দেওঘর সফরের সময় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গুরুতর ত্রুটি দেখা দিয়েছে। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ঝাড়খণ্ড পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
Jharkhand: ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সাম্প্রতিক সফরে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড়সড় ত্রুটি ধরা পড়েছে। বিজেপি সাংসদ ড. নিশিকান্ত দুবে এই ঘটনা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন এবং রাজ্যের পুলিশ ব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন।
দেওঘরে কী ঘটেছিল?
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মুর্মু দেওঘরে এইমসের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। সেই সময়, তাঁর কনভয়ের রুট নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। জানা যায়, রাষ্ট্রপতি একটি নির্দিষ্ট রুটের পরিবর্তে অন্য পথে চলে যান, যেখানে নিরাপত্তা কনভয় অন্য রুটে এগিয়ে যায়। বলা হয়েছে যে, কোনও ভিআইপি, বিশেষ করে দেশের রাষ্ট্রপতির জন্য নির্ধারিত রুট থেকে বিচ্যুতি নিরাপত্তা দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়।
সাংসদ দুবের কড়া প্রতিক্রিয়া
দেওঘরের বিজেপি সাংসদ ড. নিশিকান্ত দুবে এই ঘটনা নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X (পূর্বে টুইটার)-এ পোস্ট করে লিখেছেন, "ভারতের রাষ্ট্রপতি দেওঘরে এসেছিলেন, কিন্তু ঝাড়খণ্ড পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মারাত্মক ত্রুটি করেছে। যখন অবৈধ পুলিশ মহানির্দেশক এবং পার্টিবাজিতে লিপ্ত পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট-এর মতো আধিকারিক থাকবেন, তখন এটাই হবে।"
দুবে-র এই বক্তব্য তাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে, কারণ তিনি ঝাড়খণ্ডের ডিজিপি অনুরাগ গুপ্তকে "অবৈধ" আখ্যা দিয়েছেন, যেখানে তিনি ১৯৯০ ব্যাচের আইপিএস আধিকারিক এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে যথাযথভাবে ডিজিপি নিযুক্ত হয়েছিলেন।
গণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
সাংসদ দুবে প্রশ্ন তুলেছেন যে, যখন রাষ্ট্রপতি-র মতো শীর্ষ পদে থাকা ব্যক্তির নিরাপত্তায় এত বড় গাফিলতি হতে পারে, তখন সাধারণ নাগরিকরা কতটা সুরক্ষিত? তিনি বলেছেন যে, এটি শুধু একটি প্রশাসনিক ত্রুটি নয়, বরং গণ নিরাপত্তা এবং রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর গুরুতর প্রশ্নচিহ্ন।
রাজনৈতিক বাগবিতণ্ডা তুঙ্গে
এই ইস্যুতে রাজনৈতিক উত্তাপও বেড়েছে। বিজেপির সমর্থনে অনেক ব্যবহারকারী এবং নেতা X-এ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ এটিকে কংগ্রেস শাসিত ঝাড়খণ্ডে খারাপ হওয়া আইন-শৃঙ্খলার প্রমাণ বলেছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা নিয়ে ছেলেখেলা করার শামিল বলেছেন।
অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলোও বিজেপির পাল্টা সমালোচনা করেছে। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে কি নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারে নিখুঁত? কেউ কেউ বিহার এবং অন্যান্য রাজ্যের উদাহরণ দিয়ে বিজেপির সমালোচনা করেছেন।
পুলিশের নীরবতা এবং প্রশ্ন
ঘটনাটি নিয়ে এখনও পর্যন্ত ঝাড়খণ্ড পুলিশ বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। রাষ্ট্রপতির রুটে কেন পরিবর্তন করা হয়েছিল এবং এটি নিরাপত্তা প্রোটোকলের অংশ ছিল নাকি গাফিলতি, সে বিষয়েও কিছু জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি মুর্মু জুন ২০২৫-এও দেওঘর সফর করেছিলেন, যেখানে নিরাপত্তার কড়া ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই সময় স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছিল এবং কোনও ত্রুটি ধরা পড়েনি। কিন্তু এইবারের ঘটনা কর্মকর্তাদের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।