মহিলাদের প্রজননচক্র অনুযায়ী কিছু নির্দিষ্ট দিন গর্ভধারণের ঝুঁকি থেকে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ থাকে। চিকিৎসকরা এই দিনগুলিকে ‘সেফ পিরিয়ড’ বা নিরাপদ দিন হিসেবে চিহ্নিত করেন। নিয়মিত ঋতুচক্রের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিকে ক্যালেন্ডার পদ্ধতি বলা হয়। তবে অনেকেই ভুল ধারণায় অযথা গর্ভনিরোধক ওষুধ সেবন করেন, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, নিজের ঋতুচক্র বুঝে প্রাকৃতিকভাবে পরিকল্পনা নিন।

‘সেফ পিরিয়ড’ কী এবং কীভাবে হিসেব করবেন?
চিকিৎসকদের মতে, ঋতুচক্রের প্রথম দিন থেকে গণনা শুরু করতে হয়। সাধারণত ২৮ দিনের সাইকেলে প্রথম ৭ দিন ও শেষ ৭ দিন নিরাপদ। এর বাইরে প্রায় ১০ থেকে ২০ নম্বর দিন পর্যন্ত সময়কে অনিরাপদ ধরা হয়, কারণ এই সময়ে ডিম্বাণু উৎপাদনের সম্ভাবনা বেশি থাকে।যদি কারও পিরিয়ড অনিয়মিত হয়, এই ক্যালেন্ডার পদ্ধতি কার্যকর হয় না। তাই সঠিকভাবে এই হিসেব করতে হলে মাসিকচক্র নিয়মিত রাখা জরুরি।

সহজ ক্যালেন্ডার পদ্ধতি জানুন
যদি আপনার মাসিকচক্র ২৮ দিন হয়, তবে ২৮-১৮ = ১০ দিন — অর্থাৎ, প্রথম ৯ দিন নিরাপদ। ১০ থেকে ২০ দিনের মধ্যে গর্ভধারণের ঝুঁকি বেশি। এরপর ২১তম দিন থেকে আবার নিরাপদ দিন শুরু হয়।চিকিৎসকরা জানান, স্পার্ম সাধারণত জরায়ুতে ৩ দিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। তাই এই ৩ দিনের মধ্যে ডিম্বাণু উৎপন্ন হলে গর্ভধারণ হতে পারে।

গর্ভনিরোধক ট্যাবলেটের ঝুঁকি
চিকিৎসকদের মতে, অযথা গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট খাওয়া শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। এতে ওজন বৃদ্ধি, মেজাজ পরিবর্তন, ত্বকের সমস্যা ও মাসিক অনিয়ম দেখা দিতে পারে। তাই ওষুধ না খেয়ে প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিই নিরাপদ বিকল্প হতে পারে।

সুরক্ষা ব্যবহার সবসময় জরুরি
ডা. ফাহমিদা সুলতানা জানান, আপনি প্রেগন্যান্ট না হলেও অসুরক্ষিত যৌনমিলনের ফলে যৌনরোগের ঝুঁকি থাকে। তাই সেফ পিরিয়ড হলেও কন্ডোম ব্যবহার করা জরুরি। এটি শুধু গর্ভধারণ রোধই নয়, যৌনরোগ থেকেও সুরক্ষা দেয়।

গর্ভনিরোধক ওষুধ না খেয়ে স্বাভাবিক উপায়ে গর্ভধারণের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। চিকিৎসকদের মতে, মাসিকচক্রে কিছু নির্দিষ্ট দিনকে “নিরাপদ দিন” বলা হয়, যেখানে প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা কম থাকে। তবে এই সময় সুরক্ষা ব্যবহার করাও জরুরি, নইলে যৌনরোগের ঝুঁকি থাকে।













