রাধিকা যাদব হত্যা: তদন্তে নতুন সূত্র, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের ডেটা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা

রাধিকা যাদব হত্যা: তদন্তে নতুন সূত্র, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের ডেটা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা

হরিয়ানার গুরুগ্রামে টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের হত্যার তদন্তে নতুন গুরুত্বপূর্ণ সূত্র উঠে আসছে। পুলিশ রাধিকার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি নিজেদের দখলে নিয়েছে, পাশাপাশি তাঁর মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে ফোনের পাসওয়ার্ড পুলিশের কাছে নেই, তবে প্রযুক্তিগত দল সেটিকে আনলক করে ডেটা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে। তদন্তের সময় এটাও জানা গেছে যে রাধিকার বাবা দীপক যাদব মেয়ের সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপ একেবারেই পছন্দ করতেন না এবং তিনি বহুবার তাকে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করতে বলেছিলেন।

ব্যক্তিগত ছিল রাধিকার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট

পুলিশের তদন্তে রাধিকার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। এই অ্যাকাউন্টটি ব্যক্তিগত ছিল এবং এতে মাত্র ৬৯ জন ফলোয়ার ছিল, যেখানে রাধিকা নিজে ৬৭ জনকে ফলো করতেন। অ্যাকাউন্টে মোট ছয়টি ছবি আপলোড করা হয়েছিল, যা থেকে স্পষ্ট যে অ্যাকাউন্টটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত রাখা হয়েছিল এবং সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। অ্যাকাউন্টের বায়োতে স্প্যানিশ ভাষায় লেখা ছিল, “Todo pasa por algo,” যার অর্থ হল “সবকিছু কোনো না কোনো কারণে ঘটে।”

এই ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলটি রাধিকার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিমাংশিকা সিং-এর একটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরির মাধ্যমে সামনে আসে। হিমাংশিকা রাধিকার একটি ছবি শেয়ার করে তাকে ট্যাগ করেছিলেন, যা থেকে পুলিশ অ্যাকাউন্টটি খুঁজে পায়। এর থেকে পুলিশের ধারণা, রাধিকার সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত অনেক রহস্য উন্মোচিত হবে।

সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ডিলিট

পুলিশের মতে, রাধিকা আইফোন ব্যবহার করতেন এবং তাঁর ফোনের পাসওয়ার্ড পরিবারের কারও জানা ছিল না। তদন্তে আরও জানা গেছে যে, হত্যার কয়েক দিন আগে রাধিকা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো ডিলিট করে দিয়েছিলেন। যদিও, সম্প্রতি তাঁর একটি ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল বন্ধুর মাধ্যমে সামনে এসেছে, যেটির ওপর পুলিশ গভীর ভাবে তদন্ত করছে। গুরুগ্রাম পুলিশ রাধিকার সেই বন্ধুর বয়ানও রেকর্ড করতে পারে, যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছেন যে, হত্যাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পনা মাফিক করা হয়েছিল।

রাধিকা একজন আন্তর্জাতিক টেনিস খেলোয়াড় এবং কোচ ছিলেন। তাঁর একটি মিউজিক ভিডিওও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তাঁর বন্ধু জানিয়েছিলেন যে রাধিকা ছবি এবং ভিডিও করতে খুব পছন্দ করতেন, তাই তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট সবসময় সক্রিয় থাকত। কিন্তু বাবার অসন্তুষ্টি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর সক্রিয়তার মধ্যেকার ব্যবধানই সম্ভবত হত্যার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফোন আনলক করে নতুন প্রমাণ সংগ্রহ করা হবে

গুরুগ্রাম পুলিশ রাধিকার মোবাইল ফোন হরিয়ানার Department of Information Technology Electronics & Communication (DITECH)-এ পাঠিয়েছে। সেখানে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা ফোনটি আনলক করে ডেটা পুনরুদ্ধার করবেন। এই প্রক্রিয়ায় ডিলিট হওয়া বার্তা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। এর মাধ্যমে পুলিশ জানার চেষ্টা করবে যে, রাধিকা সম্প্রতি কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এছাড়াও, তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় কতগুলি প্রোফাইল ছিল এবং তিনি কোন কোন প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় ছিলেন, সেই বিষয়েও তদন্ত করা হবে।

এই নতুন তথ্যের মাধ্যমে পুলিশের তদন্ত আরও শক্তিশালী হবে এবং মামলার জট খুলতে সাহায্য করবে। রাধিকা যাদবের জীবন ও মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত অনেক অজানা বিষয় ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসছে।

Leave a comment