করেছেন। ইসলামাবাদে ছাত্রদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় শাহবাজ শরিফ বলেন যে পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তি বজায় রাখা এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য।
তিনি বলেন, “আমাদের পরমাণু কর্মসূচি শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা এবং স্থিতিশীলতার উদ্দেশ্যে, এর ব্যবহার আগ্রাসী পদক্ষেপের জন্য করা হবে না।” তাঁর এই বক্তব্য স্পষ্ট করে যে ভারতের সামরিক পদক্ষেপের পর পাকিস্তানকে তাদের অবস্থানে পরিবর্তন করতে হয়েছে।
পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল ব্যর্থ
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ‘নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল’-এর কৌশল অবলম্বন করে আসছে। যখনই ভারত কোনো কঠিন পদক্ষেপ নেয়, পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব পরমাণু হামলার হুমকি দিতে শুরু করে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ভারত কেবল সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করেনি, বরং পাকিস্তানের পরমাণু হুমকির একটি সঠিক ও শান্তিপূর্ণ জবাবও দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর কড়া বার্তা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এখন পাকিস্তানের “প্রক্সি যুদ্ধ”-কে(Proxy War) বাস্তব যুদ্ধ হিসেবে দেখা হবে এবং সেটির জবাব সেই স্তরেই দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন যে, সীমান্ত পেরিয়ে কোনো সন্ত্রাসী হামলা হলে, তাকে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং ভারত জবাব দিতে দ্বিধা করবে না।