पटना এইমসের ডাক্তাররা আজ ধর্মঘটে। ওপিডি এবং জরুরি পরিষেবা শর্তসাপেক্ষে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিধায়ক চেতন আনন্দ এবং তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের হামলার প্রতিবাদে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
Patna AIIMS: পাটনা এইমস (AIIMS Patna)-এর ডাক্তাররা শুক্রবার একদিনের জন্য ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (RDA) বৃহস্পতিবার রাতে এই ধর্মঘটের ঘোষণা করে। ধর্মঘটের কারণে হাসপাতালের ওপিডি (Outpatient Department) এবং জরুরি বিভাগও বন্ধ থাকবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে সেই সমস্ত রোগী ও তাঁদের পরিবারের ওপর, যাঁরা চিকিৎসার জন্য এইমসে আসেন।
ধর্মঘটের কারণ: বিধায়ক ও নিরাপত্তারক্ষীদের দুর্ব্যবহার
ডাক্তারদের এই ধর্মঘটের প্রধান কারণ একটি অত্যন্ত গুরুতর ঘটনা। আরডিএ-র মতে, বিহারের শিবহরের বিধায়ক চেতন আনন্দ, তাঁর স্ত্রী ড. আયુষি সিং এবং তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা জোর করে এইমস চত্বরে প্রবেশ করেন। এই সময় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় এবং ডাক্তারদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। আরডিএ আরও দাবি করেছে যে, হাসপাতাল চত্বরে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করা হয়েছে এবং ডাক্তারদের ভয় দেখানো হয়েছে।
হাসপাতাল চত্বরে আগ্নেয়াস্ত্র দেখানোর অভিযোগ
ঘটনাটি এইমসের ট্রমা সেন্টারে ঘটেছে, যেখানে বিধায়ক ও তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা জোর করে প্রবেশ করেন। ডাক্তারদের অভিযোগ, বিধায়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা উপেক্ষা করে হাসপাতালের নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা অস্ত্র নিয়ে ভিতরে ঢোকেন এবং রেসিডেন্ট ডাক্তারদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেন।
NAFORD-এর সমর্থন
ডাক্তারদের সমর্থনে NAFORD (National Association of Resident Doctors) এগিয়ে এসেছে। NAFORD সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'X' (পূর্বে টুইটার)-এ পোস্ট করে জানিয়েছে যে, তারা পাটনা এইমসের ডাক্তারদের পাশে আছে। তাঁরা এফআইআর দায়ের করা, হাসপাতালে নিরাপত্তা বাড়ানো এবং জাতীয় স্তরে ডাক্তারদের নিরাপত্তার জন্য আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন। NAFORD লিখেছে যে, ডাক্তারদের ওপর হামলা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর হামলা এবং এটা বরদাস্ত করা হবে না।
পুলিশের মামলা দায়ের
ঘটনার পর এইমস প্রশাসন বিধায়ক চেতন আনন্দ, তাঁর স্ত্রী ড. আયુষি সিং এবং দুই নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে ফুলওয়ারি শরিফ থানায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ এফআইআর করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ দল হাসপাতাল চত্বর থেকে প্রমাণ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।
পরিষেবা বন্ধ, রোগীরা হয়রান
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে ধর্মঘট শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এইমসের ওপিডি এবং জরুরি পরিষেবা প্রভাবিত হয়েছে। বহু রোগী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। হাসপাতাল প্রশাসন এখনও পর্যন্ত পরিষেবা স্বাভাবিক করার জন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেয়নি। রোগী ও তাঁদের পরিবারকে চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ডাক্তারদের দাবি
রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান দাবি হল, হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। সেই সঙ্গে বিধায়ক চেতন আনন্দ ও তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ডাক্তারদের বক্তব্য, যদি দোষীদের দ্রুত এবং কঠোর শাস্তি না দেওয়া হয়, তাহলে ধর্মঘট আরও বাড়ানো হতে পারে।