রাহুল গান্ধী সেনা বিষয়ক মন্তব্যের মামলায় লখনউ আদালতে হাজিরা

রাহুল গান্ধী সেনা বিষয়ক মন্তব্যের মামলায় লখনউ আদালতে হাজিরা

রাহুল গান্ধী সেনা বিষয়ক মন্তব্যের মামলায় লখনউয়ের এমপি-এমএলএ আদালতে হাজিরা দিলেন। আদালতে ছিল ব্যাপক নিরাপত্তা এবং কংগ্রেস নেতাদের উপস্থিতি। মামলার পরবর্তী শুনানি ২২ জুলাই তারিখে হবে।

রাহুল গান্ধী: রাহুল গান্ধী সম্প্রতি ভারতীয় সেনা সম্পর্কে করা একটি মন্তব্যের অভিযোগে লখনউয়ের এমপি-এমএলএ আদালতে হাজির হন। এই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সীমান্ত সড়ক সংস্থা (BRO)-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর উদয় শংকর শ্রীবাস্তব মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভারত জোড়ো যাত্রা চলাকালীন গালওয়ান সংঘর্ষ নিয়ে ভারতীয় সেনার সম্মানহানি হয় এমন মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

আদালতে পৌঁছানোর পর কংগ্রেস নেতা ও পুলিশের মধ্যে বচসা

মঙ্গলবার রাহুল গান্ধী লখনউয়ের এমপি-এমএলএ আদালতে হাজির হন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের বহু শীর্ষ নেতা এবং বিপুল সংখ্যক সমর্থক। বিমানবন্দর থেকে আদালত চত্বর পর্যন্ত রাহুলের কনভয় পৌঁছালে সেখানকার পরিবেশ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক রঙে ঢেকে যায়। কংগ্রেস প্রদেশ সভাপতি অজয় রাই, রাজ্যসভার সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারি, প্রাক্তন মন্ত্রী নাসিরুদ্দিন সিদ্দিকী এবং সাংসদ তনুজ পুনিয়াসহ বহু নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ছিলেন।

তবে, আদালত চত্বরে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয় যখন সিনিয়র কংগ্রেস নেতাদের পুলিশ ভিতরে যেতে বাধা দেয়। রাহুল গান্ধীর কনভয়কে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও, অন্যান্য নেতাদের বাধা দেওয়ায় পুলিশ ও নেতাদের মধ্যে তীব্র বচসা হয়। কিছু সময়ের জন্য আদালত চত্বরের বাইরে উত্তেজনা ছিল।

পুরো ঘটনাটি কী

এই পুরো বিষয়টি রাহুল গান্ধীর সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে, যা তিনি ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে ভারত জোড়ো যাত্রা চলাকালীন করেছিলেন। রাহুল অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে ৯ ডিসেম্বর ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, "লোকজন ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, কিন্তু চীনা সৈন্যদের হাতে আমাদের সৈন্যদের মারধর নিয়ে কেউ কোনও প্রশ্ন তোলে না"।

রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের ভিত্তিতে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উদয় শংকর শ্রীবাস্তব আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে এই মন্তব্যটি কেবল ভারতীয় সেনাবাহিনীর মনোবল কমানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে তাই নয়, এটি তাঁকে এবং অন্যান্য সেনা কর্মীদের ব্যক্তিগতভাবে মানসিক আঘাতও দিয়েছে।

সেনাবাহিনীর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া

এই মন্তব্যের পরপরই ভারতীয় সেনাবাহিনী ১২ ডিসেম্বর একটি আনুষ্ঠানিক প্রেস বিবৃতি জারি করে। সেনাবাহিনী স্পষ্ট করে জানায় যে, অরুণাচল প্রদেশে এলএসি-তে চীনা সেনারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল, তবে ভারতীয় সেনারা সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে জবাব দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেয়। সেনাবাহিনী আরও জানায় যে ভারতীয় সেনারা পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে এবং সংঘর্ষে ভারতীয় পক্ষের কোনও গুরুতর ক্ষতি হয়নি।

কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া

কংগ্রেস পার্টি রাহুল গান্ধীর এই বক্তব্যের পক্ষে কথা বলেছে। দলের বক্তব্য, রাহুলের উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর অপমান করা নয়, বরং সরকারের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া। কংগ্রেস নেতাদের আরও বক্তব্য, ভারত জোড়ো যাত্রা চলাকালীন রাহুল কেবল দেশের নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কোনও সংস্থার ভাবমূর্তি খারাপ করার জন্য কিছু বলেননি।

Leave a comment