নীতীশ কুমার ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে বিহারে ১ কোটি যুবককে চাকরি দেওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছেন। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সরকারি, বেসরকারি এবং শিল্প ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা চালানো হবে। দক্ষতা বিকাশের উপরও জোর দেওয়া হবে।
বিহার নির্বাচন: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কর্মসংস্থান নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, সরকার আগামী পাঁচ বছরে অর্থাৎ ২০২৫ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত এক কোটি যুবককে চাকরি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবে। এই লক্ষ্য আগে নির্ধারিত ৫০ লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতির দ্বিগুণ। নীতীশ কুমার বলেছেন যে রাজ্য সরকার কেবল সরকারি চাকরির উপরই নয়, বরং বেসরকারি এবং শিল্প খাতেও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর উপর মনোযোগ দেবে।
সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রের উপর জোর
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে, যা পরিকল্পনা প্রণয়ন থেকে শুরু করে তার কার্যকরীকরণের তদারকি করবে। এই কমিটির দায়িত্ব হবে যুবকদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সময়মতো কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করা। তিনি আরও বলেন, বেসরকারি কোম্পানি ও শিল্প ইউনিটগুলিকে বিহারে বিনিয়োগের জন্য আকৃষ্ট করা হবে, যাতে আরও বেশি সংখ্যক চাকরি তৈরি হতে পারে।
দক্ষতা বিকাশকে উৎসাহিত করা হবে
সরকার ইতোমধ্যেই 'সাত নিশ্চয় যোজনা'-র অধীনে যুবকদের দক্ষতা উন্নয়ন (Skill Development) প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে আগামী দিনে এই পরিকল্পনাকে আরও বিস্তৃত করা হবে, যাতে প্রত্যেক যুবক তার রুচি ও যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান অথবা স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। এর সঙ্গে, একটি নতুন উদ্যোগের অধীনে রাজ্যে 'জননায়ক কর্পূরী ঠাকুর কৌশল বিশ্ববিদ্যালয়' স্থাপন করা হবে, যা প্রযুক্তিগত এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষায় বিশেষজ্ঞতা দেবে।
২০২০ সাল পর্যন্ত ট্র্যাক রেকর্ড
মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আগের প্রকল্পগুলির অগ্রগতির কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে ২০০৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত রাজ্যে ৮ লক্ষেরও বেশি যুবককে সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে। এরপর, ২০২০ সালে 'সাত নিশ্চয়-২'-এর অধীনে ১০ লক্ষ সরকারি চাকরি এবং ১০ লক্ষ অন্যান্য কর্মসংস্থান দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই লক্ষ্য পরে সংশোধন করে ১২ লক্ষ সরকারি চাকরি এবং ৩৮ লক্ষ কর্মসংস্থান, অর্থাৎ মোট ৫০ লক্ষ সুযোগের লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করা হয়েছিল। নীতীশ কুমার দাবি করেছেন যে এই লক্ষ্য সময় মতো পূরণ করা হবে।
২০২৫ থেকে ২০৩০ পর্যন্ত নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ
এবার সরকার এই দিকে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে ২০২৫ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত এক কোটি যুবককে চাকরি এবং কর্মসংস্থান দেওয়ার নতুন এবং বৃহত্তর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, বিহারের উন্নতিতে যুবকদের অংশগ্রহণ জরুরি এবং সরকার এই দিকে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে।
কর্মসংস্থান-সংক্রান্ত প্রতিটি সেক্টরের তদারকি করা হবে
নতুন কৌশল অনুসারে, কেবল সরকারি নিয়োগের উপর নির্ভর করা হবে না, বরং স্ব-কর্মসংস্থান, ব্যক্তিগত বিনিয়োগ, স্টার্টআপ, নির্মাণ এবং প্রযুক্তিগত সেক্টরেও যুবকদের সুযোগ দেওয়া হবে। এর জন্য, প্রতিটি সেক্টরের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং সময়ে সময়ে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনও করা হবে।
রাজ্যে কর্মসংস্থান-বান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে
সরকারের আরও একটি প্রচেষ্টা হল বিহারকে বিনিয়োগের জন্য একটি আকর্ষণীয় রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা, যাতে নতুন শিল্প স্থাপন করা যায় এবং চাকরির সংখ্যা দ্রুত বাড়ে। এর জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, যেমন বিদ্যুৎ, সড়ক, পরিবহন এবং শিক্ষার উপরও কাজ করা হবে।