পাকিস্তানি ক্রিকেটার হায়দার আলিকে (Haider Ali) ইংল্যান্ডের আদালত থেকে বড় স্বস্তি মিলেছে। তাঁর বিরুদ্ধে এক ব্রিটিশ-পাকিস্তানি মহিলা ধর্ষণের গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন, যার জেরে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।
স্পোর্টস নিউজ: পাকিস্তানি ক্রিকেটার হায়দার আলি সংক্রান্ত একটি বড় খবর সামনে এসেছে। কয়েকদিন আগে তাঁকে লন্ডনে গ্রেফতার করা হয়েছিল, যখন তিনি পাকিস্তান শাহীন দলের হয়ে মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের বিরুদ্ধে ক্যান্টারবেরি মাঠে ম্যাচ খেলতে এসেছিলেন। ম্যানচেস্টার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল, কারণ তাঁর বিরুদ্ধে এক ব্রিটিশ-পাকিস্তানি মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন।
এই ঘটনার পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB) তাঁকে অবিলম্বে নিলম্বিত করেছিল। তবে এখন হায়দার আলি আদালত থেকে বড় স্বস্তি পেয়েছেন। আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিয়ে তাঁকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে।
লন্ডনে হায়দার আলির গ্রেফতার
হায়দার আলিকে ইংল্যান্ডে সেই সময় গ্রেফতার করা হয়েছিল যখন তিনি পাকিস্তান শাহীন দলের হয়ে ম্যাচ খেলছিলেন। ক্যান্টারবেরি মাঠে মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলার সময় ম্যানচেস্টার পুলিশ মাঠ থেকেই তাঁকে হেফাজতে নেয়। গ্রেফতারের পর থেকেই তিনি আইনি প্রক্রিয়ায় আটকে ছিলেন এবং আদালত তাঁকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল।
এই অভিযোগটি এক ব্রিটিশ-পাকিস্তানি মহিলা দায়ের করেছিলেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে ২০২৩ সালের ২৩শে জুলাই ম্যানচেস্টারের একটি হোটেলে তাঁদের প্রথম দেখা হয়েছিল। এরপর তাঁরা ২০২১ সালের ১লা আগস্ট অ্যাশফোর্ডে আবার দেখা করেন। মহিলা আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে পুলিশে একটি রিপোর্ট দায়ের করেন এবং হায়দার আলির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয় এবং খেলোয়াড়কে গ্রেফতার করে। তবে, আদালত এখন দেখেছে যে মহিলার অভিযোগ প্রমাণ করার জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই।
আদালত নির্দোষ ঘোষণা করল, ফিরিয়ে দিল পাসপোর্ট
লন্ডন আদালত তার রায়ে স্পষ্টভাবে বলেছে যে উপলব্ধ প্রমাণের ভিত্তিতে ধর্ষণের মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়ে হায়দার আলিকে মুক্তি দিয়েছে। এছাড়াও, তাঁর পাসপোর্টও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার অর্থ হল তিনি এখন পাকিস্তানে ফিরে যেতে পারেন বা যুক্তরাজ্য সহ যেকোনো জায়গায় ভ্রমণ করতে পারেন।
হায়দার আলির পক্ষে আইনি লড়াই করা ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মইন খান যুক্তি দিয়েছিলেন যে অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন এবং কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেশ করা হয়নি। আদালত তাঁর যুক্তি গ্রহণ করেছে।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড হায়দার আলিকে নিলম্বিত করেছিল। বোর্ড স্পষ্ট করেছিল যে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত খেলোয়াড় কোনও ক্রিকেটীয় কার্যকলাপের অংশ হতে পারবে না। এখন আদালতের রায়ের পর আশা করা হচ্ছে যে পিসিবি শীঘ্রই তাঁর ওপর থেকে নিলম্বন প্রত্যাহার করতে পারে।
হায়দার আলির ক্রিকেট ক্যারিয়ার
২৪ বছর বয়সী হায়দার আলি পাকিস্তানের হয়ে এ পর্যন্ত ৩৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন।
- টি২০আই: ৩৫ ম্যাচ, ৫০৫ রান
- ওডিআই: ২ ম্যাচ
হায়দারকে উদীয়মান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে গণ্য করা হয়। তিনি পাকিস্তান সুপার লিগেও (PSL) দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে নিজের পরিচিতি তৈরি করেছিলেন। ধর্ষণের মামলার কারণে তাঁর ক্যারিয়ার মাঝপথে থেমে গিয়েছিল, তবে এখন আদালতের রায়ের পর তাঁর আবারও মাঠে ফেরার সম্ভাবনা বেড়েছে।