গুরুগ্রামে রাধিকা যাদব হত্যা: বন্ধু হিমাংশিকার ভিডিওতে চাঞ্চল্যকর তথ্য, তদন্তের পথে পুলিশ

গুরুগ্রামে রাধিকা যাদব হত্যা: বন্ধু হিমাংশিকার ভিডিওতে চাঞ্চল্যকর তথ্য, তদন্তের পথে পুলিশ

গুরুগ্রামে রাধিকা যাদবের হত্যা মামলায় নতুন মোড়। বন্ধু হিমাংশিকার ভিডিও থেকে হত্যার ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত মিলেছে। পুলিশ বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

Radhika Yadav News: গুরুগ্রামে জাতীয় স্তরের টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের হত্যার ঘটনায় একটি নতুন মোড় এসেছে। পুলিশ এখন রাধিকার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিমাংশিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে। এর কারণ হল হিমাংশিকা দুটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। এই ভিডিওগুলিতে তিনি রাধিকার বাবার বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের গুরুতর অভিযোগ করেছেন।

কে হিমাংশিকা এবং কেন তিনি তদন্তের আওতায় এলেন?

রাধিকার বন্ধু হিমাংশিকা ইনস্টাগ্রামে দুটি আলাদা ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। প্রথম ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন যে রাধিকা একজন স্বাধীনচেতা মেয়ে ছিলেন এবং তিনি খোলামেলাভাবে নিজের জীবন যাপন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার পরিবারে তার উপর অনেক ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হত, যার কারণে তিনি দমবন্ধ অনুভব করতেন।

দ্বিতীয় ভিডিওতে, হিমাংশিকা এই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন যে রাধিকার বাবা দীপক যাদব তিন দিন আগেই হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তার কাছে আগে থেকেই রিভলবার ছিল। তিনি আগে থেকেই পরিকল্পনা অনুযায়ী বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের আলাদা আলাদা জায়গায় পাঠিয়েছিলেন এবং তারপর রাধিকাকে গুলি করেন।

পুলিশ ভিডিওটি নজরে এনেছে, শীঘ্রই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে

গুরুগ্রাম পুলিশ এই ভিডিওগুলি নজরে এনেছে এবং এখন হিমাংশিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুলিশ জানতে চাইছে, তিনি কোন তথ্যের ভিত্তিতে এই দাবি করেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, হিমাংশিকার যদি আগে থেকে কোনো তথ্য জানা ছিল, তাহলে তিনি ঘটনার আগে কেন পুলিশকে জানাননি। একই সময়ে, তদন্তকারীরা এখন জানতে চান যে হিমাংশিকার বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য কিনা বা তিনি কোনো প্রমাণ ছাড়াই এই কথাগুলি বলেছেন কিনা।

ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছিল: রান্নাঘরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল

ঘটনাটি ১০ জুলাই সকালের। গুরুগ্রামের সেক্টর-৫৭-এর বাড়িতে যখন রাধিকা রান্নাঘরে খাবার তৈরি করছিলেন, তখনই তার বাবা দীপক যাদব তাকে চারটি গুলি করেন।

দীপক যাদব হত্যার পর দাবি করেন যে গ্রামের কিছু লোক তাকে “মেয়ের রোজগার খাওয়া লোক” এবং “ছোটলোক বাবা” বলে কটূক্তি করত। তিনি বলেন, এই অপমানের কারণে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে এই যুক্তি গ্রামের লোক এবং স্থানীয়দেরও বোধগম্য হয়নি।

রাধিকার পোষা কুকুরও কি পরিকল্পনার অংশ ছিল?

হিমাংশিকার ভিডিওতে আরও একটি আকর্ষণীয় দাবি করা হয়েছে যে রাধিকার কাছে ‘লুনা’ নামের একটি পোষা কুকুর ছিল। হত্যার আগে রাধিকার বাবা সেই কুকুরটিকেও বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে রাধিকা সতর্ক না হন।

এছাড়াও, তিনি তার স্ত্রীকে অন্য একটি ঘরে বন্দী করে রাখেন এবং ছেলেকে কোনো অজুহাতে বাড়ি থেকে বাইরে পাঠান। এর থেকে এই আশঙ্কা আরও গভীর হয় যে এই হত্যা পূর্বপরিকল্পিত ছিল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন এবং জনগণের প্রতিক্রিয়া

রাধিকার হত্যার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ এটিকে অনার কিলিং বলছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে মানসিক চাপ থেকে উদ্ভূত পারিবারিক সমস্যা হিসেবে দেখছেন।

হিমাংশিকার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি আরও সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে। মানুষ প্রশ্ন করছে যে রাধিকা যদি তার নিজের বাড়িতে নিরাপদ না থাকে, তাহলে সমাজ এবং সিস্টেম কি তাকে বাঁচাতে পারত?

Leave a comment